স্বপ্ন ছুঁয়ে আজ পহেলা ফাল্গুন! কাল নাকি আবার ভালোবাসা দিবস! আকাশে বাতাসে , ঘরে বাইরে , চিপায় কোনায় কেমন জানি ভালোবাসা টাইপ আবহ! তাই ভাবলাম এই ভালোবাসা নিয়ে আমিও কিছু লিখে ফেলি! কি লিখা যায়, ভাবতে ভাবতে মনে পড়ল আমার বাল্যকালের একটা রোমিও কাহিনী লিখলে বোধহয় মন্দ হয় না! কাহিনী ক্লাশ ওয়ানে থাকাকালীন। আপনাদের কিন্তু আগেভাগে জানিয়ে রাখি আমি আবার ছোট বেলা থেকেই রমনী কূলের(অবশ্যই রূপবতী)প্রতি কিঞ্চিত দুর্বল ছিলাম । তো প্রথম দিন ক্লাশে আসার পরই যাকে চোখে পড়ল সে হচ্ছে আমাদের ক্লাশের সবচেয়ে সুন্দরী বালিকা! সেকেন্ড পিরিয়ড শুরু হবার কিছুক্ষন আগেই পাশের ছেলেটার সাথে আমার ঝগড়া লেগে গেল এই ব্যাপারে যে সে আমার অরেঞ্জ এর গন্ধওয়ালা রাবারটা খেয়ে ফেলেছে কিনা! সে যতই অস্বীকার করুক, আমি ততই চিৎকার করছি, কারন একটু আগেই আমার রাবারটা নাক দিয়ে শুঁকছিল সে এবং বলেছিল রাবার টা ভালো! তো যখন দুই জনের ভেতর হাতাহাতি প্রায় অনিবার্য তখনই এগিয়ে এল সেই বালিকা। সোজা বলল, পাশে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে "তুমি রাবার টা একটা কামড় দিয়ে ব্যাগে ঢুকিয়েছ,আমি দেখেছি"। বালক হতবাক! আমি ততক্ষনে বিজয়োল্লাসে বালকের ব্যাগ হাতড়ে রাবার বের করে ফেলেছি! এই হল বালিকার সাথে আমার পরিচয় কাহিনী।এরপরই কোন এক অজানা কারনে ক্লাশের প্রায় কোন ছেলের সাথেই আর আমার ঠিক বন্ধুত্ব হল না এবং আমার একমাত্র বন্ধুতে পরিনত হল সেই বালিকা! এই বালিকা প্রীতির কারনেই বোধহয় ক্লাশের ছেলেদের সাথে দুরত্ব বাড়ল আরো! তাতে কি! আমার দিন কাটে ভালোই! বালিকার সাথে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলি,স্কুল শেষে আম্মুকে বলি বালিকাকেও আইস্ক্রীম কিনে দিতে হবে কিন্তু ভাইরে, সব কাহিনীতেই যে বিরহ থাকে!একদিন স্কুল শেষে বাসায় ফিরছি আম্মুর হাত ধরে, বালিকা বিদায় নিয়েছে তার আম্মুর সাথে আমার কিনে দেয়া আইস্ক্রীম হাতে ধরে। এই সময় সেই রাবার খেয়ে ফেলা আমার বন্ধু এক দৌড়ে এসে ধুম করে বলল, "আন্টি ও না "বালিকার" সাথে প্রেম করে"!!!!! এত বড় সাহস , আমার নামে নালিশ , সেই বালক পলায়নের আগেই তার গায়ের উপর হাচড়ে পড়ে রীতিমত তার কলার চেপে ধরলাম, বালকের আম্মু এল ছুটে। তার পর বাসায় গিয়ে আমার কপালে কি জুটেছিল তা নিশ্চই আর বিস্তারিত বলার দরকার নেই!আম্মু ঘোষনা করলেন, আমি অতি দুষ্টু প্রায় বান্দর হয়ে গিয়েছি , সুতরাং এই স্কুল বাদ দিয়ে আরো কঠিন নিয়ম -কানুনের স্কুলে আমাকে ভর্তি করা হবে! আমি আর কি করব, বাল্যকালের রোমিওর মত মেনে নিলাম এই কথা এবং সামনের স্কুলটায় কি করে নিজের স্বমহিমায় আবির্ভুত হওয়া যায় সেই চিন্তাই করতে লাগলাম ফাইনাল পরীক্ষার পর! শেষ কথা বলি এবার, আমার এই রোমিও কাহিনীর সেই ভিলেন বালকটি পরবর্তীতে আমার নতুন স্কুলে এসে হাজির হয়, আর আমার অন্যতম ভালো বন্ধু হয়ে যায় সে! আর সেই বালিকা, তার এখন বিয়ে হয়ে গিয়েছে! এই কিছুদিন আগেও তার সাথে দেখা হলে উচ্চস্বরে হাসি থামাতে পারতাম না, এখনো তাই ই হবে!!!!!!!!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।