ধর্মান্ধ এবং নাস্তিকরা দূরে থাকুন… 'দোস্ত তুই নাকি শাকিব খানের ফ্যান?' বাপ্পি অনিককে জিজ্ঞেস করল।
-আরে নাহ্। ওই হিজরার খাওয়া আছে নাকি?
-তুই মুনে অয় অর চাইয়াও বড় নায়ক।
-আবার কয়। দেহছ না কত্ত গুড লুকিং আমি।
দুদে আলতা শইরলের রং। আর কয় দিন পর আমিও অ্যাকটিং করুম।
-কী? হাছা কইতাছছ?
-মিছা কই নাকি?
-তা ছবির নাম কী?
-সিঙ্গেল খাটের দম্পতি। এডাল্ট ফিলিম।
-দারুন নাম অনিক।
ব্যাপক হিট অইব।
-কুপা ছামছু পরিচালনা করব হালায়। ইমরান হাশমির ছবির সিস্টেম কইরা ঘটনা লেকছে।
-তাই নাকি? তা নায়িকা কেডা।
-জানি না।
তয় ঘটনাডা সংক্ষেপে হুনাইবার পারি।
-ক।
অনিক ঘটনা আরাম্ভ করে-
পর্থমে নায়িকা বাপের লগে সোনার গাঁ হোটেল থিকা আইতে থাকব। ব্যাপক মদ খাওয়ায় পথে ২ নম্বর চাপব। শেষ মেষ গাড়ি থামায়া দৌড় মাইরা পাবলিক টয়লেটে ঢুকব।
যে টয়লেটে ও ঢুকব তার পাশের টয়লেটে থাকুম আমি। টয়লেটে থেকে বাইর হওয়নের সময় ও পা পিছলায়া পইরা যাইব এক্কেবারে আমার ওপরে। তারপরেই গান। গানের মইধ্যে টয়লেটের ভিতরে নায়ক নায়িকার কিছু ইয়ে দৃশ্য আছে। গান শেষে অর কানা বাপ আমাগো এক লগে দেইখা গুলি করব।
গুলি আমার পায়ে লাগব। আমি এক দৌড়ে পলামু। .... এমনেই পরিচয়। মাঝখানে কিছে এডাল্ট রোমান্স আছে। মূল কাহিনীর চাইয়া ঐডার আকর্ষন বেশী।
একমাস পরে সিনেমার সুটিং আরাম্ভ হল। অনিক এফডিসিতে গেল। সেখানে ছামছু ভাই নায়িকার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। নায়িকাকে দেখে অনিকের গলা শুকিয়ে গেল। কমপক্ষে ২মণ ওজনের এই নায়িকা অনিককে অনায়াসে কোলে নিয়ে ঘুরতে পারবে।
দ্বিতীয় দৃশ্যে নায়িকা পরবে অনিকের উপর। লাইট ক্যামেরা অ্যাকশনঃ
পাবলিক টয়লেটের একটা দরজা দিয়ে অনিক বেরুলো। সাথে সাথেই আরেকটা দরজা দিয়ে বেরুলো নায়িকা। নায়িকা পানিতে (পাবলিক টয়লেটের পানিঃ বুইজ্জা লন) পা পিছলে পরল অনিকের উপর। বেচারা অনিক ধাক্কা সামলাতে না পেরে পরে গেল টয়লেটের মেঝেতে।
দৈত্যাকার নায়িকা পরল অনিকের উপর। অনিক 'ওরে বাবারে, গেলাম রে' বলে চেঁচিয়ে উঠল। পরিচালক সাথে সাথে কাট করলেন। অনিক মনে মনে বলল 'মান্জাডা ভাইঙ্গা গেছেরে....'। এরপর নায়িকার নিচ থেকে উঠে ঝেড়ে এক দৌড় লাগাল অনিক।
পরিচালক অনেক খুজেও আর অনিককে পেলেন না। কিছুক্ষণ পর অনিকের মোবাইলটা টয়লেটের পাশে বেজে উঠল। পরিচালক ধরলেন। বললেন,
-হ্যালো। কে?
-কে মানে? আমি বাপ্পি।
তোর দোস্ত....
-দূঃখিত। আমি পরিচালক শামস বলছিলাম।
-আরে ছামচু ভাই নাকি? কী খবর? আমি আফনের ফ্যান.....
-বুঝলাম। তো ভাই আপনি কী একটু আসতে পারবেন এফডিসিতে?
