আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি নন হলিওডি পোস্টঃ একটি আর্জেন্টাইন, একটি ইরানী এবং একটি ফ্রেঞ্চ মুভি রিভিও

I deem them mad because they think my days have a price... হলিওডের বাইরেও অনেক গুলো মুভি ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে যাদের মুভির মান নেহাত ফেলনা নয়। বরং অনেকগুলো দেশই তাদের বস সব ডিরেক্টর,অসাধারন স্ক্রিপ্ট আর শক্তিশালী সব আর্টিস্টের কারনে সারা পৃথিবী জুড়েই মানুষের নজর কেড়ে নিচ্ছে। এইরকম কিছু মুভি নিয়েই আজকের পোষ্ট - The secret in their eyes: “A man can change anything, but he never change his passion”—ডায়ালগ টি এখনো কানে লেগে আছে। সত্যিকার অর্থে একটি মাস্তারপিছ। মুভিটির একটি জিনিস অসাধারন লেগেছে, ডিরেক্টর মুভির শেষ মিনিট পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যারেক্টার দ্বারা উপরের ডায়ালগটি সতসিদ্ধ করে দিয়েছেন এবং প্রত্যেক টি ক্যারেক্টারই এই কথাটিকে মুভির প্রতি মিনিটে সত্য প্রমান করে গেছে।

মুভিটি দেখে আরজেন্টাইন মুভির ভক্ত হয়ে যাবেন বাজি ধরেই বললাম। মুভিটি এক অবসরপ্রাপ্ত কাউন্সেলরকে নিয়ে যিনি তার অবসর জীবনে এসে একটি বই লিখার সিদ্ধান্ত নেন। বইটি মুলত অনেক বছর আগে ঘটে যাওয়া একটি আনসল্ভড কেস নিয়ে যেখানে একটি মেয়েকে রেপ করে হত্যা করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে তারা যখন হত্যাকারীর পরিচয় সনাক্ত করেছেন তখন তারা হত্তাকারিকে আটক করেছিলেন, তখন সরকারের উপরমহলের চাপে তাকে সব প্রমান থাকা সত্ত্বেও ছেড়ে দিতে হয়েছিল। কলুষিত রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে সুবিচারের তৃষ্ণা হার মানতে বাধ্য হয় সবসময়।

কিন্তু বইটির জন্য লেখালেখি করতে গিয়েই ওই কাউন্সেলর আবিষ্কার করে তার অনেক বছর আগের হারিয়ে যাওয়া প্রেমকে। সময় হয়তো অনেক কিছুই বদলিয়ে দিয়েছে কিন্তু প্রেমের সংজ্ঞা তাদের কাছে এতটুকু বদলায় নি। এভাবেই ক্রাইম, রোমান্স আর মিস্ট্রির ভেতর দিয়েই এগিয়ে যায় কাহিনী। শেষের কাহিনীটুকু আর বলছিনা। তবে এতুটুকু বলব কাহিনির শেষে এসে ডিরেক্টর যতটুকু চমক এই মুভিতে রেখেছেন এই রকম হয়তো খুব কম মুভিতেই হয়েছে।

ডাউনলোড লিংক Offside: মাজিদ মাজিদি আর আব্বাস কিয়িরস্তামির পরেই ইরানের যার মুভি দেখার জন্য বসে থাকি তিনি জাফর পানাহি। তার মুভিতে ইরানের বর্তমান সমাজব্যবস্থার ভঙ্গুরতা ফুটে উঠে কাব্যিকভাবে। offside এই রকম একটি মুভি যেখানে ইরানের প্রচলিত সমাজের লিঙ্গ বৈষম্য উঠে এসেছে চারকোনা ক্যামেরার ফ্রেমে। ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবলের বাছাই পর্বের খেলা চলছে,আজকে জিতলেই ইরান পেয়ে যাবে ওয়ার্ল্ডকাপের টিকেট । পুরো দেশ কাপছে ফুটবল জ্বরে, আসলে একটু ভুল হল- পুরো দেশ নয়,মেয়েরা এই হিসেব থেকে বাদ।

শুধুমাত্র মেয়ে হয়ে জন্মানোর কারনে তারা নিজের দেশের এই উৎসব থেকে বঞ্ছিত। কাহিনীর শুরুতেই দেখানো হয় একটি মেয়ে যে ছেলেদের পোশাক পড়ে স্টেডিয়ামে ঢুকার চেষ্টা করছে,প্রতিমুহূর্তেই তাকে আঁকড়ে ধরছে ভয়, কখন লোকজন বুঝে যায় সে মেয়ে। অনেক ভাবেই চেষ্টা করে সে কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না। তাকে স্টেডিয়ামের গার্ডরা আটক করে ফেলে। কিন্তু সে দেখতে পায় এখানে সে একা নয়, তার মত আরও অনেকেই আছে যারা এই সমাজের অন্ধ নিয়মকানুন ভেঙ্গে বাইরে এসেছে।

এভাবে পুরো খেলার সময় তাদের আটক করে রাখা হয় এবং তাদের কথোপকথনে ইরানের সমাজে লিঙ্গবৈষম্য যে কতটা খারাপ পর্যায়ে পৌছেচে তা আমাদের সামনে আসতে থাকে একের পর এক। ডাউনলোড লিংক Au revoir , les enfants: এটি একটি ফ্রেঞ্চ মুভি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নামক মহামারীতে তখন পুরো পৃথিবী আক্রান্ত। এটি মুলত এক কিশোরের গল্প যে সামারে বাড়িতে বেড়াতে এসে আবার স্কুলে ফিরে যাচ্ছে। সামার শেষে স্কুলে ফিরে এসে যখন সে সব কিছুর সাথে তাল মেলাচ্ছিল তখন ই তাদের এক শিক্ষক এক নতুন ছাত্রকে তাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।

সব কিছু ঠিকঠাক থাকলেও নতুন ছেলেটির মধ্যে কোথায় যেন একটা খাপছাড়া খাপছাড়া ভাব ছিল। সে ঠিক ধরতে পারেনা। অবশেষে বিভিন্নভাবে সত্য টি প্রকাশ হয়ে যায়। আসলে ছেলেটি ছিল ইহুদী এবং তাকে স্কুলে ভর্তি করার ব্যাপারটি সচেতন ভাবেই করে গেছেন স্কুলপ্রধান। যে শহরে জার্মানরা ইহুদীদেরকে ধরে ধরে পোড়াচ্ছে সে শহরেই স্কুলে ইহুদী ছাত্র পড়ছে এটি ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনা।

অবশেষে একদিন জার্মান সৈন্যরা স্কুলে আসে আর তন্ন তন্ন করে খুঁজে সব ইহুদীদেরকে খুঁজে বের করে। আর জারমান দের অন্ধঘৃণার খেসারত দিতে হয় সেই ইহুদী ছাত্রদেরকে আর স্কুল প্রধানকে। মানুষরুপী জন্তুদের যুদ্ধের বিভীষিকায় কিভাবে একটি শিশুকেও খেসারত দিতে হয় মুভিটি দেখতে গিয়ে টের পাবেন হাড়ে হাড়ে। download link ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.