সময়, কবিতা, ছোটগল্প, দেশ, দেশাচার
জার্মানীর বিখ্যাত গাড়ী প্রস্তুতকারক কোম্পানী বাভারিয়া প্রদেশের বি,এম, ডবি্লউ। তার সাথে পাল্লা বৃটেনের রোলস রয়েস। 1998 সালে রোলস রয়েসের বড় একটা অংশ কিনে নিলো বি,এম, ডবি্লউ। নিজেদের আত্মমর্ষাদায় বেশ আঘাত লাগায় বেশ ক্ষেপে উঠলো বৃটিশরা। বৃটিশ টেলিভিশনে এক সাক্ষাতকারে পার্লামেন্টের এক সদস্য গরম গরম কথা বলছিলেন।
'এই জার্মান নাজী জাতকে এজন্যেই ঘৃণা করি। এরা সারা পৃখিবীর সন্ত্রাস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এদেরকে আরো বেশী শায়েস্তা করা দরকার ছিল। '
'আপনি যা বলছেন, এটাও কি বেশ বর্ণবাদী হয়ে গেলো না', সাবধানে প্রশ্ন করলেন সাংবাদিক।
'আমার কথা কেনো বর্ণবাদী হতে যাবে? আমি তো নাজীদের বিপক্ষেই বলছি।
' অবাক হয়ে উত্তর দিলেন পার্লামেন্ট সদস্য।
কাহিনীর শেষ এখানেই। পড়ছিলাম কাল পিটার উস্তিনভের লেখা এক বইয়ে।
আমরা যে প্রতি মুহুর্তেই অন্যের দিকে আঙ্গুল তুলে কয়েকজনের পাপে একটা বিরাট গোষ্ঠীকে, জাতিকেও পাপের ভাগীদার সাজাই, তখন আমরা একই ভুল করি না, যা এই বৃটিশ পার্লামেন্ট সদস্য করেছেন? আমাদের সমাজ, আমাদের রাষ্ট্র, আমাদের ধর্ম কি একই পাপে পাপী নয়?
আমাদের নিজেদের ভেতরে সহনশীলতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আমরা বড় বেশী 'ডগমা'বদ্ধ।
আমাদের দেশের রাজনৈতিক দল, আমাদের ধর্ম আমাদেরকে এই 'ডগমা' জেলে বন্দী করায় সবসময়েই সচেষ্ট। আমরা আমাদের নিজেদের স্বকীয়তা ভুলে এই বন্দীত্বকে বরণ করে মহানন্দে ডাল ভাত খাই আর গান গেয়ে আনন্দে বেড়াই। আর যারা এর ব্যাতিক্রম খোঁজে, তাদেরকে ধর্মহীন, সমাজবিরোধী, রাস্ট্রবিরোধী আখ্যায় অভিসম্পাত করি, অথচ নিজেরাই যে অভিশপ্ত, তার খবর রাখি না।
জাহাজের মাস্তুল যদি বাতাসের সাথে কিছুটা না হেলে, তাহলে জোর বাতাসে ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। সেজন্যেই পরিমিত হেলনীও প্রয়োজন।
আমাদের ধর্মীয় ডগমা আমাদের সে সুযোগ দেয় না। রাজনৈতিক ডগমা দেয়না এক টুকরো মুক্তির পথ। আমাদের একমাত্র উপায় নিজের ভেতরে সে ব্যতিক্রম সুষ্টি করে লালন করা। তখনই একদিন সময় খুঁজে পাখা মেলবে বিহঙ্গ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।