-আপনে কইছেন, আর আমি আহুম না? অহনি আইতাছি।
একটু পর বাপ্পি হাজির।
এক্কেবারে সুলেমান খান স্টাইল। পরিচালক ওকে দেখে ধরে ফেলল। বলল,
-ভাই, অনিক পালিয়েছে। ওকে না পেলে আমার এত সাধের মুভিটা নষ্ট হবে।
-অহন আমি আফনেরে ক্যামনে হেল্পামু হেইডা কন।
-দয়া করে অনিককে খুজে বের করুন।
এমন সময় বাপ্পির মোবাইলে কল আসল। নাম্বার দেখে চটে গেল বলে ওঠল 'এই শুভ ক্ষণে অসাধু উদ্দেশ্যে কোন বাঁদরের নাতি ফুন করল রে..... তারে কুয়ায় ফালায়া মাইরা চীল দিয়া খাওয়ামু। ' এটা শুনে পরিচালকের চোখ চরক গাছ! বাপ্পিকে ধরে লাফ মারলেন। আর বললেন,
-ভাই আপনি এতদিন কোথায় ছিলেন? আপনার ডায়লগ শুনে আমি অভিভুত।
আপনি আমার সিনেমায় নায়িকার ভাই হয়ে অভিনয় করতে পারেন, যদি চান।
এটা শুনে বাপ্পিও লাফিয়ে উঠল। কুপা ছামছুর দোয়া নিয়ে অনিককে খুজতে বের হল। অনিককে না পেলে ওর অভিনয় করা হবে না। সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে হঠাত্ আগের অচেনা নাম্বার থেকে একটা ফোন এল।
বাপ্পি ফোন ধরে বলল,
-হ্যালো। ক্যারা কইতাছেন পিলিজ।
-হালায় ভাব ধরিছ না। আমি অনিক।
-কইরে তুই? তরে খুইজা আমি হয়রান।
-দোস্ত বিপদে আছি। আমারে বাচা। আমি ইডেন কলেজের গেটের পাশে আছি। হালার বখাটে পোলারা আমারে ধইরা ইডেন কলেজের গেটের সামনে পাগল হিসাবে আটকায়া রাখছে। মাইয়ারা আমারে দেইখা খিল খিল কইরা হাসতাছে।
কেউ কেউ কইতাছে, আহারে এই অল্প বয়সেই মাথায় ছিট পরেছে।
-কী? তুই ঐহানে ক্যান? [হাসি থামিয়ে বলল বাপ্পি]
-শখ কইরা গেছিলাম মুভি করতে। হালার ছামছুর বাচ্চায় ইমুন মাইয়া দিয়া জাতা মারাইছে, আমার ১২ডা বাজায়া দিছে। তাই চোখ বন্ধ কইরা দৌড় মারছি। গিয়া পরছি ম্যানহোলে।
উঠার পরে সবাই আমারে পাগল ডাকতাছে। শরীরে ঢাকার সব আবর্জনা লাগছে। বখাটে পোলারা আমারে ধইরা ইডেন কলেজের সামনে বহায়া থুইছে।
-[বহু কষ্টে হাসি থামিয়ে] তাইলে ফোন করলি ক্যামনে?
-এক হিজরা আমারে দেইখা প্রেমে পইরা গেছে। ঐই আমারে ফুন করতে মোবাইল দিছে।
-খাড়া আইতাছি। অহন রাখি। নাইলে আবার আমিও পইরা যামু।
এরপর বাপ্পি অনিককে ইডেন কলেজ থেকে নিয়ে আসে। এরপর সামছু ভাইয়ের হাতে তুলে দেয়।
কয়েক মাস অনিক নায়িকার জাতা খাওয়ার পর সিনেমার শুটিং শেষ হয়।
এবার এর অ্যাড দেওয়ার দায়িত্ব পড়ে বাপ্পির উপর। সে যায় FTV (fashion tv) তে। সেখানে একটা ট্রেইলর বানানো হয়ঃ
আসিতেছে! কুরবাণীর ঈদের বিশেষ আকর্ষণ! ADULT FILMS প্রযোজিত, ভরসাহীন নিবেদিত, কুপা ছামছু পরিচালিত, দিপ ঘোষ(অনিকের ছদ্মনাম) ও মোটা বিশ্বাস অভিনীত পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি সিঙ্গেল বেডের দম্পতি। ।
ভিডিও- ADULT FILMS
অডিও- বাঁজখাই মিউজিক
এরপর ঈদের দিন মুক্তি পেল এটি। এটা দেখে দর্শকরা অনিক ও শামসুর বাসা ঘেরাও করে ইটপাটকেল ছুরতে লাগল। বেচারা বাপ্পি দর্শকদের সাথে হলে সিনেমা দেখতে গিয়েছিল। ওর বকাপূর্ণ ডায়লগ শুনে দর্শকরা হলের ভিতর ওকে মার আরাম্ভ করে। পরিণতি হয়ঃ কাপড় খুলিয়ে পুরো এলাকা ঘোরা।
। এখন বাপ্পি ও অনিকের ফোন বন্ধ। সবার কাছ থেকে বকা শুনতে শুনতে অবস্থা খারাপ। তাই মনের দুঃখে গিয়েছিল পুকুরে ডুবে মরতে। সেই ঘটনাও লিখব, যদি এইটা আপনাদের ভালো লাগে।
{REPOST}
এস এম শোভন ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।