কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! অজস্র গাছপালা দিয়ে ঢাকা সুন্দর একটি পার্ক। সুন্দর একটি জামা পরে আনমনে বাদাম চিবুচ্ছে সুদর্শন এক ছেলে।
অজস্র পাখির কলতান। বিশাল বটবৃক্ষের নিচে বিস্তৃত ছায়া। শুকনো পাতায় ঢেকে গেছে রাস্তা।
পরিবেশটাই মন ভালো করে দেয়ার মত।
কিন্তু অনেকেই জানে না, সৌন্দর্য দেখে প্রতারিত হতে নেই।
অনেক সৌন্দর্যই অন্তঃসারশূন্য।
সুদর্শন ছেলেটির মন ভালো নেই।
ছেলেটির নাম তারেক।
ঢাকা ভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছে। এম এ পাশ করে সবে চাকরিতে ঢুকেছে। ওদিকে বিসিএস এর জন্যও পড়াশোনা করছে।
কিন্তু তার মন ভালো নেই কেন?
তার কি কেউ মারা গেছে?
কেউ কি তাকে ছ্যাঁকা দিয়েছে?
তার কি মোবাইল হারিয়ে গেছে?
আসলে কোনটাই না। তারেক আসলে তার চাকরিতে সন্তুষ্ট নয়।
সারাদিন গাধার মত খাটা তার অসহ্য লাগে।
সবচেয়ে বড় কথা যেটা, তা হল, এ চাকরিতে তার উদ্দাম কল্পনাশক্তি খাটানোর কোন সুযোগ নেই।
সারাদিন হিসাব আর হিসাব।
উফ, আর পারা যায় না।
তারেকের স্বভাব হচ্ছে তার মনে কোন কিছু একটা এলেই সে তা লিখে ফেলে।
ছোটবেলা থেকে সে প্রচুর বই পড়ে। তাই লেখার হাতও তার খুব একটা খারাপ না।
প্রথমদিকে সে তার গল্পগুলো কাউকে দেখাত না। বিভিন্ন খাতায় বিভিন্ন জায়গায় তার গল্পগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকত। একদিন তার বাসায় পুরনো খাতাপত্র বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে, হঠাৎ সেই জঞ্জালের মধ্যে একটি আনাড়ি হাতের লেখা দেখতে পেল তারেক।
তুলে নিয়ে সে লেখাটার প্রথম পৃষ্ঠা পড়ে ফেলল। দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় পৌঁছে সে বুঝতে পারল, এ আসলে তারই লেখা।
তখনই তারেকের মনে হল, লেখাগুলি হারিয়ে যেতে দেয়া যায় না। সে যেখানে যত খাতা আছে সব উল্টেপাল্টে খুঁজে খুঁজে তার অনেকগুলো গল্প বের করল। হিসাব করে দেখল মোট ২৭টা গল্প হয়।
এবার প্রকাশের পালা।
কিন্তু তারেকের এরকম কারও সাথে যোগাযোগ ছিল না। সে তার বন্ধুদের সাথে পরামর্শ করল। বন্ধুরা তাকে উৎসাহিত করল। এক বন্ধুর কী এক ধরণের মামা একটা প্রকাশনা সংস্থার সাথে জড়িত, সেই বন্ধু তারেককে বলল তার দু’-তিনটা গল্প ফ্রেশ করে লিখে দিতে।
