লিখে খাই, সবার ভাল চাই
বড়ই আফসোস! যে না পারে পা ছুঁয়ে বলতে সে এখন মাথা ছুঁয়ে বলে। সমাজটা বদলে গেছে। বদলে গেছে মূল্যবোধ। নীতি-নৈতিকতা। কার কি অবস্থান সে নিজেই জানে না।
আর এ কারণেই কে কখন কি বলছেন, সে হুঁশও নেই অনেকের। অথচ তার একথা যারা শোনেন উল্টো তারাই লজ্জিত হন। কখনও কখনও ব্যথিত হন। তাতে কি? যে বলে, সে নির্বিকার; কে কি বললো সে দিকে তাকানোর সময় তার কোথায়? আর বললেই বা কি? পাত্তা না দিলেই হলো। এসব দেখে-শুনে সেই মুচির কথাই বলতে হয়Ñ এক মুচি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল।
কিছু বখাটে ছেলে তাকে ধরে অকারণে উত্তম-মধ্যম দিতে লাগল। মুচি বেটা কি করবে, যতই মার খাচ্ছে ততই চিৎকার করে বলছেÑ দিয়েই দেখ। আবার মার খাচ্ছে, আবারও মুচির চিৎকারÑ দিয়েই দেখ। এমনই হলো দশা তাদের। গত সপ্তাহ খানেক ধরে সরকার দলীয় বেশ ক’জন মন্ত্রী ও নেতার কথা শুনে এমনটাই মনে হচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি কিনটনের সঙ্গে বৈঠকে শান্তিতে নোবেল পাওয়া ড. ইউনূস ও ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে বলার পর যেন তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন কেউ কেউ। তাই সরকারের প্রভাবশালী এক মন্ত্রী বলেই ফেলেন, ড. ইউনূস কোথায় যুদ্ধ করেছেন? কি যুদ্ধ করে তিনি শান্তি এনেছেন? আরেক মন্ত্রী তো আহ্বান জানান, এমন কথা বলতে হলে আগে রাজনীতিতে নামুন। আশ্চর্য! এই মন্ত্রীর কথায় মনে হলো রাজনীতি করলেই এমন কথা বলা যাবে অন্যথায় নয়। যারা রাজনীতি করেন তারাই তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু নিয়ে কথা বলার অধিকার রাখেন। অবশ্য তাদের আক্রোশটা কোথায়Ñ এ বিষয়টি দেশের সাধারণ মানুষ ঠিকই বুঝেছেনÑ উনারা না বললেও।
সেই কাক কাহিনীর মতোই: এক কাক তার নিজের চোখ বন্ধ করে খড়ের চালার নিচে কিছু লুকিয়ে রাখছিল। আর ভাবছিল পৃথিবীর কেউ দেখেনি। হাস্যকর কাহিনী ঘটছে সব চারপাশে। আরেক প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের ওপরও ক্ষেপেছেন সেই মন্ত্রী। এখানেও একই কথা।
ব্যারিস্টার রফিক সাধারণ মানুষের মনের কথা বলে ফেলেছেন প্রকাশ্যে। যা ওই মন্ত্রীর গায়ে কাঁটা হয়ে বিঁধেছে। এসব শুনে এক পথিকের মন্তব্য হলো- সূর্যের চেয়ে বালুর তাপ বেশি। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কথার মানে কি? তিনি বললেন, আরে বাবা, সূর্য হলো আগুনের কুণ্ডলি। হাজার হাজার মাইল দূর থেকে এর তাপে আমরা দিশাহারা হই।
মাটি, পানি যা কিছু আছে এর উত্তাপ গ্রহণ করে। আর বালি সূর্যের তাপে উত্তপ্ত হয়ে গর্ব করেÑ সূর্য বেটা আবার কে? সূর্যের চেয়ে আমার তাপই বেশি। আবার ক’দিন গেছে মামলা আর গ্রেপ্তার নিয়ে নানা ঘটনা। অবশেষে নেতারা বুধবার নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ জামিন দেয়া না দেয়া নিয়ে নানা বিতর্ক দেশজুড়ে। তার চেয়ে বড় কথা হলো- রাজনীতি আর কারাগার তো এক সুতোয় গাঁথা। যুগে যুগে ক্ষমতাসীনরা বিরোধীদের ওপর খবরদারি করেছে। নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে। কথায় কথায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
এ থেকেই রাজনীতি আর কারাগার একে অন্যের পরিপূরক হয়ে গেছে। কিন্তু হরতালে গাড়ি পোড়ানো মামলার পর বিরোধী নেতাদের আত্মগোপনে চলে যাওয়া নিয়েও নানা আলোচনা সর্বত্র। যদিও বিরোধী নেতারা বলছেন, এটা তাদের কৌশল। কিন্তু দেশবাসী তাদের এ কৌশলকে ভালভাবে গ্রহণ করেননি। তাই বলছি, যার যে কাজ তারই সেটা করা উচিত।
সূর্যের তাপ নিয়ে বালুর মতো উঁচু করে যদি বলে, সূর্যের চেয়ে আমার তাপ বেশি তাহলে মানুষ তো হাসবেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।