দার্শনিক ফরহাদ মজহার বলেছেন, মাহমুদুর রহমান ইস্যুতে ঈমানী পরীক্ষার মুখে পড়েছে হেফাজতে ইসলাম। ১১ এপ্রিল রাত ১২টায় সংবাদপত্রভিত্তিক লাইভ অনুষ্ঠানে এ বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম শাপলা চত্বর মহাসমাবেশের বিষয়ে বলেছিল তারা শান্তিপূর্ণ একটি কর্মসূচী করবে এবং সমাবেশ করবে। তারা সে ওয়াদা রেখেছে। সরকারি নানা বাঁধার মুখেও তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করে চলে গেছে। তারা একই সমাবেশে বলেছিল মাহমুদুর রহমান এবং আমার দেশ পত্রিকার কিছু হলে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তারা কি কঠোর পদক্ষেপ নেয় তা এখন দেখার সময় এসেছে। তাদের সে ওয়াদা রক্ষা করা তাদের ঈমানী দায়িত্ব। তারা ঈমানী পরীক্ষার মুখে পড়েছে।
আমার অভিমত : আমার আশঙ্কা হেফাজতে ইসলাম মাহমুদুর রহমান ইস্যুতে ঈমানী পরীক্ষায় উত্তীর্ন হতে পারবেনা। এমনকি মাহমুদুর রহমান ইস্যুতে হেফাজতের নেতৃত্বে ভাঙ্গন, বিভক্তি, বিরোধও দেখা দিতে পারে।
কওমী মাদ্রাসা সম্পর্কে আমার সামান্য যা অভিজ্ঞতা তার আলোকে আমার এ ধারণা জন্মেছে। শুধুমাত্র ধর্মীয় ইস্যুতে হেফাজতের নেতৃবৃন্দ এক থাকতে পেরেছে। মাহমুদুর রহমান যেহেতু সরকারের বিরুদ্ধ একটি শক্তি তাই তার ইস্যুতে হেফাজতের নেতৃবৃন্দ একমত থাকতে পারবে বলে মনে হয়না। কওমী অনেক নেতৃবৃন্দকে আমি দেখেছি তারা আওয়ামী সমর্থক। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ যখন তাদের ধর্মকর্মের এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর চূড়ান্ত আঘাত হানে তখন তারা নিতান্ত ঠেকে মাঠে নামে।
আমাদের দুর্ভাগ্য দুইবার দেশ চালাবার মত একটি দল আজ নিজেদের সম্পূর্ণ মেরুদণ্ডহীন সরিসৃপ প্রাণীতে পরিণত করল। সরকারের সমস্ত জনবিরোধী, অন্যায়, অবিচার, শোসন, লুটপাট, দুরাচার, অনাচার, ব্যাভিচার এবং ফ্যাসিবাদী কার্যক্রম রাজনৈতিকভাবে বিরোধী দলেরই মোকাবেলা করার দরকার ছিল। জনগনের পক্ষে কথা বলার দরকার ছিল। কর্মসূচী দিয়ে সরকারকে চাপে রাখার দরকার ছিল। জনগন সেটাই তাদের কাছ থেকে আশা করেছিল।
কিন্তু তারা চূড়ান্তভাবে জাতিকে হতাশ করেছে। অপেক্ষা করতে করতে মানুষের ধৈর্য্য শেষ সীমায় পৌছেছে। আজ তাই বিরোধী দলের কাছ থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে বিকল্প শক্তির পানে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছে। হেফাজতের মত একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের কাছ থেকে তাই তারা আশা করেছিল তারা হয়ত কিছু করবে। কিন্তু মজলুম জনগন বুঝলনা- এ যে মরিচীকা।
এখন অনেক জায়গায় তাই শুরু হয়েছে জনপ্রতিরোধ। বিএনপিও এখন মনে হচ্ছে মরিচীকার পেছনে ছুটছে। তাই তারাও আজ নানা বিকল্প শক্তির উত্থানের আশা করছে। বিগত চারটি বছর তারা পার করেছে বিদেশী প্রভুদের পা চেটে। জনগনকে বাদ দিয়ে তারা আশা করেছিল বিদেশী প্রভুদের পা চাটলে এবং দেশ বিক্রির বনিবনা হলে হয়ত তারা তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে।
এজন্য তারা ভারতে পর্যন্তও গিয়েছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তাতেও কাজ হচ্ছেনা। দুইবারের প্রধানমন্ত্রী, এতবড় একটি দলের নেত্রী সরাসরি সেনাবাহনীকে ক্ষমতা গ্রহনের আমন্ত্রন জানাচ্ছেন এখন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।