ভাবতে ভাল লাগে সবশেষ রাকসু নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালে। যখন ছিল কিনা স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের সময়। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের পর ভাবা গিয়েছিল আমরা এবার সত্যিকার অর্থেই গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র পাবো। কিন্তু অল্পদিনেই বোঝা গেল সে আশার গূড়ে বালি। ১৯৯২ সালে আমরা দুই দলের তথাকথিত ‘গনতন্তের’ পথে যাত্রা শুরু করলাম।
তাতে কী হল? জুজুর ভয় ও বিভিন্ন অবিবেচক কারনে বন্ধ থাকলো ছাত্র সংসদ নির্বাচন। পরষ্পরের প্রতি অবিশাস কমিয়ে দিল গনতঅন্ত্রের সীমা! তাতে লাভবান হল কারা? এতে সবচেয়ে লাভবান হয়েছে শিক্ষক নেতারা! কেননা কোন প্রকার ছাত্র প্রতিনিধি না থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র অধিপতিতে পরিনত হতে পেরেছেন তারা।
শিক্ষকদের সরাসরি দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার সুযোগ না থাকায় তারা সাদা-হলুদ-সোনালী রং-নিয়ে পরিনত হয়েছে দলের ছদ্ম লেজে। ফলত দিন-দিন দলবাজিতা প্রকট রুপ ধারন করল। বন্ধ হল উপাচার্য নির্বাচন।
সাদা- হলুদ-সোনালীরা কার্যত নিম্নমাত্রার নির্বাচনী জোটে পরিণত হলো। তারা ক্রমে ক্রমে নির্বাচন ব্যতিরেকে রাজনৈতিক অনুগত্যের পথ ধরল। রঙের জোট সরকার গঠন করলে রাজনৈতিক বিবেচনায় উপাচার্য পদে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের সপ্ন হয়ে উঠল। কেননা ১৯৯২ পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়াই যেন বিধান হয়ে গেল অন্যদিকে নির্বচনী প্রক্রিয়ায় শংকা থাকে। নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে উপাচার্য হওয়া সহজ ব্যপার নয়।
সুতরাং অবস্থা তথৈবচ। আর উপাচার্য সরকারী দলের অনুগত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ নিশ্চিত করেন। আবার নিম্ন মাত্রার নির্বচনে জয় লাভের জন্য রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার মতো জঘণ্য ব্যপারও এখন আমাদের গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।
এহেন অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতিতে যখন শিক্ষকরা চরম স্বৈরতান্ত্রিক দলবাজিতা চর্চায় লিপ্ত আছেন তখন ছাত্র অধিকার প্রশ্নে রাকসু নির্বাচন দেয়ার সদিচ্ছা থাকা সম্ভব? না সম্ভব নয়। তাই নানা উসিলায় ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে।
যা মারাত্মকভাবে ছাত্র অধিকার ও গণতন্ত্র পরিপন্থী।
এই পরিস্থিতি বদলানোর একমাত্র উপায় আন্দোলন, এ আন্দোলনের দায় নিতে হবে শিক্ষার্থীদের। কারন আগামীর বাংলাদেশ আমরা কেমন দেখতে চাই তা নির্ভর করবে আমরা কেমন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছি তার উপর। সুতরাং গনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নেতার বিকাশ ঘটতে পারে সক্রিয় ছাত্র সংসদের মাধ্যমে। সেজন্য রাকসুর দাবীতে আন্দোলনে যেতে হবে শিক্ষার্থীদের, যেতে হবে তাদের নিজেদের স্বার্থে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।