আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াত ও পুলিশের পাল্টাপাল্টি হিটলিস্ট

আমি বাঙালি এবং বাংলাদেশী যুদ্ধাপরাধের বিচার ও চলমান আন্দোলনকে সামনে রেখে জামায়াত ও পুলিশ একে অন্যের হিটলিস্ট তৈরি করেছে। জামায়াত-শিবিরের হিটলিস্টে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী ও পুলিশ সদস্যরা রয়েছেন। অন্যদিকে পুলিশ এবং গোয়েন্দারাও জামায়াতের সহিংস আন্দোলনের পরিকল্পনাকারী, সংগঠক ও ইন্ধনদাতাদের তালিকা চূড়ান্ত করেছে। বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় প্রতিদিনই সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। সুযোগ পেলেই জামায়াত-শিবিরও পাল্টা আঘাত করতে পিছপা হচ্ছে না।

ফটিকছড়ির সর্বশেষ ঘটনায়ও জামায়াত-শিবির জড়িত বলে মনে করে পুলিশ। জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় পরিবর্তন না হলে এবং কাদের মোল্লার সাজা বাড়ানো হলেই জামায়াত-শিবির টার্গেট অনুযায়ী চূড়ান্ত আঘাত হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে দলীয় ও গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানিয়েছে। হিটলিস্ট অনুযায়ী এরমধ্যে পুলিশ জামায়াতের নরসিংদী জেলা আমীর আফম আবদুস সাত্তারকে শুক্রবার জুমার নামাজের পর বাড়ি ফেরার পথে গ্রেফতার করে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে জয়পুরহাট জেলা সেক্রেটারি প্রভাষক নজরুল ইসলামকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ক’দিনেও তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। স্বজনরা আইনশৃংখলা বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও তারা বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

এর আগে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, জামায়াতে ইসলামীর পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত হেফাজতে ইসলাম ও ইসলামী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর নজরদারি শুরু করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। তারা কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন তাতেও নজর রাখা হচ্ছে। জামায়াত ছাড়াও অন্য ইসলামীদলগুলোর সহস াধিক নেতাকর্মীর নাম অন্তর্ভুক্ত করে ওই তালিকা পুলিশ সুপারদের হাতে এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে। সেই ছক অনুযায়ী পুলিশ ও র‌্যাব গ্রেফতার অভিযান শুরু করেছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য আরও মারমুখি হয়ে উঠতে পারে। সেজন্যই পুলিশ ও গোয়েন্দারা জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে। জামায়াত-শিবিরও পুলিশ ও সরকারি দলের নেতাকর্মীদের হিটলিস্ট তৈরি করেছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার মনোপূতঃ না হলে দেশের সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সক্রিয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর পাল্টা আঘাত হানার দলীয় সিদ্ধান্ত রয়েছে তাদের। গ্রেফতারের পর জামায়াত-শিবিরের একাধিক নেতাকর্মী এসব তথ্য পুলিশ ও গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন।

আইনশৃংখলা বাহিনীর সূত্রগুলো জানায়, সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর থেকে জামায়াত-শিবির পুলিশ ভ্যান ও ফাঁড়িসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। যেখানে যে কৌশল নেয়া দরকার তারা সেখানে সেই কৌশলই নিচ্ছে। দু’মাসে সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের হামলার ঘটনায় প্রায় দুশ’ মামলা হয়েছে। এসব মামলায় দলের নেতাকর্মীসহ কয়েক হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। জামায়াত-শিবির বিশেষ মহলের সহায়তায় সারাদেশে নৈরাজ্য ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।

