আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি পদত্যাগ পত্র ও একটি মুমূর্ষ যোগাযোগ ব্যবস্থা

এসো আবার চড়াই উৎড়ই.......... উপমহাদেশের প্রাকৃতিক রিসোর্স সমূহকে বৃটিশ কলোনিয়াল যুগে, সমুদ্র পাড়ি দেওয়াতে দ্রুত ও সহজ মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলা হয় রেলওয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। আর তাই বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের প্রভাব ছেড়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে কখনওই বেড়িয়ে আসতে পারেনি। বলা হয়ে থাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান ব্যবহৃত কাঁচা লোহার অধিকাংশই নাকি এই রেলওয়ে ও চট্টগ্রাম পোর্ট দিয়ে জাপানে পাঠানো হয়েছিল যুদ্ধ পূর্ববর্তী ব্যবসায়িক সাফল্যের মোহে। আজ দেশে বৃটিশরাও নেই তাদের কলোনিয়াল যুগও নেই, আসলেই কি তাই ? আমরা এখনও আমাদের রেলওয়ে ভবনগুলোকে গাঢ় লাল রংয়ে দেখতেই বেশী পছন্দ করি। প্রাগৈতিহাসিক প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের নজির হিসেবে বিভিন্ন গলি-গুপচি নিয়ে দাড়িয়ে আছে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন কার্যালয় ও কমকর্তাদের বাসভবন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রতিটি সেক্টরে যে দূর্নীতির ছাপ পড়তে পড়তে জড়িয়ে আছে তা সকলেরই জানা, তারপরও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। একটি টিকেট কিনতে গিয়ে যদি লাইনে দাড়িয়ে সৌভাগ্যবসত সীটসহ টিকেট পেয়েও যান, তবে একস্ট্রা কিছু দিতে হবে বুকিং ক্লার্ককে অন্যথায় টিকেট মিললেও সীট মিলবে না। এছাড়াও টিকেট ব্ল্যাকিং এর পিছনে জড়িতরা হলো, বুকিং ক্লার্ক, নিরাপত্তা কর্মী ও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এছাড়াও ট্রেনে চেকিং এর নামে মূলত যা চলে, তা যাত্রী হয়রানী ও পকেট ভারী করা ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনে একটি ডাইনিং কার থাকলেও খাবারের মান সত্যিই হাস্যকর, যদিও মূল্য দেখে বিভ্রান্ত হতে পারেন।

এসবের সাথে জড়িত ডাইনিং কার পরিচালক, ট্রেনের পরিচালক, নিরাপত্তা কর্মী, টিকেট চেকার, এ্যাটেন্ডেন্টসহ সকলেই। রেল স্টেশন ও প্লাটফর্মের ভবঘুরে, হকার ও ভিক্ষুকদের যে উৎপাত দেখা যায় তারাও মূলত নিরাপত্তা কর্মীদের অর্থ প্রদান করেই ঘুরে থাকে। রেলওয়ের প্রতিটি কাজের টেন্ডার, নিয়োগ লবিং ও ঘুষ কেলেংকারীর সাথে জড়িত। রেলওয়ে কর্মচারী - কর্মকর্তারা ভুলেই যান তারা দেশের সেবক। বরঞ্চ, রেল কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের ঔদ্ধাত্য দেখলে আপনাদের মনে হতে পারে, আপনি টাকা দিয়ে ভ্রমণ নয়, তাদের গোলামী কিনতে এসেছেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের আবাসিক কোয়ার্টার, রেলপথ ও বিভিন্ন মেরামত ও নির্মান কার্য বাবদ বার্ষিক বরাদ্দগুলো যে কোথায় যায় তা সংস্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভালোভাবে জিজ্ঞাসাবাদ ও ব্যাংক হিসাব বের করলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। রেলগাড়িগুলোকে আমরা মাঝে মাঝে স্টেশন এর আগে বা কোন অজ্ঞাত স্থানে (বিশেষ করে আখাউড়া স্টেশন এর আগে) যে দাড়িয়ে পড়তে দেখি তা মূলত ইঞ্জিনের তেল বিক্রি ও অবৈধ যাত্রী খালাস করার প্রয়াসেই (পূর্বাঞ্চলের কথা বলছি)। রেলওয়ের বগী মেরামত ও ইঞ্জিন মেরামত কারখানার অবস্থা দিনকে দিন শোচনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। -------------- এক্ষেত্রে ইন্টেরিওর ডিজাইনিংয়ে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ফার্নিচারের কোম্পানী রয়েছে তাদের সাথে কথা বলে তাদেরকে দিয়ে দেশেই যাত্রীবাহী বগী তৈরী সম্ভব। আমাদের ইঞ্জিন নিয়ে যে সমস্ত গবেষকরা আছেন তারা কি নতুন রেল ইঞ্জিন তৈরী করতে পারবেন, নাকি পারবেন না।

