আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঝড়ে গেল আরও একটি তাজা প্রাণ

আমি উচ্চারিত সত্যের মতো স্বপ্নের কথা বলতে চাই ঝড়ে গেল আরও একটি তাজা প্রাণ (০১.০৯.১২ সকাল ১০টা) আমার ছোট বোন : হ্যালো ভাইয়া... (কিছুটা কান্না জড়ানো কন্ঠ) আমি : জ্বি আপু মন খারাপ তোমার ? বোন : ভাইয়া সুপ্তিকে চেনো না? আমি: সুপ্তি ! হুম চিনি.. বোন: আরে আমার বান্ধবী (আবার কান্না, এবার যেন থামতেই চায়না ) সুপ্তি। গতকাল রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। বিশ্বাস হচ্ছে নারে ভাইয়া। সেদিনই প্রাইভেটে দেখা হলো। বলেই রেখে দিল।

আমার ছোট বোন আমার চেয়ে ৮/৯ বছরের ছোট হলেও আমার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ওদের ক্লাসে কি হতো কোন বন্ধু কেমন ? প্রায় সব কিছুই আমার সঙ্গে শেয়ার করে। এখনও আমি ঢাকা থেকে বাড়ি গেলে দীর্ঘক্ষণ তার এসব গল্প শুনতে হয়। ওহ সুপ্তির পরিচয় দেই। প্রথমত আমি তাকে চিনি আমার বোনের বান্ধবী, দ্বিতীয়ত মেয়েটি সাকুরা গার্মেন্টেস এর মালিকের মেয়ে।

(এই মুহুর্তে বাবার নাম মনে পরছে না)। আমি সরাসরি একবার মেয়েটিকে দেখেছিলাম। তখন ওরা ক্লাস ফাইভ এ পড়তো। আমি বোনকে স্কুলে পৌছে দেয়ার জন্য গিয়েছিলাম তখন দেখছি ঝালমুড়ির দোকানে সবাই গোল হয়ে আছে তখন আমার বোন সবাইকে চিনিয়ে দেয়। আর সবার মধ্যে একটু স্বাস্থ্যবান মেয়েটিই ছিল সুপ্তি।

কতই আর বয়স হবে অষ্টম শ্রেণী পড়–য়া সুপ্তির বেশি হলে ১৫ বছর। টিন এজের রঙিন চশমা দিয়ে এখনও কঠিন পাষান পৃথিবীকে সহজ সরলভাবে দেখে। আর সহজেই ভুল করে ফেলে। কিছুদিন আগে শুনেছিলাম, কোন এক ২৩/২৪ বয়সি যুবকের সঙ্গে প্রেমে মজে বাসা থেকে চলে গিয়েছিল সুপ্তি। (আমাদের মধ্যে কিছু ছেলেপেলে আছেন যারা ১৩/১৪ বছরের মেয়েদের এই রঙিন চশমার সুযোগ নিয়ে সর্বনাশ করে থাকেন, ধিক তাদের ) পরিবারের লোকজন তাকে ধরে নিয়ে আসে।

আবারও ক্লাস করতে শুরু করে মেয়েটি। কিন্তু ক্রমশ বদলে যেতে শুরু করে আমার বোনের চিরচেনা বান্ধবীটি। আমিও অবাক এইটুকুন মেয়ে কি করে এই কাজ করে? যাই হোক প্রতিবারের ন্যায় এবার ঈদেও আমি আমার বোনকে নিয়ে বাইকে ঘুরেছি। ওর সব বান্ধবীর সঙ্গেই দেখা হলো, সবগুলো দলবেধে ঘুরছে। আমার বোনও যোগদিল।

কিন্তু ওদের দুষ্টু বান্ধবী সুপ্তি ছিল না। ওই যে বললাম বদলে গেছে.. .. আমার পোষ্টের মুল উদ্দেশ্য হলো উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের তাদের অভিভাবকেরা যেন খুব যতœ, সাবধনতা এবং আদরের সঙ্গে দেখাশোনা করে। এ বয়সটাই ভুল করার, সেটাই স্বাভাবিক কিন্তু সেটা শুধরে দেবার দায়িত্ব অভিভাবকেরই। তাকে কড়া শাসন না করে বোঝাতে হবে যে তুমি যা করছো সেটা ভুল। সবচেয়ে ভাল হয় যদি সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা যায়।

এটা এমন একটা বয়স যে বয়সে পৃথিবীর জটিলতা চোখে ধরা পড়ে না। বেশি শাসন করলে বেঁকে বসে, বেশি আদর করলে বিপথে গমন করে। টিনএজরা একটুতেই রেগে যায়, যেন কোনও কিছুই ভাল লাগে না। কেমন যেন স্বপ্নীল মনেহয় পৃথিবী। আমার কথা বলি, আমি যখন ওই সময়টা পার করেছিলাম তখন স্বপ্ন দেখতাম আমার একটা মস্তবড় সাদা ঘোড়া থাকবে আর আমি রাজপুত্রের মতো ঘোরায় চড়ে বেড়াতে যাব আরও কতো কি (হা হা..)।

এজন্যই মনে হয় কবি বলেছেন, আঠারো বছরের মতো বালাই আর নেই। জানিনা কি জন্য মেয়েটি এমন সুন্দর বর্ণিল পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে শেষ পর্যন্ত চলেই গেল। আল্লাহ যেন আমাদের এই বোনকে ক্ষমা করেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.