আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি ডিজিটাল ছ্যাঁক কাহিনী(১৮+ হলেও শিক্ষামূলক)

ব্লগার না পাঠক হওয়ার চেষ্টায় আছি এ যুগে প্রেমে পড়ার চেয়ে ছ্যাঁক খাওয়া পাবলিকের সংখ্যা হারিকেন “সিডরের” বেগে বাড়িতেছে! এর মূল কারণ হইল লুল ভাই ব্রাদাররা কত্তবার প্রেমে পড়েন আর কত্ত বার ছ্যাঁক খান তাহা সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর দিয়া হিসাব কইরাও পারা যাইব না। তাই এ যুগের লুলদের জনপ্রিয় সঙ্গীত বা জাতীয় সঙ্গীত হইল ফুয়াদ ভাইয়ের কালজয়ী গান “দুই দুইডা গার্লফ্রেন্ড লইয়া পড়ছি আমি ফান্দে// একটারে মায়া করলে আরেকটা কান্দে!” আর সুন্দরী আফামণিরাও রাইত ১২ টার পরে পেয়ারটেলে অপরিচিত হ্যাণ্ডসাম লুল ভাইদের মোরগ কন্ঠী গলা শুনিয়া পাগল প্রায় হইয়া যান এবং ২৯ পয়সায় ওই সকল ভাই-ব্রাদাররা রমণীদের সাথে গফ করতে থাকেন। কোন সময় যে রমণীরা উহাদের প্রেমে পড়িয়া যায় তাহা বোধকরি রমণীরাও বুঝিতে পারেন না! আবার অনেক লুল ভাই-ব্রাদাররা অপরিচিত রমণির মিস কলেও পাগল হইয়া যান! যা হোক গা, এইবার আসল কাহিনীতে আসি। সময়টা বেশ ক বছর আগের। এচএচচি এক্সাম দিয়া মনের আনন্দে ঘুরাঘুরি করতাছিলাম।

তো বিশাল বন্ধ। গেলাম গেরামে। এক ভন্দুকেও সঙ্গে লইলাম। আমি আর আমার ভন্দু বাসের মইধ্যে চিল্লায়ে চিল্লায়ে মনের আনন্দে যাইতাছিলাম। বাসের মানুষজন তো পুরাই অবাক।

কেমনে দুইডা ফাগল বাসের মইধ্যে চিল্লাইতাছে। সুন্দরী ললনারাও অবাক চুখে আমাগো দেখতাছিল। যা হোক, গেরামে আসিয়া মনের আনন্দের ঘুরাঘুরি করিতে লাগিলাম। ক্ষণকাল অতিক্রমের মাধ্যমেই আমরা জানিলাম পাশের বাড়িতে অতীব সুন্দরী এক ললনা আসিয়াছেন। উল্লেখ্য, ললনা আমাগো ব্যাচমেট।

অনেক ছুডুকালে উনারে দেখছিলাম। তারপর মেলাদিন আমাগো দেখা সাক্ষাত নাই। আর আগে তো আমাগো কাছে এইরাম ডিজুস সিম আছিল না। থাকিলে পরে কতা বার্তা ভালই হইত। মুবাইলই লইছি এচেচ্চি দেওনের ফরে।

যা হোক, মনের আনন্দে আমরা ঘুড়িয়া বেড়াইয়া পাড়া সুদ্ধা মাথায় তুলিতেছিলাম। এ ফাঁকে বলিয়া রাখি আমার লাইফের পরথম বিড়ি ফুঁকা ওইসময়েই ইশটারট হইছিল। অবশ্য এই ডিজুস যুগের পুলাপানের বিড়ি ফুঁকা ইশটারট হয় কেলাস চিকচে থাকতেই। যা হোক, বিড়ি ফুকার লগে লগে বিভিন্ন মডেল গণের গুপন প্রণয় কাহিনী ছিল আমগো আলুচিত বিষয়ের মইধ্যে অন্যতম। তা ছাড়া বলিউডের হাশমি ভাই কুন চেক্সি মাইয়ার লগে আশিক বানাইয়ার ফরে নয়া মুবি রিলিজ মারছে ওইগুলানও ব্যাফুক ভাবে আলুচিত হইত।

ললনারাও যে আমার ফ্রিয় নাইওক হাশমি ভাইরে অনেক ভালু পায় ওইটাও আমি তখন পরথম জানছিলাম। উল্লেখ্য, আমাগো লগে যুক্ত হইয়াছিল আমাগো এক বচ্চরের সিনিয়র বড় ভাই জান। উনি গেরামেরই পুলা। তয় ওই ললনা যখন আমাগো লগে থাকত বড় ভাইজান ব্যাফুক শরমে আমাগো লগে আইত না। উনি আবার ছরম লজ্জিত অনুভব করিতেন।

