আমি সত্য জানতে চাই
বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব শাহ কুলি খান মির্জা মোহাম্মদ হায়বৎ জং বাহাদুর সিরাজউদদৌলা বা মির্জা মুহাম্মাদ সিরাজউদদৌলা। একদা বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার আকাশ বাতাস কেঁপে উঠতো যাঁর হুংকারে, ভাগিরথীর তীরে মুর্শিদাবাদ নগরে আলোকোজ্জ্বল মহল সর্বদা সরগরম থাকতো যে দাপুটে নবাবের পদচারণায় সুবে বাংলার সেই শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদদৌলার মৃত্যুদিন আজ। ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন পলাশীর প্রান্তরে সিরাজের পরাজয় এবং ২রা জুলাই ঘাতক মুহাম্মদী বেগ এর ছুরিকাঘাতে তাঁর প্রাণ হারানোর মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়ে যায় বহুকালের জন্য। স্বাধীন বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদদৌলার মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
সিরাজউদদৌলার জন্ম তারিখ বা সাল নিয়ে সামান্য ভেদাভেদ আছে।
তবে অধিক গ্রহণযোগ্য মত হলো ১৭৩২ সালে তার জন্ম। নবাব সিরাজদৌল্লা ছিলেন বাংলার নবাব আলীবর্দী খান-এর নাতি। ইরান থেকে ভাগ্য অন্বেষণে বাংলায় আসা নবাব আলীবর্দী খানের কোন ছেলে সন্তান ছিল না। তার ছিল ৩ কন্যা। ঘসেটি বেগম, ময়মুনা বেগম ও আমেনা বেগম।
আলীবর্দী খানের বড় ভাই হাজী মির্জা আহমেদের ছিল ৩ পুত্র। মুহাম্মদ রেজা, মুহাম্মদ সাঈদ ও মুহাম্মদ জয়েনউদ্দিন। আলীবর্দী খানের ৩ কন্যাকে বিয়ে দেন তার ভাই হাজী আহমেদের ৩ পুত্রের সঙ্গে। মুহাম্মদ রেজার সঙ্গে বিয়ে দেন ঘসেটি বেগমের। মুহাম্মদ সাঈদের সঙ্গে ময়মুনা বেগমের এবং আমেনা বেগমের বিয়ে দেন জয়েনউদ্দিনের সঙ্গে।
জয়েনউদ্দিন ও আমেনা বেগমের ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে। তাদের বড় সন্তান নবাব সিরাজউদদৌলা, অপর ২ ছেলে হচ্ছেন ইকরামউদদৌলা ও মির্জা মেহেদি। ২ কন্যা আসমাতুন নেসা ও খায়রুন নেসা। আলীবর্দী খাঁ যখন পাটনার শাসনভার লাভ করেন, তখন তাঁর তৃতীয়া কন্যা আমেনা বেগমের গর্ভে মির্জা মোহাম্মদ (সিরাজ উদ দৌলা) -এর জন্ম হয়। এ কারণে তিনি সিরাজের জন্মকে সৌভাগ্যের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করে আনন্দের আতিশয্যে নবজাতককে পোষ্যপুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন।
সিরাজ তার নানার কাছে ছিল খুবই আদরের, যেহেতু তার কোনো পুত্র ছিলনা। তিনি মাতামহের স্নেহ-ভালোবাসায় বড় হতে থাকেন। সিরাজউদদৌলা বিয়ে করেন ইরাজ খানের কন্যা লুৎফুননিসাকে। ইরাজ খানের পূর্বপুরুষরা ছিলেন মোঘল দরবারের কর্মকর্তা।
(নবাব আলীবর্দী খান)
১৭৪৬ সালে আলীবর্দী খান মারাঠাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গেল কিশোর সিরাজ তার সাথী হন।
আলিবর্দি সিরাজদ্দৌলাকে বালক বয়সেই পাটনার শাসনকর্তা নিযুক্ত করেছিলেন। তাঁর বয়স অল্প ছিল বলে রাজা জানকীরামকে রাজপ্রতিনিধি নিযুক্ত করা হয়। ইতিহাসে এই ঘটনাকে সিরাজদ্দৌলার যৌবরাজ্যাভিষেক বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই সময়ে সিরাজদ্দৌলার বয়স ছিল মাত্র সতেরো বছর। তবে তাঁকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মনোনয়ন করার ঘটনা তাঁর আত্নীয়বর্গের অনেকেই মেনে নিতে পারেনি।
