আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুদের ভয়ানক পরিণতি-১

সততাই সর্ব উৎকৃষ্ট পন্থা। "আল্লা’হ ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। " (সূরা বাকারা: ২৭৫) বর্তমানে সুদ আমাদের দেশ ও জাতিকে অক্টোপাসের মত বেঁধে ফেলেছে। সুদ ছাড়া আমাদের অর্থনীতির চাকা যেন বন্ধ। যার কারণে পত্রিকা ও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে মানুষকে এ বিষয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

নির্দিষ্ট অংকের লাভের বিনিময়ে অর্থ ডিপোজিট করতে আহবান করা হচ্ছে। বিভ্রান্ত ও সৎ পথ থেকে বিচ্যুত কিছু আলেমের ফতোয়াও প্রচার করা হচ্ছে এই মর্মে যে, সুদী ব্যাংকের সাথে লেনদেন করা জায়েয এবং নির্দিষ্ট অংকে ইন্টারেস্ট বা সুদ গ্রহণ করাও জায়েয। কিন্তু এ বিষয়টি অত্যন্ত ভয়ানক। প্রকাশ্যে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের বিরোধিতা ও তাঁদের প্রকাশ্য নাফরমানী। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন: "হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক।

অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমরা নিজের মূলধন পেয়ে যাবে। তোমরা কারও প্রতি অত্যাচার করো না এবং কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করবে না। [সুরা বাকারাঃ ২৭৮-২৭৯] । একবার ভেবে দেখুন সমগ্র মহাবিশ্বের অধিপতির সাথে যুদ্ধ করার কথা চিন্তা করা যায়? আল্লাহ্‌ আরো বলেনঃ “যারা তাঁর নির্দেশের বিরোধিতা করে তারা যেন সতর্ক হয়ে যায় যে, তারা ফেতনায় পতিত হবে অথবা তারা যন্ত্রনাদায়ক শাস্তির সম্মুখিন হবে।

(সূরা নূর- ৩৬) ইসলাম ধর্মে একথা সর্বজন বিদিত যে, কুরআন সুন্নাহর দলীল অনুযায়ী সুদী ব্যাংকে অর্থ রেখে সেখান থেকে নির্দিষ্টহারে ফায়েদা বা ইন্টারেষ্ট গ্রহণ করা নিঃসন্দেহে সুদ। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সুদকে হারাম করেছেন। সুদ কাবীরা গুনাহের অন্তর্ভূক্ত। সুদ অর্থ-সম্পদের বরকতকে মিটিয়ে দেয়, আল্লাহর ক্রোধ বাড়িয়ে দেয়। সুদের কারণে আমল কবূল হয় না।

আর মনে রাখবেন- হালাল রুজি ইবাদতের পূর্ব শর্ত। আল্লাহ্ তা‘আলা রাসূলদের (আঃ) প্রতি যা নির্দেশ পাঠিয়েছেন, মুমিনদের প্রতিও তাই পাঠিয়েছেন। তিনি এরশাদ করেন: “হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার্য গ্রহণ কর এবং সৎ কর্ম কর। “ (সুরা মু‘মেনূন: ৫১) জেনে রাখুন! সুদ একটি অন্যতম কবিরা গুনাহ। কুরআন ও হাদীছে কঠিনভাবে সুদকে হারাম করা হয়েছে।

সুদের যাবতীয় প্রকার-প্রকৃতি ও যে নামেই ব্যবহার করা হোক তা নিষিদ্ধ। আল্লাহ্ বলেন, "হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধিহারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পার। এবং তোমরা সেই আগুন থেকে বেঁচে থাক, যা কাফেরদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও রাসূলের, যাতে তোমাদেরকে দয়া করা হয়।

(সূরা আলে ইমরান ১৩০-১৩২) আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করে মৃত্যুর পরে কি হবে তা তখনকারটা তখন দেখা যাবে। তারা জাহান্নামের আগুনকে ভয় পায় না। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন পাঁচ টাকা দামের একটি মোমবাতির সামান্য একটু আগুনে আপনি কতক্ষণ আপনার আঙ্গুলের সামান্য একটু অংশ ধরে রাখতে পারবেন? আর পরকালে তো সামান্য আগুন থাকবে না আর সামান্য অংশও পোড়ানো হবে না। আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেনঃ যারা আমাদের নির্দেশাবলীতে অবিশ্বাস পোষণ করে, নিশ্চয়ই তাদের আমরা অচিরে আগুনে প্রবেশ করাবো। যতবার তাদের চামড়া পুরোপুরি পুড়ে যাবে ততবার আমরা সেগুলো বদলে দেবো তার পরিবর্তে অন্য চামড়া দিয়ে যাতে তারা শাস্তি আস্বাদন করে।

নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ হচ্ছেন মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী। (সুরা নিসাঃ ৫৬)। আল্লাহ আরো বলেন, “মানুষের সম্পদ বৃদ্ধি পাবে বলে তোমরা সুদ হিসেবে যা প্রদান করে থাক আল্লাহর কাছে তা ধন্তসম্পদ বৃদ্ধি করে না। (সূরা রূম- ৩৯) "যারা সুদ খায়, ক্বিয়ামতে দন্ডায়মান হবে এমন লোকের মত, যার উপর শয়তান আছর করে তাকে মোহাবিষ্ট করে দিয়েছে। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয়ও তো সুদ নেয়ার মতই।

অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে" (সূরা বাক্বারা ২৭৫-২৭৬) আসুন আমরা সুদের বকেয়া ছেড়ে দিই, আল্লাহ্‌কে ভয় করি।

আল্লাহ্‌ আমাদেরকে সহজ সরল পথে পরিচালিত করুন। প্রিয় মুসলিম ভাই-বোনগণ, পড়া শেষে উপকৃত হলে দয়াকরে এই বিষয়টি সকলের সাথে শেয়ার করবেন । কেননা “কেহ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা” [সহীহ মুসলিম: ২৬৭৪] ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.