তো হঠাত করিয়া দুই দিন পরেই আমার ভন্দুর ঢাকা হইতে জরুরী ফুন কল আসিল। তাহার আর্জেন্ট যাওন লাগব। তার এ হেন প্রস্থানে আমাগো গ্রুপ সামান্য মনঃকষ্টে কষ্টিত হইয়া গেল। হঠাত তাহার এই প্রস্থানে আমাগো সকল চিল্লাচিল্লি লাফালাফি স্তম্ভিত হইয়া গেল। কিন্তু, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ভন্দু আমার চলিয়া গেল... ক্ষণকাল আমরা মনঃকষ্টে দিনাতিপাত করিতে লাগিলাম।

অতঃপর পরদিন সক্কালে ললনা আমার কাছে আমার এক ভন্দুর মুবাইল নাম্বার চাইল। অতঃপর আমি তাহাকে উক্ত ভন্দুর মুবাইল নম্বর দিয়া দেই। এইবার শুরু হইল আসল খেলা! বলা বাহুল্য, ভন্দু আমার সামান্য লুল। ললনারা ফুন দিলে উহার কুনু হুশ জ্ঞান থাকে না! যাহা হোক, ললনা আমার এই ভন্দুকে আমার সম্মুখে ফুন দিল এবং লাউড স্পীকারে উহাদের কতাবার্তা আমি শুনিতে থাকিতাম। পরথম ফুন কলে ললনা আমার ভন্দুকে কহিল যে ললনার নাম “মিথিলা”।

উল্লেখ্য, আমার ভন্দুর আবার মিথিলা নামের প্রতি সামান্য দূর্বলতা আছে যা আমি পূর্বেই জানিতাম। কেননা, তাহসান ভাইয়ের সুন্দরী প্রেমিকা কাম বউকে আমার ভন্দু অনেককক পচন্দ করত!! তাই আমি ললনাকে বলিয়াছিলাম নাম জিগাইলে মিথিলা কইতে! ব্যাস খেলা জমতে লাগল। মিথিলা নাম শুনিয়া ভন্দু আমার হইয়া গেল ফিদা!! চলিতে লাগিল তাহাদের ডিজুস টাইপ কথোপকথন। তয় পরথম দিনে মিনিট বিশেক কতা হইছে! উল্লেখ্য, আমি ভন্দুর বাসার ঠিকানা ললনাকে বলিয়ছি যাতে তাহা বলিয়া ললনা বন্ধুকে চমকাইয়া দিতে পারে!। কাজেই ললনা যখন ভন্দুকে তাহাদের বাসার ঠিকানা কহিল ভন্দু ভাবিল ললনা আসলে সবই জানে! “ফেইক” না! তাহার ফুন রাখার লগে লগে ভন্দু আমাকে ফুন দিল।

ফুন দিয়া কয়, “আমার হইয়া গেছে!” আমি কহিলাম কি হইছে! ভন্দু কয় “হইছে হইছে!” অনেকক্ষণ ক্যাচাল লাগানর পরে ভন্দু আমায় কহিল উহার জিএফ হইচে! আমি সামান্য অবাক হওনের ভান করিলাম। কহিলাম কেমনে কি?! ভন্দু পুরা ঘটনা সবিস্তারে বর্ণনা করিতে লাগিল। আমি তো সকল কিচুই জানি তাহা সত্তেও সব মনযোগ দিয়া শুনিলাম! খানিক বাদে কহিলাম “এই সব অপরিচিত মানুষজনের সাথে কতা কওয়া কি ঠিক?” ভন্দু তো রাইগা টাইগা পুরাই ফায়ার! কহিল “মাইয়া যখন আমার বাসার ঠিকানা পর্যন্ত জানে তখন সবই ঠিক আছে!” এই ভাবে আমাদের সময় কাটিতে লাগিল। ঘটনা প্যাচ খাইল পরের দিন! ভন্দু আমারে ফুন দিয়া কয় উহার মুবাইলে ১০০ টাকা ফ্লেক্সি কইরা দিতে! আমি তো পুরাই টাস্কিত। কহিলাম কেনু?? ভন্দু কইল উহার জিএফের সাথে কতা বলবে।

আমি ফ্লেক্সি না করিলে পরে সে ফুন দিয়া কয় আমি নাকি পুরাই ফাউল! ভন্দুর লাইগা সামান্য উফকার ও করিতে পারি না। যাহা হোক, ললনা ভন্দুর লগে লাউড ইশপিকারে ভন্দুর লগে লুমান্টিক লুমান্টিক কথোপকথন চালাইতে লাগিল তখন আমি সবই শুনিতে লাগিলাম! উল্লেখ্য, ভন্দু যে তাহচান ভাইয়ের গান খুব সুন্দর গাহিতে পারেন তাহা আমি উহাদের কথোপকথন হইতে জানিলাম। এই ভাবে দিন চলিতে লাগিল। উল্লেখ্য, গেরাম হইতে সকলে যখন নিজ নিজ বাসায় প্রস্থান করিলাম তখনও আমাদের মুবাইল কথোপকথন চলিতে লাগিল। উল্লেখ্য, আমি ছিলাম বলির পাঠা! একবার ললনা আমারে কাহিনী কইত! আবার আমার বন্ধু ডিটেইলস কাহিনী জানাইত! আমি উভয় পক্ষের কথা গভীর মনযোগ দিয়া শুনিতাম।

