ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরতে শুরু করেছে পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক ও লেনদেন বৃদ্ধির ধারায় ছিল। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। জানা গেছে, গত প্রায় আড়াই মাস ধরে ডিএসইর সূচক পাঁচ হাজার পয়েন্টের নিচে অবস্থান করছে। বিশেষ করে পরিচালকদের শেয়ার ধারণের সীমা নির্ধারণ করে দেয়ার পর থেকে সূচক নিম্ন্নমুখী হতে শুরু করে।
এতে শেয়ার দরে অব্যাহত পতনে হতাশ বিনিয়োগকারীরা বাজার বিমুখ হয়ে পড়ে। ফলে লেনদেনেও ব্যাপক ধস নামে। তবে ডিএসইর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছুটা স্বস্তির হাওয়া দেখা যাচ্ছে। ১৫ মার্চ সভাপতি নির্বাচনের মাধ্যমে ডিএসইতে নতুন নেতৃত্ব আসায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারো প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া নবনির্বাচিত সভাপতি রকিবুর রহমানের সঙ্কট উত্তরণ এবং বিনিয়োগকারীদের বাজারমুখী করে তোলার প্রতিশ্রুতি বাজারে আস্থার জন্ম দিয়েছে।
ফলে গত সপ্তাহজুড়ে সূচক উর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরে আসে। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজারে চলমান পরিস্থিতিতে তারল্য সঙ্কটের চেয়ে আস্থার সঙ্কটই বেশি। বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগে সাহস পাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে তাদের বাজারমুখী করে তুলতে পারলেই সব সঙ্কট কেটে যাবে। সপ্তাহের বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহজুড়ে ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক ও লেনদেন।
একই সঙ্গে বেড়েছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ২৭৫টি প্রতিষ্ঠানের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩৫টির, কমেছে ২৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৭টি প্রতিষ্ঠানের। বাকি ৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়নি। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছিল ২৩৯টির, কমেছিল ২৪টি, অপরিবর্তিত ছিল ৬টি এবং কোনো লেনদেন হয়নি ৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ায় গত সপ্তাহে ডিএসইর সূচকও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ডিএসইর সাধারণ সূচক ছিল ৪ হাজার ৫৪৩ পয়েন্ট। সপ্তাহ শেষে বৃহস্পতিবার সূচক কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৭৫৯ পয়েন্টে। অর্থাৎ এক সপ্তাহে সূচক বেড়েছে ২১৬ পয়েন্ট। সপ্তাহের সর্বোচ্চ সূচক ছিল শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ৪ হাজার ৭৫৯ পয়েন্ট এবং সর্বনিম্ন সূচক ছিল প্রথম কার্যদিবস রোববার ৪ হাজার ৫৪৩ পয়েন্ট।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন বেড়েছে ৮৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৮৩ কোটি ৩৪ লাখ ৭৮ হাজার ৫৪৫ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২৭৮ কোটি ৮৪ লাখ ৪২ হাজার ৩৭৪ টাকা। এদিকে গত সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেনও বেড়েছে। গত সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৪৭৬ কোটি ৬৬ লাখ ৯৫ হাজার ৭০৯ টাকা।
যেখানে এর আগের সপ্তাহে গড় ছিল ২৫৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৮ হাজার ৪৭৫ টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে এর আগের সপ্তাহের চেয়ে গড় লেনদেন বেড়েছে ৮৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সাপ্তাহিক দাম বাড়ার ভিত্তিতে শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো- এপেক্স ট্যানারি ২৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ, আরামিট সিমেন্ট ২২ দশমিক ২৭ শতাংশ, বাংলাদেশ ল্যাম্পস ১৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ, মবিল যমুনা বাংলাদেশ লি. ১৮ দশমিক ৩২ শতাংশ, আরএকে সিরামিকস লি. ১৮ দশমিক ১৫ শতাংশ, মেঘনা সিমেন্ট ১৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ, তালুকদার স্পিনিং ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, ইউনিয়ন ক্যাপিটল ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ, এমআই সিমেন্ট ১৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং যমুনা অয়েল ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।