প্রিয়তমা বিপ্লব,
আমার প্রগাঢ় প্রেয়সী, তুমি কেমন আছো?
তোমার চোখের কোনে হীরের মত, কাকের চোখের মত
ও কোন রক্তবিন্দু জ্বলছে প্রিয়তমা?
একি তুমি কাদছো?
নিকোটিনে ঝলসে যাওয়া ফুসফুসের মত তুমি কাঁপছ কেন?
তুমি কেদোনা প্রিয়তমা বিপ্লব আমার, তুমি কেদোনা
তুমি বিষণ্ণ থেক না, কালো হয়ে যেও না।
তুমি কোন গভীর রাতের আঁধার নও,
বিছানায় এলিয়ে থাকা অবলা নও
যে চাইলেই ওরা তোমাকে ধর্ষণ করবে উপর্যুপরি।
তুমি কোন বিষাদময় সামাজিক সুশীল শোকেসের আর্টপিস নও,
শীতাতপনিয়ন্ত্রিত সেক্রেটারিয়েট টেবিল বা পোশাকের দোকান নও
যে চাইলেই ওরা তোমাকে এক এক করে খুলে ফেলবে।
আমি জানি প্রেয়সী আমার-
তুমি সেই তীব্র আলো, সমুদ্রের সফেন ফসফরাস,
তুমি টপিক্যাল জঙ্গলের অবারিত বর্ষণ,
সুদুর নর্থের তুষার শুভ্র ঝড় তুমি প্রিয়তমা।
তোমাকে ভালোবাসার জন্য, দ্রোহের জন্য,
তোমার বুকে মাথা রেখে স্বপ্ন দ্যাখার জন্য-
ওরা আমাকে বদ্ধ ভ্যানে গভীর রাতে তুলে এনেছে,
শেকল পরিয়ে ভেবেছে আমাকে আটকে ফেলবে ওদের জালে।
ওরা ভেবেছে সামান্য হুঙ্কারে, একদল ভীরুর কুচকাওয়াজে
চামড়া বাধা সেক্রেটারিয়েট ফাইলে- ব্যক্তিগত পত্রিকার ‘জী হুজুরে’
আমি ভয় পেয়ে যাবো।
কিন্তু বিশ্বাস কর প্রিয়তমা,
আমি ভীত হইনি, আমার অন্তরে কোন সংশয় ছিল না
আমি জানতাম,
একদিন ওরা নরম মাংশের মুখশ খুলে ফেলবে
বেরিয়ে পরবে চকচকে ধারালো দাঁত,লাল চোখ,
লোভে চকচকে খুলি।
ওদের কালো বিষাক্ত নোখ আঘাত হানবে-
আমার-আমাদের- তোমার ওপর, প্রিয়তমা।
ওরা পূর্বের মতই চেয়েছে আমাদের থামিয়ে দিতে-
আমাদের মুখের কথা, আমাদের ভাষা, আমাদের লেখনী-
তিল তিল করে যা লিখেছি প্রাগৈতিহাসিক পাথর খুদে
যে ছেনি,হাতুড়,বাটাল বয়ে আনছি হাজার বছর ধরে
যে বিপ্লব, যে স্বাধীনতা, যে দর্শন হাত বদল হয়েছে
সক্রেতিস থেকে আমাতে,
সেই বিপ্লবকে ওরা পোস্টমর্টেম করতে যায়
একে একে খুলে নিতে চায়- আঙ্গুল, নখ, চোখ
ভ্রু, নাভীমুলের ঘাম, চুলের খোপা।
আমার সম্রাজ্ঞী, ওদের সিজোফ্রেনিয়াক করোটিতে
বিপ্লবের কোন সংজ্ঞা নেই, সত্যের কোন বিকাশ নেই
স্বাধীনতার কোন অসীমতা নেই।
ওরা জানেনা, আমার প্রেয়সী-
আমার আকাশের গভীর নীলে বাস করা প্রিয়তমাকে
ছোঁয়া যায় না।
রাতের আধারে বা সফেদ ভোরে বদ্ধ ভ্যানে
জোর করে তুলে নেয়া যায় না।
যায়না হাতকড়া পরিয়ে নপুংশক সংবাদমাধ্যমের সামনে
মাথা নত করানো।
আমি জানি প্রিয়তমা, তুমি অবিনশ্বর
তুমি আছো- তুমি থাকবে
রুপপুরের কৃষকের মাটিতে,শ্রমিকের পেশিতে
সবুজ পাখির ডানায়, ফুলের পরাগায়নে,
স্বাধীনতার সংগ্রামে ঘুরতে থাকা মধ্যবিত্ত তরুনের
ঘাম মোছা শার্টের কোনায়।
কিশোরীর স্ফীত বক্ষে, তরুণীর কস্মেটিক্স বাক্সে,
আমি জানি প্রিয়তমা, তুমি আছো, তুমি আছো।
*সরকার ব্লগ থেকে দূরে থাকলেই ভালো করবে। এবং অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত ব্লগারদের মুক্তি দাবি করছি। ওহে সরকারতন্ত্র আমি ও আমরা গত চার বছরের কিছুই ভুলি নি, এবং আগামী এক বছর ও মনে রাখবো। সাধু সাবধান। * ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।