অনেকেই তাঁর বিরোধিতা শুরু করেন। এদের মধ্যে ছিলেন আলিবর্দি খাঁর বড় মেয়ে ঘসেটি বেগম এবং তার স্বামী নোয়াজেশ মোহাম্মদ। ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল নবাবা আলিবর্দি খাঁ মৃত্যুবরণ করলে ঐদিনই শাহ কুলি খান মির্জা মোহাম্মদ হায়বৎ জং বাহাদুর (সিরাজদ্দৌলা) বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার সিংহাসনে আরোহণ করেন।
সিরাজদ্দৌলা যখন সিংহাসনে আরোহণ করেন, তখন থেকেই কলকাতায় ইংরেজদের প্রতাপ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। তিনি তাদেরকে দমন করার জন্য কাশিমবাজারের কুঠিয়াল ওয়াটসনকে কলকাতার দুর্গপ্রাচীর ভেঙে ফেলতে ও ভবিষ্যতে নবাবের পূর্বানুমতি ছাড়া এ ধরণের কাজ না করার নির্দেশ দেন।
কিন্তু আদেশ তাঁর কাজ বহাল রাখলেন। সিরাজদ্দৌলা তখন বুঝতে পারলেন গৃহবিবাদের সুযোগ নিয়ে ইংরেজরা উদ্ধত স্বভাবের পরিচয় দিচ্ছে। সুতরাং প্রথমেই ঘসেটি বেগমের চক্রান্ত চূর্ণ করার জন্য তিনি সচেষ্ট হন। তিনি মতিঝিল প্রাসাদ অধিকার করে ঘসেটি বেগমকে মুর্শিদাবাদ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন। মতিঝিল অধিকার করে নবাব কাশিমবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
১৭৫৬ সালের ২৭ মে তাঁর সেনাবাহিনী কাশিমবাজার দুর্গ অবরোধ করেন। তিনি কাশিমবাজার দুর্গের কুঠিয়াল ওয়াটসনকে দরবারে হাজির হয়ে তাঁর নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করার জন্য অঙ্গীকারপত্র লিখতে বাধ্য করেন। একই বছর ১৮ জুন সিরাজদ্দৌলা কলকাতা আক্রমণ করেন। তুমুল যুদ্ধ হওয়ার পর ২০ জুন কলকাতা দুর্গ সিরাজের দখলে আসে। তিনি দুর্গ প্রবেশ করে এবং দরবারে উপবেশন করে উমিচাঁদ ও কৃষ্ণবল্লভকে সেখানে উপস্থিত হওয়ার আদেশ দেন।
এরপর সেনাপতি মানিকচাঁদের হাতে দুর্গের শাসনভার ছেড়ে দিয়ে সিরাজদ্দৌলা রাজধানীতে ফিরে আসেন। ১২ জুলাই তিনি রাজধানীতে প্রত্যাবর্তন করেন।
দিল্লীর বাদশা পূর্ণিয়ার নবাব শওকত জঙ্গকে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাবি সনদ পাঠালেন। শওকত নবাব সিরাজদ্দৌলার বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রার আয়োজন করেন। অপরদিকে মাদ্রাজের ইংরেজ দরবার কর্নেল রবার্ট ক্লাইভকে প্রধান সেনাপতি করে কলকাতা পুনরুদ্ধারের জন্য পাঠায়।
সিরাজদ্দৌলাও শওকত জঙ্গকে প্রতিরোধ করার জন্য রওনা হন। পথিমধ্যে নবাবগঞ্জ নামক স্থানে উভয়পক্ষ মুখোমুখি যুদ্ধে লিপ্ত হয়। যুদ্ধে শওকত নিহত হন। সিরাজদ্দৌলা মোহনলালের হাতে পূর্ণিয়ার শাসনভার অর্পণ করে রাজধানীতে ফিরে আসেন। ইতিমধ্যে ক্লাইভ ও ওয়াটসন প্রায় বিনাযুদ্ধে তারা কলকাতা দুর্গ জয় করে নেন।
এর আগে ক্লাইভ ও ওয়াটসন কলকাতায় এসে সিরাজদ্দৌলার কাছে সন্ধির প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন এবং সিরাজদ্দৌলা তাতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু ইংরেজরা শর্ত ভংগ করে কলকাতা আক্রমণ করে। সিরাজদ্দৌলা তাঁর মন্ত্রীদের কুচক্রের বিষয়ে শংকিত হয়ে পড়েন এবং এ কারণে ইংরেজদের সাথে একটি সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চেষ্টা চালাতে থাকেন। তাই ইংরেজদের সকল দাবিতে রাজি হয়ে তিনি ১৭৫৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ইংরেজদের সাথে একটি সন্ধিপত্রে স্বাক্ষর করেন। ইতিহাসে এই সন্ধি 'আলিনগরের সন্ধি' নামে পরিচিত।