কোন দু’টো গল্প দেয়া যায়, এটা তারেক কিছুতেই ভেবে পেল না। সে প্রতিটি গল্প বারবার পড়তে লাগল, তার কাছে প্রতিটি গল্পকেই আনাড়ি ও অসম্পূর্ণ মনে হল।
অবশেষে দু’টো গল্প সে সিলেক্ট করল। নতুন কাগজে ফ্রেশ কপি করল। বন্ধুর হাতে তুলে দিল সে গল্পগুলো।
পরের দিন বন্ধু এসে তাকে খবর দিল যে গল্প ভালো হয়েছে, প্রকাশক কোন একটা গল্প সংকলনে এই গল্প দু’টো ঢুকিয়ে দেবেন। সার্ভিস চার্জ হিসেবে পাঁচশ টাকা চাইল বন্ধু।
কষ্ট করে হলেও পাঁচশ টাকা তারেক অবলীলায় তুলে দিল বন্ধুর হাতে।
সে রাতে বাসায় যাবার পর উত্তেজনায় তার ঘুম হচ্ছিল না। সেদু’টো গল্পের ম্যানুস্ক্রিপট উল্টেপাল্টে দেখছিল সে।
পড়তে পড়তে তার মনে হল, একটা গল্পে বাংলাদেশের বড়লোকদের লক্ষ্য করে খুব আক্রমণাত্মক কথা লেখা হয়েছে।
আরেকটা গল্পে হিন্দু- মুসলমানদের ধর্মান্ধতাকে সরাসরি ন্যাংটা করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
শোয়া থেকে উঠে বসল তারেক। বুক ধড়ফড় করছে, তীব্র পানির পিপাসা পাচ্ছে। দৌড়ে গিয়ে ফ্রিজ থেকে পানি বের করে ঢকঢক করে খেয়ে নিল সে।
তারপর বাথরুমে গিয়ে বেসিনে দাঁড়িয়ে মাথায় পানি ঢালতে লাগল অনবরত।
এই লেখাগুলো যখন প্রকাশিত হবে, নিশ্চয়ই অনেক মানুষ, অনেক তরুণ-তরুণী এগুলো পড়বে। নিশ্চয়ই তার মনের অন্ধকার দিকগুলো দেখতে পেয়ে তারা অবাক হয়ে যাবে। নিশ্চয়ই স্পর্শকাতর বিষয়ে লেখার জন্য তাকে হতে হবে জনরোষের শিকার।
সে রাতারাতি ভিলেন হয়ে যাবে!
শুধু তাই নয়, তার বন্ধুরা, তার মা-বাবা-ভাই-বোন আত্মীয় যারা যারা আছে, সবাই লেখাগুলো পড়বে।
পড়ে নিশ্চয়ই খুব চমকে উঠবে, এত বাজে জিনিস যে মানুষ লিখতে পারে তাকে নিশ্চয়ই তারা ঘৃণা করা শুরু করবে।
কোন তরুণী হয়তো গল্পগুলো পড়ে তার বান্ধবীকে বলবে, ‘দ্যাখ দ্যাখ, কী সব লিখেছে...নিশ্চয়ই নতুন লেখক, নাম কুড়ানোর শখ হয়েছে...তাই এসব বাজে জিনিস লিখেছে...’
হয়ত কোন পত্রিকায় তার গল্পের সমালোচনা ছাপা হবে। বলা হবে, ‘এই লেখক তরুণ সমাজকে অপমান করেছেন। লেখনীশক্তির অপব্যবহার করে আনাড়ি হাতে নগ্নভাবে মানুষকে আক্রমণ করেছেন। এটা তার সাময়িক যশলাভের অপকৌশল বৈকি আর কিছুই নয়’।
...
