আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার প্রেমিকা গালিবাজ হয়ে মহিলা এমপি হবে আর আমি এমপির স্বামী হব সবাই বলেন সোবহান আল্লাহ

খোঁচাইলে উষ্টা দিমু .. ছেলের সবই ভালো। দোষ একটাই, ছেলে ব্যাচেলর! বাসা ভাড়া নিতে গেলেই ৯৫ ভাগ বাড়িওয়ালার প্রথম প্রশ্ন, বিবাহিত নাকি অবিবাহিত? যাকে বাসা ভাড়া দিচ্ছে সে চোর, বাটপার, লম্পট কি না সেটা জানা জরুরি না, জরুরি হচ্ছে বিবাহিত কি না! সঙ্গে বউ থাকে কি না! যে বাসায় সুন্দরী মেয়ে আছে, সে বাসা ভাড়া নেয়ার জন্য ব্যাচেলরদের গেটের ভেতর ঢোকাও নিষিদ্ধ। সুন্দরী মেয়েদের বাবারা ব্যাচেলরদের ভাড়া দেয় না কেন, এক বাড়িওয়ালাকে প্রশ্নটি করার পর উত্তর পেয়েছিলাম, অবিবাহিত ছেলেদের নাকি বিশ্বাস নেই। বাড়ির মালিকের মেয়ে ছাড়াও যদি আশপাশের ভাড়াটিয়াদের বউয়ের দিকে চোখ দেয়, এই ভয় থেকেই নাকি বেশিরভাগ বাড়িওয়ালা ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দেয় না। ব্যাপারটা জানার পর একবার নিজেকে বিবাহিত প্রমাণ দিতে অফিসের এক মহিলা কলিগকে বউ সাজিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম।

নতুন বিয়ে করেছি, বউ অন্য জেলায় থাকে জবের কারণে। কয়েক মাসের মধ্যেই ঢাকায় চলে আসবে জানাতেই সোজা বলে দিল, আমাকে ভাড়া না দিয়ে ব্যাচেলরদের ভাড়া দেয়া নাকি ভালো! কারণ, যারা নতুন বিয়ে করে তারা বউ থেকে দূরে থাকলে আশপাশের সুন্দরী মেয়েদের মাঝে নাকি নিজের বউয়ের ছায়া খুঁজে বেড়ায়! মাঝে মাঝে আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করি, দুনিয়াতে যদি পাঠাইলা খোদা, বিয়ে করার জন্য টাকা দিয়া পাঠাইলা না কেন! বিয়ে করার টাকা না দিয়েই যদি পাঠাইলা, বাড়িওয়ালাদের ঘরে ঘরে সুন্দরী মেয়ে পাঠাইলা কেন! ঢাকায় এসে শত শত ঘণ্টা ব্যয় করে কয়েক মাস আগে একটা বাসা পেয়েছিলাম। আমার পাশের ফ্লাটেই বাড়িওয়ালার ফ্ল্যাট। বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার খেলার দিন টাইগারদের ব্যাটিংয়ের সময় টিভির সামনে বসে বাংলার দামাল ছেলেদের মারা চার, ছক্কায় আবেগী হয়ে বেশ চিত্কার চেচাঁমেচির কারণে আলটিমেটাম পেয়েছিলাম, নেক্সট এমন করলে বাসা হারাতে হবে। কথা দিয়েছিলাম, আর এমনটি হবে না।

কিন্তু ফাইনালের দিন পাকিস্তানের প্রতিটা উইকেট পতনের সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি চিল্লাপাল্লা করেছি। শাহরুখ খান হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ক্রিকেটার শাহাদাত হোসাইনের শেষ ওভারে মেয়েলি মার্কা বোলিংয়ে মেজাজ এতই খারাপ হল যে, হাতের টি-মগটা দেয়ালে ছুঁড়ে দেয়ার কয়েক মিনিটের মাথায় ক্রিকেট বিদ্বেষী বাড়িওয়ালা এসে হাজির। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাসা ছেড়ে দেয়ার আলটিমেটাম দেয়ার পরও ক্রিকেটের উত্তেজনায় তখন কিছুই মাথায় আসেনি। না হয় সঙ্গে সঙ্গেই হাত-পা ধরে হলেও ক্ষমা চাইতাম। চরম উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে হেরেও টাইগার বাহিনী কোটি কোটি মানুষের মন জয় করে নিলেও খেলা শেষে আমার ক্রিকেট প্রেমের উত্তেজনা বাড়ির মালিককে ছুঁয়ে যায়নি।

ফলাফল—হলাম বাসা হারা। পরদিন অফিস শেষে বাসা ভাড়া দেয়া হবে সাইনবোর্ড দেখে ফার্মগেটের পাশে এক বাড়িতে ঢুকে কলিংবেল বাজাতেই দরজা খুলে যেতেই অবাক হয়ে গেলাম! ব্যাপক সুন্দরী এক যুবতী দরজা খুলে দিয়ে বেশ ভাব নিয়ে বলল, কি চাই? বললাম, এই বাড়ির মালিককে একটু ডেকে দিন। আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল, আমি বাড়ির মালিকের মেয়ে। আব্বুকে কী দরকার, সেটা বলুন। এমন সুন্দরী মেয়ে থাকার পরও বাসার গেটে ‘ব্যাচেলরদের ভাড়া দেয়া হবে না’ লেখা না থাকার বিস্ময় চেপে গিয়ে বললাম, বাসা ভাড়া চাই।

