আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঝড়ে বক না'ও মরিতে পারে

আমি তোমায় বুঝেছি সমগ্র বুঝহীনতার ভেতর দিয়ে।

পাঠিকাগণ ইহাকে নীতি কথনমূলক পোষ্ট মনে করিলে নিতান্তই ভুল করিবেন। বিলক্ষণ ট্রাজেডী হইল, ইহা শেষ পর্যন্ত নীতি কথনে পর্যবসিত হইতে পারে। ভবিষ্যত তো খালি চোখে দেখন যায় না। ডেলফির মন্দিরে ভবিষ্যত দেখিতে কিঞ্চিৎ ধোঁয়ার প্রয়োজন পড়িত- সেই যুগ কবেই বিগত-যৌবনা।

তারপরও ক্ষণে ক্ষণে ভ্রম হয়। দুনিয়ার নিয়ম এই, অস্থির চিত্তের লোকেরা দুনিয়ারে আপন আপন বাল-খিল্যতা, লাভ-লোকসানের স্বভাব ধর্মের ধর্ম মত চালিত করিবার বাসনা পোষণ করে। এই জন্য নানা লেবাসের আয়োজন করে বটে। কিন্তু মানব স্বভাব আর দুনিয়া যদি একই অভিমুখে না চলে, সেই বিশাল বপুর বৈপ্লবিক মানুষ দুনিয়ার গতিমুখ আপনার কামনা-বাসনায় এস্তেমাল করিতে না পারিলে নানা নীতি-নৈতিক আশ্রয় নেয়। বিলক্ষণ স্ববিরোধ।

হে পাঠিকা, সে আসলে দুনিয়ার ভালো-মন্দ বুঝিতে আসে নাই। কিসে আপনার ভালো-মন্দ তাহাই বুঝেই তাহার মোক্ষ। ক্ষমতা , ইন্দ্রিয় তৃপ্তি ইত্যাদী ইত্যাদী। কিন্তু অবুঝরে নিজেরে বুঝ দিতে হয়। ইহা আমি নহে আমাগোর বাতচিত।

তাই আকড়াইয়া ধরি নানান খোলস। তার উদগ্র কামনা-বামনা চরিতার্থ করিতে মহত্বের, ধর্মের, ন্যায়পরায়ণতা, সত্যের দোহাই দেয় আর পৌরহিত্যের ভেক ধরে। মহান ধর্মে এই যাজকীয়তার কি রুপ আছে জানি না। কিন্তু সে আপনকার জগতে মহান পোপ হইয়া ঈশ্বরের নগর কায়েম করে। সেই ভ্যাটিকান নগরে হয়তো মানুষ থাকে না, তবে কল্পিত দালানকোটা সারাক্ষণ ঈশ্বরের নাম জপ করে।

আফসোস, দালানকোটা যতই এবাদত করুক, সে তো আর ধর্মের রাস্তায় উৎকোচ প্রদান করিতে পারে না। ধর্মের লেবাসে ডাকাইতও আউলিয়া হইছে। ধর্ম সে সুযোগ রাখছে। বোধ করি, এই সুযোগ খানা প্রতিক্রিয়াশীলতা নহে। তা নাহলে ডাকাত পীর হইলেও ডাকাত থাকিত।

কারণ আপনকার স্বার্থের বিষয়ে তার কোন কামনা-বাসনা ছিলো না। ছিলো না আউলিয়াকূলের শিরোমনি হইবার ধান্ধা। ধান্ধা শব্দটা যাচ্ছে না। তারপরও ঘুরিয়ে না বলে সোজাসুজি হাঁটলে ভালো। সক্রেটিস কেন যে কইছিলেন চেনা পথ বক্র হইলেও ভালো।

এখন তো সোজা আঙ্গুলে কি উঠে না। প্রবাদ-প্রবচনে আছে, চোরে না শুনে ধর্মেও কাহিনী। ইহা উলোবনে মুক্তো ছড়ানোর মত। তাইলে ডাকাত কেমন আউলিয়া হয়। চোর নিচুজাত কিনা।

সে করবে হুজুর হুজুর- তার কিসের খবরদারী। একটু বর্ণবাদী হইয়া গেলো না। আবার ভাবতাছি দুনিয়ার ইতিহাস এমনি। দুনিয়ার ইতিহাস তাবৎ ডাকাইতের ইতিহাস। নিচুজাতের কোন ঠাঁই সেখানটায় নাই।

খোদাতায়ালা যা করেন, সেটা শরীয়তী মানুষ’রা বুইঝা না বুইঝা চক্ষু বন্ধ কইরা মাইনা নেন। আর ভেক ধরা গুরু’রা ঝড়ে বক মরছে কিনা তার খোঁজ করেন। এর নাম বুজরুকী, আর সাহেবী কেতায় আধ্যাত্নিকতা। আমরা নাদান লোকেরা আহাম্মকের মতো তাকাইয়া ভাবি, আহা কি ছিলো, কি হইল। হক্ব মওলা।

আর আধ্যাত্নিক গুরু’রা ভাবেন কি ছিলো কি করিলাম। নইলে, স্বয়ং শেষ নবী [সঃ] যা করেন নাই, তার আধ্যাত্নিক উম্মতরা তাই করেন। তারা ঝড়ে বক মরার অপেক্ষায় থাকেন। শাপ-অভিশাপ দিয়া দুনিয়ারে ডাইনীর খোয়াড়ে পরিণত করেন। পাঠিকা খেয়াল কইরেন, আমি কোন নীতি-কথা কইতে আসি নাই।

কারণ, ধর্মের দোহাইয়ে কামলাগিরিতে জাত যায় না। ধর্ম তারে বাঁচাইয়া দেয়- অংক না শিখে জীবনের বারো আনা বৃথা হইলেও তার ক্ষতিবৃদ্ধি হয় না। আমি সাহেব ধার্মিকদের কাছে আরজ করি, দুনিয়াতে সবর্দা ঝড় হয় না, বক মারাও পড়ে না। যদি হয়, তখন তো আপনি অনিরাপদ জলযানেও থাকিতে পারেন। তাইলে সাঁতার না হয়, নিদেন পক্ষে হুজুরের হাছুর তো জানা লাগে।

নইলে এতো বুজরকীর ষোল আনা বৃথা। নগদ লাভ, এইসব অপ-যাজকীয়তার কুফল হইতে আমরা বাঁচিয়া যায়। ধর্মের নামে নীতি-কথার অপরিমিত চর্চিত-চর্বণ হলেও, ধর্ম ক্রমশ ভালো-মন্দের ভেদ শিখাইয়া মানুষ আর মানুষের দুনিয়ারে আগাইয়া নিয়া চলে। দুনিয়া আপন স্বার্থের শুকনা নীতিকথার ফয়সালা না, স্বভাব ধর্মের ফয়সালা। সেখানটায় পদ আর সম্মানের লোভে যাজকীয়তা আকঁড়ে ধরলে অনেক কিছু হইতে গিয়াও হয় না।

এইবার এখানকার নীতিকথা বলি: ধর্মের মুদি দোকান দিয়া লাভ ষোল আনা হইলে এই হইজাগতিক। তাই কামনা-বাসনা ত্যাগ করিয়া বিনীত হও। বিনয়ের দোকানে অন্বেষণ করো পরকাল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.