আলিনগরের (কলকাতা) সন্ধির প্রতিশ্রুতি পালনে নবাবকে যথেষ্ট ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছিল।
সব ধরণের গোলমাল মোটামুটি শান্ত হওয়ার পর সিরাজদ্দৌলা সেনাপতিদের অপকর্মের বিচার শুরু করেন। মানিকচন্দ্রকে কারাবন্দী করা হয়। এটা দেখে রাজবল্লভ, জগৎশেঠ ও মিরজাফর সবাই ভীত হয়ে গেলেন। স্বার্থ রক্ষার জন্য জগৎশেঠের মন্ত্রণাভবনে মিলিত হয়ে তারা ইংরেজদের সাহায্যে সিংহাসনচ্যুত করে মিরজাফরকে সিংহাসনে বসাবার চক্রান্ত শুরু করল।
ইয়ার লতিফ গোপনে ওয়াটসনের সঙ্গে মিলিত হয়ে কুমন্ত্রণা দিলেন যে, সিরাজদ্দৌলা খুব শীঘ্রই ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করবেন। আর এই কারণেই তিনি পলাশীতে শিবির স্থাপন করেছেন। ক্লাইভ এরপর তার সেনাবাহিনীর অর্ধেক লুকিয়ে রেখে বাকীদের নিয়ে কলকাতায় পৌঁছালেন। আর নবাবকে পত্র লিখলেনঃ "আমরা সেনাদল উঠিয়ে আনলাম আর আপনি পলাশীতে ছাউনি গেড়ে বসেছেন? " সিরাজদ্দৌলা সরল বিশ্বাসেই মিরজাফরকে পলাশী থেকে ছাউনি উঠিয়ে মুর্শিদাবাদ চলে যাবার আদেশ দিলেন। মিরজাফর রাজধানীতে পৌঁছামাত্রই স্ক্রাফটন তার সঙ্গে মিলিত হয়ে গোপন সন্ধির খসড়া লিখে নিলেন।
১৭ মে কলকাতার ইংরেজ দরবারে এই গোপন সন্ধিপত্রের খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়। মিরজাফরের স্বাক্ষরের জন্য এই গোপন সন্ধিপত্র ১০ জুন তার কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু এই গুপ্ত বৈঠক গোপন থাকলো না। ক্লাইভ যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করলেন। এদিকে গোপন সন্ধিপত্রের সংবাদ জানতে পেরে সিরাজদ্দৌলা মিরজাফরকে বন্দি করার ব্যবস্থা নিলেন।
১৭৫৭ খৃস্টাব্দের ১২ জুন কলকাতার ইংরেজ সৈন্যরা চন্দননগরের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলিত হয়। সেখানে দুর্গ রক্ষার জন্য অল্প কছু সৈন্য রেখে তারা ১৩ জুন অবশিষ্ট সৈন্য নিয়ে যুদ্ধযাত্রা করে। কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদের পথে হুগলি, কাটোয়ার দুর্গ, অগ্রদ্বীপ ও পলাশীতে নবাবের সৈন্য থাকা সত্ত্বেও তারা কেউ ইংরেজদের পথ রোধ করল না। নবাব বুঝতে পারলেন, সেনাপতিরাও এই ষড়যন্ত্রে শামিল। বিদ্রোহের আভাস পেয়ে সিরাজ মিরজাফরকে বন্দি করার চিন্তা বাদ দিলেন।
তিনি মিরজাফরকে ক্ষমা করে তাকে শপথ নিতে বললেন। মিরজাফর পবিত্র কুরআন স্পর্শ করে অঙ্গীকার করলেন যে, তিনি শরীরের একবিন্দু রক্ত থাকতেও বাংলার স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন হতে দেবেন না। গৃহবিবাদের মীমাংসা করে তিনি রায়দুর্লভ, ইয়ার লতিফ, মিরজাফর, মিরমদন, মোহনলাল ও ফরাসি সেনাপতি সিনফ্রেঁকে সৈন্য চালানোর দায়িত্ব দিয়ে তাদের সঙ্গে যুদ্ধযাত্রা শুরু করলেন।
(পলাশীর প্রান্তর)
২৩ জুন সকাল থেকেই পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজরা মুখোমুখি যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো। ইংরেজরা 'লক্ষবাগ' নামক আমবাগানে সৈন্য সমাবেশ করল।
বেলা আটটার সময় হঠাৎ করেই মিরমদন ইংরেজবাহিনীকে আক্রমণ করেন। তাঁর প্রবল আক্রমণে টিকতে না পেরে ক্লাইভ তার সেনাবাহিনী নিয়ে আমবাগানে আশ্রয় নেন। ক্লাইভ কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েন। মিরমদন ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছিলেন। কিন্তু মিরজাফর, ইয়ার লতিফ, রায়দুর্লভ যেখানে সৈন্যসমাবেশ করেছিলেন সেখানেই নিস্পৃহভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেন।