হয়তো কোন... থাক, আর ভাবতে চায় না তারেক। যন্ত্রণায় তার মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে। ড্রয়ার থেকে দু’টো ঘুমের ওষুধ নিয়ে ঢকঢক করে গিলে ফেলল সে। তারপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ল।
একটু পরেই ঘুমিয়ে পড়ল সে।
সকালে উঠে প্রথমেই সে দেখা করল তার এককালের বেস্ট ফ্রেন্ড সমরেশ্চন্দ্রের সাথে।
সমরেশকে ব্যাপারটা খুলে বলল সে।
সমরেশ অবশ্য গল্প দু’টো আগে পড়ে নি। তাই প্রিয় বন্ধুর কথায় বিশ্বাস করল সে। দু’জনে মিলে ভাবতে লাগল কী করা যায়।
অবশেষে তারেক একটা বুদ্ধি বের করল।
এখনও যেহেতু লেখা বেরোয় নি, তাই লেখকের নাম পরিবর্তিত হলেও তো কোন সমস্যা নেই। প্রকাশকের ভাগনে সেই বন্ধুর সাথে আবার দেখা করল তারেক।
লেখা যখন বেরুলো, তখন দেখা গেল, লেখকের নামের জায়গায় লেখা-‘সমরেশ্চন্দ্র’।
ব্যাপারটায় বেশ মজা পেয়ে গেল তারেক।
যাক, দু’টো বাজে লেখা তো অন্যের উপর দিয়ে চালানো গেল।
পরে ধীরেসুস্থে ভালো একটা গল্প বের করে নিজের নামে দেয়া যাবে।
যতখানি সমালোচনা আশা করেছিল তারেক ততখানি হল না। মনে হয় নবীন লেখক বলে তার লেখা বেশি লোক গুরুত্ব দিয়ে পড়ে নি, সমালোচনা তো দূরের কথা।
খেপে গেল তারেক।
এবার সে গোটা দশেক গল্প নিয়ে ঐ ভাগনেকে বলল, ‘আমার নিজের একটা বই ছাপাতে হবে’।
ভাগনে মামার সাথে কথা বলে এসে বলল, প্রাথমিকভাবে ত্রিশ হাজার টাকা দিলে তার মামা বই ছাপিয়ে দেবে। বই যদি বিক্রি ভালো হয়, তাহলে রয়্যালটির টাকা থেকেই এই ত্রিশ হাজার টাকা উঠে আসবে।
এ কথা শুনে তারেকের তো মাথায় হাত। এত টাকা সে কোথায় পাবে?
তখন এগিয়ে এলেন দূর সম্পর্কের এক বড় ভাই।
টাকাটা তার হাতে দিয়ে ঐ বড় ভাই বললেন, ছয় মাস টাইম, এর মধ্যে টাকাটা ফেরত চাই। নাহলে কেস করে দেব। নাও, স্ট্যাম্পে সই দাও।
স্ট্যাম্পে সই দিল তারেক।
ব্যবস্থা হয়ে গেল।
সব যখন ঠিকঠাক, তখন আবার পাগলামিতে পেয়ে বসল তাকে। তার লেখা নাকি অপরিপক্ব, বিষয়বস্তু নাকি অশ্লীল। এটা পড়ে নাকি মানুষ হয় চুলায় দিবে, নাহয় ঠোঙ্গাঅলার কাছে বিক্রি করবে...ইত্যাদি ইত্যাদি ।
সমস্যার সমাধান সহজেই হয়ে গেল। ঠিক আগের মত।
বইমেলায় বেরিয়ে গেল নবীন লেখক সমরেশ্চন্দ্রের নতুন বই, গল্পের সংকলন -
‘অন্ধকারে আমি’
দ্বিতীয়া প্রকাশন
মুল্যঃ একশত ষাট টাকা মাত্র।
প্রতিদিন তারেক দ্বিতীয়ার স্টলে যায় ও বইটা তুলে দরদাম করে। তার কথাবার্তা শুনে অনেকেই বইটির দিকে আকৃষ্ট হয়। কিন্তু নবীন লেখকের লেখা বলে দু’ একজন ছাড়া কেউ সে বই নেয় না।
মেলার শেষদিন পর্যন্ত তারেক একই কাজ করল।
মানুষের মাঝে আগ্রহ আস্তে আস্তে বেড়েছে, কিন্তু তবু তা আশানুরূপ নয়। মাত্র পনের কপি বিক্রি হল এ ক’দিনে।
তবু ভেঙ্গে পড়ল না তারেক। এবার সে নতুন একটা পন্থা অবলম্বন করল।
তার নিজের লেখার যত দোষ ত্রুটি, ভাষাগত বা ব্যাকরণগত যত সমস্যা ও অভ্যাস, লেখার ধাঁচ, প্রকাশভঙ্গি - এগুলো তার নিজের চেয়ে ভালো আর কে জানে? এসব নিয়েই বিশাল এক প্রবন্ধ লিখে বসল তারেক।
সমালোচনাটি পাঠিয়ে দিল একটি জনপ্রিয় দৈনিকে।
ছাপা হবে কি হবে না, এই নিয়ে টেনশনে পড়ে গিয়েছিল তারেক।
শীঘ্রই তার সন্দেহের অবসান হল।
ছাপা হয়েছে লেখাটি।
দেশের সব অঞ্চলের ছেলেবুড়োদের মধ্যে যারা নিয়মিত কলামপাঠক তারা সমালোচনাটি পড়ে পুরো হতবাক হয়ে গেল।