জামায়াত-শিবিরের অব্যাহত নৈরাজ্য প্রসঙ্গে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি একেএম শহিদুল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনীর প্রথম টার্গেট ছিল পুলিশ। এখন জামায়াত-শিবিরের প্রথম টার্গেটও পুলিশ। তাদের লক্ষ্য একটাই। পুলিশকে যদি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করা যায়, তাহলেই তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে। রাসুল (সাঃ) বলেছেন “মুনাফেক থেকে সাবধান থাক, তারা ইসলামের অনেক বড় শত্রু ,কারন তারা অন্তরে কুফরী ভাব লুকায়িত রাখে আর মুখে ইমান এনেছি বলে।

“ জামাত-শিবিরের ক্ষেত্রে সন্ত্রাস রীতিমতো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাপার। ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে এই চক্র ১৯৭১ সালে মানুষকে হত্যা করেছে, ঘরে আগুন দিয়েছে, মা-বোনের ইজ্জত লুটেছে। এখনও হত্যা, রগ কাটা অব্যাহত রেখেছে। এখনও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তারের জন্য তারা মেধাবী ছাত্র ও প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাদের হত্যার কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছে। এসব ঘটনা ’৭১ এর বুদ্ধিজীবি নিধনেরই ধারাবাহিকতা।

মূলত তারা চায় দেশের শিক্ষাঙ্গনকে অস্থিতিশীল রেখে জাতির বিকাশকে বাধাগ্রস্থ করতে। শিবিরের নৃশংসতার খতিয়ান অনেক লম্বা। কিছুদিন যাবৎ তাদের রগ কাটার কর্মসূচী বন্ধ থাকলেও এখন তা আবার নতুন করে শুরু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে পাক হানাদারদের যারা সহযোগিতা করত সেই জামাতের তৎকালিন ছাত্রসংস্থার নাম ছিল ইসলামী ছাত্র সংস্থা। ১৯৭৭ সালে পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তারা ইসলামী ছাত্র শিবির নামে আত্মপ্রকাশ করে।

বর্বরোচিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য সর্বস্তরে নিন্দিত জামায়াতে ইসলামীর এই ছাত্র সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার তিন বছরের মাথায় জবাই করে হত্যার রাজনীতি শুরু করে চট্টগ্রাম থেকে। ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে হামলা-সহিংসতা-সংঘর্ষ নতুন কিছু নয়। তবে এক্ষেত্রে অপরাপর ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে শিবিরের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। শিবির সরাসরি হত্যার মিশনে নামে। তাছাড়া এরা যাকে আঘাত করে তাকে চিরতরে পঙ্গু-অচল করে দেয়।

এর মাধ্যমে তারা সংশিস্নষ্ট কর্মীটিকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার এবং অন্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদেরকে সাবধান করে। এজন্য শিবিরের নৃশংসতার সাথে অন্য কারো তুলনা হয় না। হাতুড়ি, রড, ইট, মুগুর দিয়ে হাড় গুড়ো করে দেয়া, রিকশার স্পোক কানের ভেতর ঢুকিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মগজ বের করে আনা, হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়া, চোখ উপড়ে ফেলা, মেরুদণ্ড ভেঙ্গে ফেলা, কব্জি কেটে নেয়া, কিরিচ, ছোরা, কুড়াল ব্যবহার করে হত্যা করার মতো নৃশংসতা এদেশের ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে কেবল শিবিরের নামের সাথেই যুক্ত জামায়েত ইসলাম এর উদ্দেশ্য কখনই ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা নয়, তাদের উদ্দেশ্য যে কোন ভাবে ক্ষমতা গ্রহন করা, ঠিক যেভাবে এজিদের মত মুনাফেক ক্ষমতা গ্রহনের রাজনিতি করেছিল। কাজেই মুসলিম সাবধান!!!! আজকে থেকে আমি তাদের “জামায়েতে মুনাফেক” এবং “মুনাফেকি ছাত্র শিবির” নামে ডাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। তাদের সম্পর্কে কোন কিছু বলার ক্ষেত্রে ‘ইসলাম’ শব্দটা ব্যবহার করতে চাই না।

সকল মুস্লিমদের একই আহ্বান জানাচ্ছি। তাদের চিনে রাখুন এবং সাবধান থাকুন ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.