মুখ বন্ধ লালটিপ
ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এর ব্যানারে তৈরি প্রথম আন্তর্জাতিক মানের বাংলা ছবি। এটা ছিল এই চলচিত্রটির মার্কেটিং প্রমোশনের প্রথম লাইন। যা এই ছবিটির ব্যবসা সফল হওয়ার পেছনে মূলমন্ত্রের মত কাজ করে। ছবিটির ভাল দিক গুলা এইটাই। ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড।
৭২০পি মানের চিত্রায়ন। বিদেশী লোকেশন।
আমার জীবনে সিনেমা হলে প্রথম দেখা ছবিও এটিই। এমনেই বাংলা ছবি তেমন একটা দেখা হয় না। তারপরও বিশেষ কারু অনুরধে দেখতে গিয়েছিলাম।
একেবারে অনুরধে ঢেঁকি গেলা যাকে বলে। ভাইজানেরা ঢেঁকি আমারে আসলেই গিলতে হইসে। দেইখা বাইর হওয়ার পর খালি আপচুচ আর আপচুচ।
এক এক করে কাহিনী কইতাসি।
লালটিপ
কাস্টঃ ইমন , কুসুম শিকদার,সাচ্চু, মুনিরা মেমি, এ টি এম শামসুজ্জামান, সোহেল খান আর প্রমুখ।
কাহিনী সংক্ষেপঃ কুসুম তাঁর বড় বোনের সাথে ফ্রান্সে থাকে। একেবারে লুলায়িত জীবন যাপন করে। মডার্ন চাল ঢাল, ফ্রেঞ্চ বয়ফ্রেন্ড, স্বাধীন জীবন যাপন। তাঁর দুলাভাই সাচ্চু মিয়া বড়ই চিন্তিত শালির বিয়া লইয়া। কি যে করব শালি তো তাঁর উচ্ছন্নে যাইতাসে।
হটাত এক বিয়ার প্রস্তাব আসে, পোলা বাঙালী, ভাল ফ্যামিলি তাঁর উপর আবার আর্টিস্ট, যার ফ্রান্সে ছবির এক্সজিবিসন হইব। থাকেও ফ্রান্সে। দুলাভাই রে আর পায় কে শালিরে গছানের মত এমন মুরগা দুইটা আর পাওয়া যাইব না। অইদিকে কুসুমের বইন আর দুলাভাই উইঠা পইরা লাগে শালিরে ওই পোলার লগে বিয়া দেওনের লাইগা। এদিক দিয়া শালি তো আবার পসন্দ করে বিদেশী এক ব্যাটারে।
বিয়া করব না, হয় বাসায় ক্যাচাল। দেয় কুসুমে ঘর ছাইড়া। ঘর ছাইড়া ওই ব্যাটার ফ্ল্যাটে গিয়া উঠে। উইঠা দেখে হেতে একখান বিসাল লুচ লোকজন। পরে বুজে হায় পিরিতি করতে গিয়া তো এহন আমার সব যাইব।
এই না বুইজ্জা দেয় দৌড় । কিন্তু হেই ব্যাটা কি আর এমন জিনিষ ছাইড়া দিব । হেই ব্যাটাও দেয় দৌড় ওর পিসনে, ওরে ধরনের লাইগা। তারপর ধইরাও ফালায়, এরিমইদ্ধে কইথিক্কা জানি ইমন সাহেবের উত্থান ঘটে। নায়কের মত সে নাইকা রে ভিলেনের হাত থিক্কা বাচায়, উফ কি মারামারি( হাজার হইলেও বাংলা ছবি, নায়কে নাইকা রে ভিলেনের হাত থিক্কা বাচাইব না এইটা হইতেই পারে না )।
তারপর ইমন মিয়া ওরে নিজের বাসায় নিয়া আসে, তখনও ইমনে জানে না এই সেই মাইয়া যার লাইগা ওর কাসে প্রস্তাব আসছে ( উফ কি দারুন মিল ) । তারপর কয়দিন হে ইমনের ঘরে থাকে। থাইকা টাইকা ফিরা আহে নিজের বাসায়। নাইকা রে ফিরায় দিয়া আহনের পর ইমন মিয়া জানতে পারে যে এই সেই মাইয়া যার লগে ওর বিয়া হইব। আরে এর মইদ্ধে তো তেনায় হেতেরে ভালাবাইসা হালাইছে ।
কি আর করা আবার লাগায় দৌড় নাইকার বাড়িত। মাগার গিয়া দেহে নাইকা নাই । গেসে গা বাংলাদেশ। এক্কেবারে গেরামে । হে ও আইয়া পরে দ্যাশে ।
নাইকার আবার নতুন প্যাঁরা শুরু হয় ওই গেরামের চেয়ারম্যান হের ভাতিজার লাইগা আবার নাইকা রে পসন্দ কইরা ফালায়। শুরু করে বাংলা কাহিনী । এর ভীতরে ইমন মিয়াও খুজতে থাকে মাগার খুইজা পায় না । এদিকে প্যারার পরিমান বাইরা যাওয়াতে নাইকারা আবার ফ্রান্সে ফিরা যাইবার লয়। কিন্তু ফিরা গেলেই কি হইব?? নায়ক আছে ক্যান? নায়কে ধইরা হালায় তাও আবার রেডু দিয়া ।
যাই হোক নায়ক নাইকার মিল । ছবি শ্যাস।
আমার কচলানিঃ আমি আগেই বলেছিলাম, এ ছবির কাহিনী বলতে কিছুই নাই। খালি ডিজিটাল পিকচারাইজেসন টাই মুখ্য। মূল চরিত্র গুলার অভিনয় এতই স্লু যে দেখতে দেখতে ঘুমই আইসা পরে ।
কিন্তু সোহেল খান আর এ টি এম শামসুজ্জামানের অভিনয়ই একমাত্র দেখা যায়। ছবির শুরুতেই নাইকারে দেখায় ছুটু ছুটু কাপুর পইরা নাইচা নাইচা জাইতাসে। মনে হইল মনে হইল আটার বস্তারে সাজাইয়া দিসে। নায়ক হিসাবে ইমনরে এই ছবিতে জঘন্য মনে হইসে। সাচ্চু সাবলিল।
ওভারঅল কাহিনী , চিত্রনাট্য খুবই দুর্বল। অভিনয়ের কথা বলতে গেলেই বমি আহে, অভিনয় দেইখা মনে হয় হেরা অভিনয়ই করতাছে। মনে হইল কাটপিচ কাটপিচ কইরা লাগাইয়া মুভি বানাইছে।
শেষ কথাঃ আসলে এই ছবিটা দেখার আগে কুনও আশা নিয়া হলে যাই নাই। জানতাম আহামরি কিছু হইব না।
তারপরও বলতে মন চাইতাসে যে দেশে মাটির ময়না, আগুনের পরশমণি,লালসালু ও মনপুরার মত সুন্দর সাবলীল ছবি হয়, সেখানে কাহিনী , চিত্রনাট্যে এতো দুর্বলতা কেন? এতো খরচ করল তারপরও একটা সুন্দর ছবি উপহার দিতে পারল না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।