বিশেষ করে প্রতিটি বাক্যের চুলচেরা বিশ্লেষণ, ঘটনাবিন্যাসের বুদ্ধিদীপ্ত সমালোচনা-আলোচনা, এমনকি লেখার সময় লেখকের মানসিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার নিখুঁত বর্ণনা পড়ে তারা যারপরনাই চমৎকৃত হল। একদম নতুন ধরণের সমালোচনাটি বিদগ্ধ পাঠকসমাজের কাছে বিপুলভাবে সমাদৃত হল।
উদ্দেশ্য সফল হল তারেকের।
স্পর্শকাতর বিষয় আছে জানার পরই হয়তো মানুষ আকৃষ্ট হল ‘অন্ধকারে আমি’র প্রতি। জেলায় জেলায় দোকানে দোকানে খোঁজা শুরু হল বইটা।
দোকানীরাও ডজন ডজন কপি অর্ডার দিয়ে আনতে লাগল। দেশের তরুনসমাজের কাছে হঠাৎই নায়ক হয়ে উঠলেন লেখক ‘সমরেশ্চন্দ্র’। পত্রপত্রিকা ভরে উঠল ‘অন্ধকারে আমি’ র প্রশংসায়।
ত্রিশ হাজারের অনেক বেশি টাকা উঠে গেল তারেকের।
এবার জমে উঠল আসল নাটক।
খ্যাতির লোভে পড়ে গেল আসল সমরেশ্চন্দ্র।
তারেকের প্রস্তাব ছিল, সমরেশ্চন্দ্র নামেই সে অন্য গল্পগুলো প্রকাশ করবে আর তারেক নামে সমালোচনা লিখবে। কিন্তু, চোখের সামনে, হোক সে বেস্ট ফ্রেন্ড, এতগুলো টাকা আমার নাম মেরে আরেকজন নিয়ে যাবে-এটা মানতে পারল না সমরেশ্চন্দ্র।
সে তারেককে বলে দিল, এরপর থেকে কোনকিছু তার নামে প্রকাশ করা যাবে না, তারেকের নিজের নামে প্রকাশ করতে হবে। তার নামে প্রকাশ করলে রয়্যালটির ম্যাক্সিমাম টাকা তাকেই দিতে হবে।
শুধু তাই নয়, অন্ধকারে আমি-র রয়্যালটির টাকার একটা ভাগও সে দাবী করল।
তারেক তো পড়ল মহা ফাঁপরে।
সমরেশ্চন্দ্রের দাবী কোনভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, ‘অন্ধকারে আমি’র হিট হবার কারণে লোকজন লেখক হিসেবে ‘সমরেশ্চন্দ্র’কেই Boss মেনে নিয়েছে। এখন যদি অন্য নামে আরেকটা বই বের হয়, তবে কেউ তো ওদিকে ফিরেও তাকাবে না, কারণ তারা তো আর জানে না যে এটাও সেই ‘সমরেশ্চন্দ্রে’র লেখা।
যদি খুব ফলাও করে প্রচার করা হয় যে ‘সমরেশ্চন্দ্র’ আসলে তারেক, তাহলেও অনেক সমস্যা। অনেকে হয়তো ব্যাপারটা বিশ্বাস করবে না। অনেকে হয়তো ব্যাপারটাকে ‘নতুন লেখকের’ খ্যাতি বাড়াবার ঢং হিসেবে নিবে। অনেকেই আবার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। তাছাড়া, সমালোচক হিসেবে তার ‘তারেক’ নামই তো পত্রিকায় ছেপেছে।
এবার যদি বইয়ে তারেক নামটি আসে তবে পাঠক বুঝতে পারবে যে এই তারেকই নিজের বইয়ের কাটতি বাড়াবার এইসব নাটক করেছে। অন্যের নামে বই লিখে নিজে সমালোচনা করে লোকের আগ্রহ বাড়িয়েছে।
তাছাড়া, ধর্ম নিয়ে সে তিনচারটা গল্পে খুব বাজে কথা লিখেছে। সরাসরি মূর্তিপূজা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দেবদেবীদের অশ্লীলভাষায় গালিগালাজ করেছে।
একজন হিন্দু যখন হিন্দুধর্ম নিয়ে খারাপ কথা বলে, তখন ভাবা হয় সে প্রগতিশীল নাস্তিক, আর সাহিত্যে নাস্তিক্যের স্থান অনেক উপরে। নাস্তিক লেখকদের নিয়ে পাঠকেরা অহরহ নাচানাচি করে। অথচ একজন মুসলমান যখন হিন্দুধর্ম নিয়ে বাজে কথা বলে, তখন মনে করা হয় সে গোঁড়া মুসলিম, জঙ্গি, উগ্রপন্থী, সাম্প্রদায়িক...ইত্যাদি এবং পাঠকরা তাকে সংকীর্ণমনা মনে করে তাকে পরিত্যাগ করে।
সুতরাং, সমরেশ্চন্দ্রের দাবী মেনে নেওয়া যায় না। কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
সমরেশ্চন্দ্র বলেছিল, তার দাবী মেনে না নিলে আজই পত্রিকায় সবকিছু প্রকাশ করে দেবে। কী করবে তারেক?