তবে দু-একদিন যে উহাদের কতা-বার্তা শুনিতে শুনিতে ঘুমাইয়া যাই নাই তাহা না! দিন আগাইতে লাগিল। সময় উল্কার বেগে কাটিতে লাগিল। ওই সময় আমাগো বয়সী পুলাপানেরা ফরীক্কার রিসাল্টের চিন্তায় যখন দিন রাইত হারাম করিতেছিল আমরা তিন জন ডিজুস দিন কাটাইতে লাগিলাম। যাহা হোক, একদিন ললনা কয় ভন্দু নাকি তাহার “প্রেমিকাকে” দেখার লাইগা জান কুরবান করব! তো যেদিন আমাগো এচএচচির রিসাল্ট দিব সেদিনকা ললনার ফুন কলে আমার ঘুম ভাঙ্গিল। ললনা ফুন দিয়া কয় “মাইয়া ঠিক করছি।

” আমি ঘুম ভাঙ্গা গলায় সামান্য টাস্কিত হইয়া জিগাইলাম “কি ঠিক করছ!” ললনা কয় মাইয়া!! পুরাই লুল অবস্থা। যাহা হোক, কিচুকাল পরে আম্মা আসিয়া দেখিল আমি ঘুম হইতে উঠিয়া গেছি। আর বিলাপ করিয়া কহিতে লাগিল রিসাল্টের চিন্তায় আমার ঘুম ভাঙ্গিয়া গেছে! উল্লেখ্য, আমি ঘুম ভাঙ্গানো জগতের কঠিনতম কাজগুলোর একটা! যা হোক, আমি মনে মনে টাস্কিত হইতে হইতেও হই নাই। সকাল ঘনাইয়া দুপুর আসিল। এর মাঝেই এ পিলাচের খপর পাইলাম।

কিছুকালের মইধ্যে জানিলাম তিনজনই এ পিলাচ!!! কিন্তু কিয়ের কি! রেসাল্ট নিয়া আমাগো কুনু রিএকশান নাই। মুবাইলেই ডেটিং প্লেস ঠিক হইল। ঠিক হইল, যেই মাইয়ারে “ঠিক” করা হইয়াছে উনি বসুন্ধরা চিটিতে ১১ টার সময় উপস্থিত থাকিবে। আমি তো চরম পুলকিত অনুভব করিলাম। আমার লুল ভন্দু এই দফায় পুরাই কট খাইব চিন্তা করিয়া মন পৈশাচিক আনন্দে ভরিয়া উঠিল! কিন্তু রাইত ১২ টায় ভন্দু আমারে ফুন দিল।

ফুন দিয়া আর উত্তেজিত গলা আর নাই! শীতল গলায় কহিল তুমাগো এই সক্কল কাহিনীর মানে কি! আমি পুরাই খাবি খাইলাম। কহিলাম কিসের কি! কি বলছিস এগুলো! কুন কাহিনী। কহিল, তুমরা দুইজন মিলিয়া আমাকে ফান্দে ফেলছ! আমি বুঝিয়াও না বুজিবার ভান করিয়া কহিলাম কিসের ফান্দ! কে ফেলছে। ভন্দু কহিল, আমি নাকি উহার নাম্বার “রাস্তার মেয়েদের” দিয়া বেড়াই। ছরম উত্তেজিত হইয়া ভন্দু আমার অতীব সুন্দরী ললনাকেও রাস্তার ললনা কহিল।

বোনাস হিসাবে যোগ করিল আমাকে আর ওই ললনাকে ১ হাজার টাকা দেওন লাগব! কারণ সে নাকি ১ হাজারের বেশি টাকা ললনার জন্য ফুনে ব্যয় করিয়াছে। খানিক বাদে ললনাও ফুন দিল। ফুন দিয়া আমারে ঝাড়ি!! আমি কিচুই বুঝিলাম না! ঘটনার আগে পরে কুনু জায়গায় আমি নাই। তাও সব্বাই খালি আমারেই ঝাড়ে ক্যান!! পরে শুনিয়াছিলাম গেরামের বড় ভাই আমার ভন্দুর রেসাল্ট জাননের সময় সব ঘটনা কহিয়া দিচে। উনি ঘটনা না কহিলে বন্ধুকে পুরা লুল থেকে আবুল সক্কলই বানানো সম্ভব পর হইত।

আরও পরে পরথম আলুর এ পিলাচ এক সংবর্ধনায় উহাদের দেখা হইয়াছিল। সেই সময় যেই মাইয়াকে ললনা “ঠিক” করিয়াছিল সে তাহার বয়ফ্রেন্ড সহকারে আসিয়াছিল। উল্লেখ্য, আমার জ্বর আসায় আমি উহাদের সহিত জয়েন করিতে পারি নাই। তবে জয়েন করিলে ভন্দু যে আমারে নন্দনের পচা পানিতে চুবাইত সেই ব্যাপারে কুনু সন্দেহ নাইক্কা!! মোরালঃ অপরিচিত ফুন কলের ব্যাফারে সাবধান! প্রেম করবেন ভালু কথা তয় পেরেম করবার গিয়া এমনে কট খাইয়া যাইয়েন না!! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.