এশিয়া কাপে সাংবাদিক প্রবেশ কার্ড নিয়ে অনিয়ম
উৎসব। ঢাকা, ১০ মার্চ
এশিয়া কাপের কাউন্ট-ডাউন শুরু হয়েছে। আর মাত্র ১৮ ঘন্টা পরেই পাকিস্তান-বাংলাদেশের ম্যাচের মধ্য দিয়ে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশে তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এশিয়া কাপের আসর।
সদ্য শেষ হওয়া বিপিএল’র আসরের মতো এশিয়া কাপেও সাংবাদিকদের প্রবেশ কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে চরম অনিয়ম ও মুখ পরিচিতি প্রাধন্য দেয়া হচ্ছে।
এশিয়া কাপের আয়োজক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশী সাংবাদিকদের প্রবেশ কার্ড (অ্যাকরিডিয়েশন কার্ড) দেওয়ার ক্ষেত্রে চরম অনিয়ম দেখা গেছে।
এশিয়া কাপ কাভার করার জন্য বিসিবি থেকে এশিয়া কাপ কাভারের অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করার পরেও অনেক সাংবাদিকের মেলেনি প্রবেশ কার্ড। এমনকি দীর্ঘক্ষণ কার্ডের জন্য অপেক্ষা করার পরেও কর্তাব্যক্তির মেলেনি কোন সদুত্তর।
বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনূসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমাদের আসন সংখ্য ৪৫০টি। অথচ অনলাইনে আবেদন পড়েছে ১হাজার-১২শ। সবাইকে কি অ্যাকরিডিয়েশন কার্ড দেওয়া সম্ভব?"
তিনি বলেন, "কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল কর্তৃপক্ষই সর্ব ক্ষমতার অধিকারী।
এক্ষেত্রে আমাদের করার কিছুই নেই। অনলাইন পত্রিকা প্রসঙ্গে বলেন, "দু-একটি ছাড়া কোন অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিকদের প্রবেশ কার্ড দেওয়া হবে না। "
এদিকে শনিবার মিরপুর স্টেডিয়ামে সাংবাদিকেদের প্রবেশ কার্ড দেওয়ার দায়িত্বে থাকা সবুজের রুমে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে দেখা গেছে, প্রবেশ কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অনিয়ম করছেন। পরিচিত কিছু মিডিয়া হাউজের ৩-৪ জন করে সাংবাদিকদের প্রবেশ কার্ড দেওয়া হচ্ছে। এমনকি কিছু পত্রিকা আছে যেগুলোর কোন পাবলিক পরিচিতি বা মার্কেটে যায় না অথচ সেসব হাউজের সাংবাদিকের সাথে বিসিবি কর্তাব্যক্তিদের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে তাদের প্রবেশ কার্ড দেওয়া হচ্ছে।
প্রবেশ কার্ডের দায়িত্বে থাকা সবুজ বলেন, "অ্যাকরিডিয়েশন কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের করার কিছুই নেই। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। একটি সূত্রের খবর, এসিসিতে যে সকল সাংবাদিক অনলাইনে আবেদন ফরম পাঠিয়েছিলেন তাদের মধ্যে প্রায় সব হাউজের কমপক্ষে একজন প্রতিবেদকের জন্য অ্যাকরিডিয়েশন কার্ডের অনুমতিপত্র বিসিবিতে পাঠায় এসিসি। অথচ সবুজ ও বিসিবির কিছু কর্তাব্যক্তি মিলে শুধুমাত্র তাদের সাথে যেসব হাউজের সাংবাদিকদের সম্পর্ক রয়েছে তাদেরই প্রবেশ কার্ড দেওয়া হয়।
এ সবুজের বিরুদ্ধে বিপিএলে সাংবাদিকেদের সাথে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ আছে।
এ নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিক সংবাদও প্রকাশ করেছিল। তারপর থেকে সবুজ তার খোলস পাল্টিয়েছে। এখন সবার সাথে ভালো আচরণ করলেও অভিনব কায়দায় সাংবাদিকদের প্রবেশ কার্ড থেকে বঞ্চিত করছে।
সবুজের কাছে প্রবেশ কার্ড চাইতে গেলে তিনি বলছেন আপনি কোন হাউজের? হাউজের নাম শুনে তার ব্যবহৃত ল্যাপটপে সে হাউজের নাম সার্চ দিয়ে দেখে বলছেন যে তার কার্ড হয়েছে কি হয়নি।
কার্ড না হওয়া একাধিক সাংবাদিক বলেন, এটা সবুজের নয়া কৌশল।
এসিসি থেকে কার্ড হলেও বিসিবিতে এসে সেগুলোর কাট-ছাট করে শর্ট লিস্ট তৈরি করা হয়েছে। সেটায় সাংবাদিকদের দেখানো হচ্ছে। ফলে কার্ড না হওয়ার পুরো দায়টায় পড়ছে এশিয়া ক্রিকেট কাউন্সিল কর্তৃপক্ষের ঘাঁড়ে।
প্রবেশ কার্ড না পাওয়া একাধিক সাংবাদিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা বিসিবির কর্তাব্যক্তিদের সাথে লিঁয়াজো করে চলেন তাদেরই শুধুমাত্র অ্যাকরিডিয়েশন কার্ড হয়। অনেকে ভুয়া সাংবাদিক রয়েছে যাদের অন্য সময় বিসিবির বারান্দায় কখনো দেখা যায় না অথচ বড় বড় টুর্ণামেন্টের সময় ঠিকই তারা প্রবেশ কার্ড পায়।
অনেকে আবার প্রশ্ন করেন, শনিবার রাতের আঁধারে অনেক ভুয়া সাংবাদিকের প্রবেশ কার্ড হবে। আর এর সাথে বিসিবির অনেক কর্তাব্যক্তিও জড়িত বলে জানান তারা।
দেশে জাতীয় প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক্স ও অনলাইন পত্রিকা মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১শত ৫০ টির মতো হবে। প্রতিটি হাউজে যদি একজন করে ফটোগ্রাফার ও রিপোর্টারকে প্রবেশ কার্ড দেওয়া হয় তাহলে সর্বোচ্চ ৩শত কার্ডের প্রয়োজন। অথচ বিসিবির প্রেস গ্যালারিতে সাংবাদিকদের ধারণ ক্ষমতা ৪৫০ জন।
তাহলে বাকি ১শত ৫০টি প্রবেশ কার্ড যায় কোথায় এ প্রশ্নটিও দেখা দিয়েছে অনেকের মনে।
এদিকে রোববার দুপুর ২টায় পাকিস্তান-বাংলাদেশের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে উদ্বোধন হতে যাওয়া এশিয়া কাপের স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি।
আয়োজক কর্তৃপক্ষ বলছেন শনিবারের মধ্যেই পুরো স্টেডিয়ামের সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে।
ইনিউজবিডি২৪ডটকম
ইনিউজ/এসইউ/আরএইচ/২১.০০ঘ. ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।