মেনে নেবে সমরেশ্চন্দ্রের দাবী?
পার্কে বসে ভাবছে তারেক।
সে আগে বুঝতে পারেনি যে তার গল্প এরকম সমাদৃত হবে। সবসময়ই তার ভয় ছিল যে পাঠকেরা তাকে গালিগালাজ করবে। অথচ পাঠকেরা এভাবে তার গল্পকে হৃদয়ে স্থান দেবে এটা তার কল্পনাতে কখনই আসেনি।
ধুর, কী দরকার ছিল আরেকজনের নাম দিয়ে টেস্ট করতে? সে এত ভালো লেখক অথচ এটুকু রিস্ক নিতে পারল না? বড় বড় লেখকেরা কি মাঝে মাঝে দু’ একটা বাজে বই লেখেন না? তারা কি অন্যের নামে আগে চালিয়ে দেখেন বইটা কেমন চলে?
ধুর!...বাদামের ঠোঙ্গাটা ছুঁড়ে ফেলে দিল তারেক।
পরবর্তী বইমেলার কথা কল্পনা করতে লাগল সে। সব দৃশ্য যেন সে স্পষ্ট দেখতে যাচ্ছে। অজস্র পাঠক পাঠিকা, তারা ‘অন্ধকারে আমি’ হাতে তার দিকেই এগিয়ে আসছে। প্রশ্নে প্রশ্নে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে সে।
‘কেন এই ছলনা, কেন এই প্রতারণা’ রবে সরব হয়েছে পুরো বইমেলা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ চলে এসেছে, অথচ জনস্রোতে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না কেউই। বন্যার জলের মতো মানুষ বাড়ছে। আস্তে আস্তে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে তারেক। তার পিঠ ঠেকে গেছে স্টলের পেছনের তাকে।
...
হঠাৎ তারেকের মুখের কোণে মৃদু হাসি দেখা গেল।
নামটাই তো শুধু সমস্যা, না?
সমরেশ্চন্দ্র। হুমম... সমরেশ্চন্দ্র।
তারেকের মাথায় ঘুরতে লাগল নামটা।
****************************************
পরদিনই এফিডেভিট করে তারেক তার পিতৃপ্রদত্ত নাম পরিবর্তন করে রাখল-‘সমরেশ্চন্দ্র’
(সমাপ্ত)
লেখকের কথাঃ গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি আমাদের মেডিকেল কলেজের এক্স ক্যাডেটস অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশনা 'অনুরণন' এর জন্য দুটো গল্প লিখেছিলাম।
সেইগুলো সাবমিট করার সময় আমি যে ধরণের ফিলিংসের সম্মুখীন হয়েছিলাম তারই পরিপ্রেক্ষিতে পরে এই গল্পটি লেখা হয়। উল্লেখ্য, আমার যে ক্যাডেট ফ্রেন্ড গল্পগুলো জমা নিয়েছিল তার নাম সমরেশ দাস। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।