আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাচের ঘরে বসে দম্ভ দেখাচ্ছে সরকার

সদ্য সমাপ্ত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে 'ভোটারবিহীন ও প্রহসনমূলক' আখ্যা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, এমন একটা সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ এখন কাচের ঘরে বসে দম্ভ দেখাচ্ছে। যে কোনো সময় এ ঘর ভেঙে তছনছ হয়ে যেতে পারে। অস্ত্রের ভাষায় কথা বলা ভালো নয়। তাই দেশ ও জনগণের স্বার্থর্ে সবার অংশগ্রহণমূলক একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে যথাশীঘ্র একটি সংলাপ-সমঝোতার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আলোচনার স্বার্থে হত্যা, গুম বন্ধ করে বিএনপির সব নেতা-কর্মীকে ছেড়ে দিতে হবে।

'বৈধ' অস্ত্রের 'অবৈধ' ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি নির্বাচন দিতে পারলেই জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ কিছুটা হলেও জনগণের কাছাকাছি যেতে পারবে। গতকাল বিকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ক্ষমতাসীন সরকারের গত পাঁচ বছরে ৪১টি মামলায় আসামি হয়ে তিনি এখনো ফেরারি জীবন যাপন করছেন। এরই মধ্যে তিনটি মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপির এই নেতা।

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্রের ভাষা বোঝে না তা আবারও প্রমাণিত হলো। পাঁচ ভাগ মানুষের ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতাসীন দল নিজেদের বৈধ ও শাসনতান্ত্রিক বলে মনে করে। কিন্তু বর্তমান সরকার সম্পূর্ণভাবে অবৈধ ও অসাংবিধানিক। কারণ, সংবিধানে বলা হয়েছে- জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে হবে। প্রধান বিরোধী দল নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটবিহীন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে পাঁচ ভাগ ভোট নিতে হয়েছে অনেক কষ্টে।

ডাকাতি করে, জাল ভোট দিয়ে ও নির্বাচন কমিশনের অন্ধ আনুগত্যের সুযোগ নিতে হয়েছে সরকারকে। তার মতে, পাঁচ ভাগ ভোটে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি জোট তার আন্দোলনে সফল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে জনগণ ভোট কেন্দ্রে যায়নি। দেশবাসী আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আওয়ামী লীগের উচিত জনগণের ভাষা বোঝা।

নইলে গণআন্দোলন কখনই বৃথা যাবে না। বিএনপির এখন আন্দোলন ছাড়া দাবি আদায়ের অন্য কোনো উপায় নেই জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আন্দোলন ছাড়া কখনো রাজনৈতিক দাবি আদায় হয়নি। রাজপথের হরতাল-অবরোধ, সভা-সমাবেশের মাধ্যমেই অতীতে সব দাবি আদায় হয়েছে। গান্ধিজির অহিংস আন্দোলনের যুগ এখন আর নেই। '৬৬-এর শিক্ষা আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে আন্দোলনে বর্তমানে ঢাকার সার্কিট হাউসে (আগরতলা হত্যা মামলার বিচারপতির বাসভবন) আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলন করতে গিয়ে মওলানা ভাসানীর অনুসারীরাও পল্টনে পেট্রল পাম্প জ্বালিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আমরা এটা চাই না। তিনি বলেন, এখন বিরোধী দল শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করলেও সরকারের নির্দেশে পাখির মতো গুলি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানুষ হত্যা করছে। নেতা-কর্মীদের রাস্তায় সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে না।

সেখানে আন্দোলন অহিংস হবে কীভাবে? যারা বলছেন, আন্দোলনকে অহিংস করতে হবে, সরকারকেও তাদের বলতে হবে_ বিরোধী দলকে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। সব দলীয় কার্যালয় খুলে দিতে হবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, সামনে আমরা রাজপথের অহিংস কর্মসূচির দিকে যাচ্ছি।

আশা করি, সরকার সেখানে কোনো বাধার সৃষ্টি করবে না। বাধা দিলে স্বাভাবিকভাবেই আন্দোলন সহিংসতার দিকে যাবে।

২৯ ডিসেম্বর 'মার্চ ফর ডেমোক্রেসি' কর্মসূচি করতে না দেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, এটা কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের আচরণ হতে পারে না।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.