আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নগরীর ১৬৩ কিলোমিটার ফুটপাতের ১০৮.০৬ ভাগ হকারদের দখলে

যেমন কর্ম তেমন ফল। ফুটপাত শব্দের অর্থ-পথ চারীদের হেটে চলার পথ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য রাজধানীর হকাররা এ শব্দের অর্থ বদলে ফেলেছে। তারা ফুটপাতে দোকান, স্থায়ী, অস্থায়ী মার্কেট বানিয়ে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করে যাচ্ছে। কোন আইন মানতে রাজি নই তারা।

হকার উচ্ছেদের প্রসঙ্গ আসলে উল্টো আন্দোলন করে নগরী অচল করার হুমকিও দেয়। ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নগরীর ১৬৩ কিলোমিটার ফুটপাতের ১০৮.৬০ কিলোমিটার ফুটপাতই এখন হকারের দখলে। এছাড়াও ২২৮৯.৬৯ কিলোমিটার সড়কের ৫৭২.৪২ কিলোমিটারও হকার মার্কেট। বাংলাদেশ ছিন্নমূল হকার্স সমিতির জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশ ছিন্ন মূল হকার্স সমিতির জরিপের তথ্যমতে, নগরীর ফুটপাতের ১৩ ভাগ হকারদের দখলে, ১৫ ভাগ দোকান মালিকদের দখলে, পাবলিক টয়লেট ও অন্যান্য যাত্রী ছাউনি ৫ শতাংশ, রাজনৈতিক দলের অফিস ১ শতাংশ, সবমিলিয়ে ৪৮ শতাংশ বিভিন্ন দখলে রয়েছে, এবং ৫২ শতাংশ উন্মুক্ত রয়েছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে ফুটপাত দখল।

গড়ে উঠছে দোকান মার্কেট। ফলে সংকুচিত হয়ে আসছে সড়ক। সৃস্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। বাড়ছে দুর্ঘটনা। পথ চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছে নগরবাসী।

এসব ফুটপাত দখল মুক্ত করতে হাইকোর্টের নির্দেশ থাকলেও থোড়ায় কেয়ার করছেনা ঢাকা সিটি করপোরেশ (ডিসিসি) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ(ডিএমপি)। রাজনৈতিক দলের নেতারা নির্বাচনের আগে এসব দখল মুক্ত করে হকারদের পূনরর্বাসন করার অঙ্গিকার করলেও নির্বাচনের পর ভুলে যায় সে সব অঙ্গিকার। নিজেরা্্ই ফুটপাত দখল বাণিজ্যে মেতে উঠেন। রাজধানীর বহুবিধ সমস্যার মধ্যে হকারদের ফুটপাত দখল বাণিজ্য বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি জরিপের তথ্যমতে, নগরীতে বর্তমান দেড় লাখ হকার ।

ছিন্নমূল হকার্স সমিতির তথ্য মতে, নগরীতে ১লাখ ৩০ হাজার মানুষ হকারি পেশার সাথে জড়িত। নগর পরিকল্পনাবিদদের মতে, একটি নগরের মোট আয়তনের ২৫ ভাগ সড়ক দরকার। ডিসিসির আয়তন ৩৬০ বর্গকিলোমিটার। সে হিসেবে সড়ক রাখার দরকার ছিলো ৯০ বর্গকিলোমিটার। সড়ক আছে ৬০ বর্গকিলোমিটার।

দখল হয়ে গেছে ১৫ বর্গ কিলোমিটার। ডিসিসির তথ্যমতে, ঢাকা মহানগরে বর্তমান দেড়কোটি মানুষের বসবাস। জনসংখ্যা গবেষকদের ধারণা মতে, ২০১৫ সালে নগরীর জনসংখ্যা হবে ২কোটি। সারা দেশের মোট গাড়ির ৬২ শতাংশ চলে ঢাকা শহরে। প্রতিনিয়ত এর সংখ্যা বাড়ছে।

ডিসিসির তথ্যমতে, নগরীতে রিকশার সংখ্যা সাড়ে ৭৯ হাজার। তবে বেসরকারি হিসেব মতে, নগরীর রিকশার সংখ্যা ১০লাখেরও বেশী। জনসংখ্যা জর্জরিত এ নগরীর রাস্তা-ঘাট অপ্রতুল। তারপরও প্রতিনিয়ত দখল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, এ ব্যাপারে সরকার সহ কর্তৃপক্ষ কাহারোরই মাথা ব্যথা নেই।

নগরীর যানজট নিরসনে নানামুখি কার্যক্রম নিলেও ফুটপাত যে যানজটেরও অন্যতম কারণ এ বিষয়ে দৃষ্টি দিচ্ছেনা। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এডভোকেট মনজিল মোরশেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যানজটের কারণে শহর চলাচলের অনুনোপযোগী হয়ে যাচ্ছে। এজন্য ডিসিসি ও ডিএমপির ব্যর্থতায় দায়ী। তারা সঠিক ভাবে কাজ করেনা। উল্টো এ ফুটপাত ইজারা ও টোল আদায় করে বার্ণিজ্য শুরু করেছে।

তিনি বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূর্ণর করার দায়িত্ব সরকারের। সরকার আইনগত ভাবে সেটা নিশ্চিত করবে। কিন্তু, মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করেতো ব্যবসার সুযোগ দিতে পারেনা। এখনই সময় নগরীর রাস্তা দখল মুক্ত করার। ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা এ প্রসঙ্গে বলেন ডিসিসিকে নগরীর ফুটপাত পরিছন্ন ও দখল মুক্তরাখার দায়িত দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু, ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। ফুটপাত দখল মুক্ত রাখতে বিশেষ প্রয়োজন পুলিশ ফোর্স। যা ডিসিসি প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারবে। সেটা না থাকায় ডিএমপির পুলিশ নিয়ে ডিসিসি উচ্ছেদ করে আসার সাথে সাথে আবার হকাররা বসে ফলে সকল চেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে। ডিসিসি নগরীকে বাসযোগ্য রাখতে কাজ করার কোন অনিহা নেই।

এখন প্রয়োজন সে সুযোগ করে দেওয়া। ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা চাইলে অল্প সময়ের মধ্যে নগরীর ফুটপাত দখল মুক্ত করতে পারি। রাজনৈতিক বিভিন্ন বাধার কারণে এগুলো সম্ভব হয়না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হলে ঢাকার ফুটপাত দখল মুক্ত করতে ৩দিনের বেশী সময় লাগবেনা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.