তাদের সামান্য সহায়তা পেলেও হয়ত মিরমদন ইংরেজদের পরাজয় বরণ করতে বাধ্য করতে পারতেন। দুপুরের দিকে হঠাৎ বৃষ্টি নামলে সিরাজদ্দৌলার গোলা বারুদ ভিজে যায়। তবুও সাহসী মিরমদন ইংরেজদের সাথে লড়াই চালিয়ে যেতে লাগলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গোলার আঘাতে মিরমদন মৃত্যুবরণ করেন। এ সময় মিরজাফর আবারো বিশ্বাসঘাতকতা করে তার সৈন্যবাহিনীকে শিবিরে ফেরার নির্দেশ দেন।
এই সুযোগ নিয়ে ইংরেজরা নবাবকে আক্রমণ করে। যুদ্ধ বিকেল পাঁচটায় শেষ হয় এবং নবাবের ছাউনি ইংরেজদের অধিকারে আসে। পরাজয় বরণ করতে হয় নবাব সিরাজউদদৌলাকে অস্তমিত হয় স্বাধীন বাংলার শেষ সূর্য।
(পলাশীর যুদ্ধের পর ক্লাইভের সাথে মীরজাফর দেখা করছেন, শিল্পী ফ্রান্সিস হেম্যানের আঁকা ছবি)
২৩শে জুন পলাশীর প্রান্তরে পরাজয়ের পর ২৫শে জুন নবাব সিরাজউদদৌলা স্ত্রী লুৎফুননিসা ও শিশুকন্যা জহুরা বেগমকে সঙ্গে নিয়ে আবার সৈন্য সংগ্রহ করে বাংলা উদ্ধার করতে বিহারের উদ্দেশে যাত্রা করেন। পথিমধ্যে ভগবানগোলায় ক্ষুধার্ত নবাব পরিবার দানা শাহ নামের এক লোকের বাড়িতে খাদ্য গ্রহণ কালে ওই ব্যক্তি মুর্শিদাবাদে খবর দিয়ে ধরিয়ে দেন নবাব সিরাজউদদৌলাকে।
সেখানে গিয়ে মীর জাফরের ছেলে মিরন গ্রেপ্তার করে মুর্শিদাবাদে নিয়ে আসেন নবাবকে। বন্দি অবস্থায় ২রা জুলাই মোহাম্মদী বেগ হত্যা করে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদদৌলাকে। নবাবকে হত্যার পর তার স্ত্রী শিশুকন্যা সহ নানা আলীবর্দী খানের স্ত্রী আশরাফুন নেসাকে নৌকায় করে ভাগীরথীর তীর থেকে বুড়িগঙ্গার পাড়ে জিঞ্জিরার একটি প্রাসাদে তাদের আটকে রাখা হয় ৮ বছর। সেখান থেকে আবার তাদের মুর্শিদাবাদে নিয়ে মুক্ত করা হয়। সিরাজের মৃত্যুর দীর্ঘ ৩৪ বছর পর ১৭৯০ খৃস্টাব্দে লুৎফুন্নেছা ইন্তেকাল করেন।
আর ঢাকার জিঞ্জিরা প্রাসাদে সিরাজের মা আমেনা বেগম এবং খালা ঘষেটি বেগম দীর্ঘদিন বন্দী থাকার পর তাদের পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় ঢাকা শহরে নিভৃতে নবাব সিরাজউদদৌলার বংশধরেরা এখনো এক ধরনের অজানা আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করছেন। সম্ভবত সে আতঙ্ক থেকেই অন্তর্মুখী প্রচারবিমুখ হয়ে আছেন তারা। সমাজে নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে রাখেন, মিডিয়াকে এড়িয়ে চলেন। অথচ ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মীর জাফরের বংশধররা স্ব-স্ব পরিচয় দিয়ে দাপটে আছেন।
জানা গেছে, তারা আছেন বাংলাদেশেও। এভাবেই যুগে যুগে সত্যের উপর অসত্য রাজত্ব করে আসছে। নবাব পরিবারও এর ব্যতিক্রম নয়। যেমন আছে আমাদের দেশের যুদ্ধাপরাধী মানবতা বিরোধী রাজকার গং। আসুন আমরা এদের প্রতিহত করে আমাদের আগামী প্রজন্মে জন্য নীরাপদ আবাস নিশ্চিত করি।
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদৌলার মৃত্যুদিনে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।
সূত্রঃ বিশ্বতারিখ, মাহবুবুল হক
ছবিঃ ইণ্টরনেটের সৌজন্যে ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।