এসো ভাই , তোলো হাই , শুয়ে পড়ো চিত, অনিশ্চিত এ সংসারে এ কথা নিশ্চিত - জগতে সকলই মিথ্যা , সব মায়াময়, স্বপ্ন শুধু সত্য আর সত্য কিছু নয়। ০১.
সবাই দেখি খাতা জমা দিয়া তাড়াতাড়ি বাহির হইয়া যাইতাছে। এতদিনে কি তাহলে শাহবাগের পরীক্ষার্থীদের অংক পরীক্ষা শেষ হইতে চলিল? আহারে পরীক্ষার একদম শেষ মূহুর্তে আইস্যা কয়েকজন মেধাবী পরীক্ষার্থী অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে এক্সপেইল হইল। ইতোপূর্বে অসদুপায় অবলম্বন করিয়া পরীক্ষা চলাকালীন একজন পরীক্ষার্থী মারা যাওয়ার কারণে পরীক্ষকগণ তাহাকে এক্সপেইল না করিয়া বীরের মর্যাদা দিয়াছেন। আমরা জানিতে পারিলাম পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করিয়া ধরা পড়িবার পূর্বে মারা গেলে বীর উপাধি পাওয়া যায়, আর না মরিয়া ধরা পড়িলে এক্সপেইল নিশ্চিত।
অবশ্য এক্সপেইল হইলেও তাহাদের পরীক্ষার খাতা বাতিল হইবে কিনা আমরা নিশ্চিত নই।
০২.
মিডিয়ায় শাহবাগের পরীক্ষার্থীদের দীর্ঘ সময়ব্যাপী অংক পরীক্ষার রমরমা লাইভ কাভারেজ দেইখ্যা হেফাজতে এসলামের হুজুরেরাও বুড়ো বয়সে ঢাকায় আইসা পরীক্ষা দেওয়ার খায়েশ প্রকাশ করিয়াছে। রেজিস্ট্রেশন এবং ফর্ম ফিলআপ শেষে মূল পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার পর শাহরিয়ার কবির নামক একজন স্ব-ঘোষিত পরীক্ষক ঘোষণা করিলেন- যেহেতু হেফাজতে এসলামের হুজুরদের ২০০ মার্কের বাংলা এবং ইংরেজী বিষয় নাই, তাই তাহারা অংক পরীক্ষা দেয়ার অযোগ্য। যদি হেফাজতের কোন পরীক্ষার্থী লং মার্চ করিয়া ঢাকায় আইসা পরীক্ষা দিতে চায় তাহলে তাদের প্রতিহত করা হইবে। হেফাজতের হুজুর পরীক্ষার্থীগন ইতোমধ্যে পরীক্ষা উপলক্ষ্যে ভালই প্রস্তুতি গহণ করিয়া ফেলিয়াছে।
এই ভাল প্রস্তুতির কারণে তাহার ঘোষণা করিলেন যেভাবেই হোক তাহারা পরীক্ষা দিবেনই। অবস্থা বেগতিক দেখিয়া স্ব-ঘোষিত পরীক্ষক মহোদয় পরীক্ষার তারিখের আগের দিন সন্ধ্যা থেকেই হরতাল আহবান করিয়াছেন। যাতে করে কোন পরীক্ষর্থী নির্ধারিত দিনে পরীক্ষাও দিতে না পারে এমনকি আগের রাতে প্রস্তুতিও নিতে না পারে।
০৩.
ইদানিং আমাদের মিডিয়াগুলো মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র শাহবাগের অংক পরীক্ষাই লাইভ দেখানো শুরু করিয়াছে। ইহা একটি ভাল দিক।
এর ফলে জাতি অংকে আর কাঁচা থাকিবেনা। এখন দেখার বিষয় তারা হেফাজতের হুজুরদের পরীক্ষাও লাইভ দেখায় কিনা। তবে মিডিয়ার এক বন্ধুর মাধ্যমে জানিতে পারিলাম হুজুরদের পরীক্ষা লাইভ না দেখালেও মিডিয়াগুলোতে স্ব-ঘোষিত পরীক্ষক এবং তাহার সহকারীদের বিশেষ অনুরোধে পরীক্ষা প্রতিহতের জন্য যে হরতাল আহবান করা হইয়াছে তাহা লাইভ দেখানো হইবে। মিডিয়ার উক্ত বন্ধুটি হরতালের লাইভের একটা কল্পিত চিত্রনাট্যের ১টি দৃশ্যও ইতোমধ্যে তৈরী করিয়া ফেলিয়াছে।
দৃশ্য-০১
সময়: হেফাজতের হুজুরদের পরীক্ষার আগের মধ্যরাত ৩টা
স্থান: নিউজ স্টুডিও এবং পুরানা পল্টন মোড়।
চরিত্র: প্রেজেন্টার টুনটুনি এবং রিপোর্টার কেল্টু মিয়া।
নিউজ স্টুডিও থেকে-
টুনটুনি: প্রিয় দর্শক আজকের সতঃস্ফুর্ত হরতালের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে আমরা এখন চলে যাব রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা পুরানা পল্টনে, সেখানে রয়েছেন আমাদের রিপোর্টার কেল্টু মিয়া। কেল্টু ! আপনি আমাকে শুনতে পাচ্ছেন?
কেল্টু মিয়া: জ্বি টুনটুনি ! শুনতে পাচ্ছি।
টুনটুনি: পুরানা পল্টন এলাকার হরতালের বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের জানান।
কেল্টু মিয়া: জ্বি টুনটুনি, আমি এখন দাঁড়িয়ে আছি রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা পুরানা পল্টনে।
যেখানে সবসময়ই জ্যাম লেগে থাকে। ইভেন বিরোধীদলের পূর্ববর্তী হরতাল গুলোতেও এখানে প্রচন্ড জ্যাম লেগেছিল। কিন্তু আজকের হরতালের দৃশ্যপট সম্পুর্ন ব্যতিক্রম। রাস্তায় কোথাও কোন ধরণের গাড়ি ঘোড়া চলাচল করতে দেখা যাচ্ছেনা। জনগণ সতঃস্ফূর্তভাবে এই হরতালকে সমর্থন দিয়েছে।
টুনটুনি: জনাব কেল্টু, সেখানে কি পিকেটারদের কোন কর্মকান্ড আপনার চোখে পড়েছে?
কেল্টু মিয়া: না টুনটুনি, এখানে জনগন হরতালকে এমন ভাবে সমর্থন দিয়েছে যে কোন ধরণের যান বাহন তো চলছেই না এমনকি একটি মানুষও রাস্তায় বের হয়নি। তাই পিকেটিং এর কোন প্রয়োজন হচ্ছেনা।
টুনটুনি: জনাব কেল্টু আপনাকে ধন্যবাদ। প্রিয় দর্শক এতক্ষণ কথা বলছিলাম আমাদের রিপোর্টার কেল্টু মিয়ার সাথে। যিনি পুরানা পল্টন এলাকা থেকে আমাদেরকে হরতালের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাচ্ছিলেন।
এরি সাথে শেষ করছি রাত ৩টার সংবাদ, আল্লাহ হাফেজ...। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।