আর নতুন রেলপথের তো দরকার নেই দরকার পুরোনো পথের সর্ব্বোচ্চ ব্যবহার। মুমূর্ষ রেলওয়েকে বাঁচানোর কয়েকটি পদক্ষেপ আমরা গত দশ বছর ধরে শুনে এসেছি। বাস্তবায়নের কোন অগ্রগতি দেখিনি, বড় বড় কথার ফাঁকে সকলেই বড় বড় দান মেরে গেলেন। আমরা দূর্নীতি থেকে রেহাই চাই না, কারণ যা পাব না তার পিছনে ঘুরে লাভ কি? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দু-বছরে অনেক রাঘব বোয়ালকে আমরা জ্বরের ঘোরে কাঁপতে দেখেছি। আমাদের ভোটভিক্ষুক দলগুলোর সমস্যা হল ভোট হারানোর ভয়ে সুশাষনের প্রক্রিয়াটাও ভুলে যায়।

একটি লাভজনক খাতকে কিভাবে দেশের সর্বেŸাচ্চ বোঝা বানানো যায় তা বাংলাদেশের সমস্ত সরকারী খাতগুলোই দেখিয়েছে। প্রাইভেটাইজেশানের সুফলে মন্ত্রী পরিষদ নতুন কয়েকটা পাজেরো কিনবেন হয়তো তাতে সাধারণ জনতা সঠিক সেবা পাবে আবার সরকার গঠনকারী দলগুলো তখনও অজুহাত দেখাবে আমরা কি করব? আমাদের রাজস্ব কমে গেছে, রাষ্ট্রীয় কোষাগার শূন্য প্রায়, বিদেশে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ফিরে এসে বলবে বাবারা ভিক্ষা পেয়েছি (তার মধ্য থেকে নিজের পকেটে কত গেল তা কখনওই স্বীকার করবে না)। আবার রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে মুনাফালোভী অসৎ ব্যবসায়ীদের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে এ-সমস্ত সেবা খাতসমূহকে সরকারের হাতেই রাখতে হবে। শুধুমাত্র আমাদের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গরা যদি আমাদের সচিবদের থেকে বেশী চালাক হতেন এবং ক্ষমতা, অর্থ ও স্বার্থের বাইরে রাজনীতি করতেন। আর নিজেদের প্রাপ্ত বেতনভাতাতেই সন্তুষ্ট থাকতেন, রাজনীতিটা একটা মহৎ উদ্দেশ্যে করতেন।

আমরা দেশের প্রতিটি খাতেরই এই অবস্থা তৈরী করেছি দিনের পর দিন নিজেদের স্বার্থচিন্তা ও বিলাসের মোহে, এখন নতুন একটা জেনারেশান এসে হিসাব চাইতেই পারে, আপনারা হিসাব না দিলে বদলে না গেলে, তারা যদি জঙ্গী হয়ে যায়, সশস্ত্র বিপ্লবের ডাক দেয়, কিংবা গণসুইসাডে অংশগ্রহণ করে, অথবা মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে, তাদেরকে ভালো কথা শুনানো আপনাদের শোভা পায় না। একটি সহজ কাজ সমস্ত সিস্টেমেটিকওয়েকে দূর্নীতি থেকে রেহাই দিতে পারত আর তা হল মেশিন রিডেবল ডিজিটাল আই ডি কার্ড। মানুষ একাধিক সীম কিনতে পারত না, মানুষ একাধিক ব্যাংক একাউন্ট করতে পারত না। মানুষ ধরা খেত পদে পদে, আর আমাদের দেশে সেই রকম মেধাবীরাইবা কই যারা মেশিনকে ফাঁকি দিয়ে দূর্নীতি করবে, যাও বা আছে তারা নৈতিকভাবে সৎ হয়ে থাকেন। হ্যাকারদের কথাই ধরি জুলিয়ান এ্যাসাঞ্জকে কি কখনও অসৎ বলতে পারবেন? একটু বলে রাখি বাংলাদেশে রেলওয়ের একটি গর্বগাঁথা, রেলওয়েই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম অপটিক্যাল ফাইবার কমিউনিকেশন চালু করে, আমার জানা মতে ১৯৮৮ এর দিকে নরওয়ে সরকারের অনুদানে।

আর মিডিয়ার ভাইজানেরা একটু সামালকে, অনেক আগে কোথায় যেন পড়েছিলাম এক মিডিয়া মোঘল তার দশ-বিশটা চ্যানেল যখন খবরের অভাবে মারা যাচ্ছে অর্থ্যাৎ অডিয়্যান্স হারাচ্ছে তখন নিজেই কিছু ঘটনা তৈরী করেন, আর আগে-ভাগেই চ্যানেলে প্রকাশ করেন। হিট, হিট ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, এবং হিট.................................। তাও সেই বিজনেস। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.