আপনার বাবাকে ডেকে...আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই বাড়ির মালিকের বড় ছেলে ভেতরের রুম থেকে ড্রয়িংরুমে ঢুকতে ঢুকতে বলল, কোন হালারপোর লগে কথা কইবার লাগছসরে! প্রতি উওরে মেয়েটি বলল, ভাইয়া, এক হালারপো আসছে বাসা নিবার লাইগ্যা। বাপজানরে খুঁজবার লাগছে! দাঁত-মুখ খিঁচে ছেলেটি বলল, বাপরে খুঁজবার লাগছে তুই দাঁত ক্যালাইয়া ক্যালাইয়া কথা কইবার লাগছিস ক্যালা? যা, ভেতরে যা। মেয়েটি আস্তে করে ‘হালারপোর ব্যবহার দেখছো’ বলে ভেতরের রুমে চলে গেল! ভাইয়ের হালারপো সম্বোধনের জবাবে অসম্ভব সুন্দর, শিক্ষিত মেয়েটির মুখে বড় ভাইয়ের সামনেই অপরিচিত একটা ছেলেকে ‘হালারপো’ সম্বোধন শুনে বিস্ময়ে বেহুঁশ হতে গিয়েও হলাম না পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের নিয়ে বহুল প্রচলিত একটা কৌতুক মনে পড়ে যাওয়ায়। কৌতুকটা হুবহু লিখলে রাত জেগে লেখা লেখাটি যে ছাপাখানার মুখ দেখবে না, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই একটু সুশীলতার আশ্রয় নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করছি।

দুই ভাইয়ের ঝগড়ায় এক ভাই আরেক ভাইকে ‘শালারপুত’ বলে গালি দিল। যাকে গালি দিয়েছে সে বড় ভাইয়ের কাছে ছোট ভাইয়ের গালির বিচার দিতেই বড় ভাই বলল, কি বাবাকে শালা বলেছে! হালারপোকে ডাইক্যা আন! না, আর যাই হোক এই বাসা আমার জন্য না। তাই ভাড়া অনেক বেশি বাহানা দিয়ে বেরিয়ে এলাম। গেটের বাইরে আসতেই অধরার ফোন! রিসিভ করতেই বলল—ওই শালা, কি করিসরে? —তোর আদুরে গালি তেলাপোকা, টিকটিকি, ইঁদুর, বিলাই ভুলে হঠাত্ শালায় চলে গেলি যে! —আগামীতে মহিলা এমপি হব তো তাই প্র্যাকটিস করছি। শালা দিয়ে শুরু।

আস্তে আস্তে মানুষের ১৪ গোষ্ঠী পর্যন্ত যাব। —এমপি হওয়ার সঙ্গে গালির সম্পর্ক কি? —শোন, প্রতি মিনিটে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সংসদে কি হয়? একে অন্যকে গালাগালি। আর সব সময় গালাগালিতে এগিয়ে থাকে সরকারি দলের সদস্যরা এবং প্রথম স্থান বরাবরই জনৈকা রং হেডেড মহিলার দখলে থাকে! এবারের কথাই ধর। যিনি কি না নিজেই স্বৈরাচারী বিশ্ববেহায়ার সঙ্গে আপস করে জাতীয় বেঈমান খেতাব এবং তিন উদ্দিনের সঙ্গে আঁতাত করে ক্ষমতায় এসেছেন তিনিই ‘কোলে ওঠা’র অশ্লীল ইঙ্গিত করে বিরোধী দলকে। এরপর নেত্রীকে অনুসরণ করে বাকিদের গালাগালি শুরু।

নেত্রীর মুচকি হাসির প্রশ্রয়ে কার চাইতে কে বেশি বিরোধী দলকে গালি দেবে এই নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা। জবাব দেয়া শুরু করে বিরোধী দলও। —সরকারি দল গালি, অশ্লীল ইঙ্গিত করলে বিরোধী দলকেও একই কাজ করতে হবে? —তোকে যদি কেউ ২০টা ঘুষি দেয়, তোর যদি একটা দেয়ার সুযোগ থাকে তুই কি দিবি না? —হ্যাঁ দেব। —তাইলে আর সুশীলগিরি করিস না। এখন থেকে আমি গালি দিলে বিনা প্রতিবাদে শুনবি।

এমনিতেই বাসা না পাওয়ার টেনশন, এরপর প্রেমিকার গালিবাজ হওয়ার শখ! এই জীবনই আর রাখুম না। কচু গাছটা কত আগে লাগিয়েছি, এখনও যে লম্বা হয় না ক্যান! ভিমরুল , দৈনিক আমারদেশ ... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।