খিয়ারি মানে খিয়ার থেকে। কথা টোকাই। পর্ব -১।
আমার আব্বা। নেহাত ভদ্রলোক।
বছর দশেক হয়েছে অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাহেব এখন সারাটাদিন বকর বকর করেন।
কোথায় রাজনীতি যাচ্ছে? কি হবে দেশটায়? শেখের বেটি কয় কি? এই সকল ফিরিস্তি আর তার হ্যান ত্যান ইত্যাদি বকর বকর রেকর্ড করে যদি ব্লগে ছাড়ি তা হলে ব্লগীয় ক্যাচাল বাড়তেই থাকবে।
আমি ক্যাচাল বাড়াতে চাইনা। বরং একটা প্রশ্ন করতে চাই। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের আওয়ামীলীগ বিরোধিতা যেন তুঙে থাকে।
কিন্তু কেন?
আমার চোখে ১৯৯১ পরবর্তী সময়ের গণতন্ত্রের পথে বিএনপি ও আওয়ামীলীগ সরকারে বা ক্ষমতায় থাকার সময় গুলোকে যদি মোটাদাগে দেখি তাহলে নৈতিকভাবে ( উভয় দলের অনেক অনৈতিক কাজ যদিও আছে) এগিয়ে থাকবে বর্তমানের আওয়ামীলীগ সরকার। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে কিন্তু এত গালাগাল দিতে শুনিনি যতটা এখন শুনি। যেমন আমার অফিসের পাশেই একরাম নামের এক পান দোকানী সেইদিন অকথ্য ভাষায় শেখ হাসিনাকে গালাগাল দিতেছে। আমি বল্লাম, এত গালাগাল দিচ্ষি কেন ভাই? ও বলে, বলেন তো বিএনপি হরতাল দিচে। লচ খেয়ে পানের দাম বাড়িয়ে দিচে মহাজন।
এখন এলাকার কাউরে ৩/৪ টাকায় এই এত্তটুকু পান দেই। কউ তো মানচে না। সব দোষ ঐ শেখ হাসিনার। বিএনপির কতা মানি নিলেই তো আামাদের কষ্ট কমে।
যতদুর মনে পড়ে বিএনপির সময় আওয়ামীলীগ আরো অনেক বেশী হরতাল দিয়েছে দেশে।
কিন্তু তখন কউ সরকারে থাকা বিএনপিকে গালি দিয়েছে তেমনটি মনে নেই। যাই হোক এগুলা সব কথার কথা।
আমার বাবা ভদ্রলোকের কথায় আসি। তিনি সবসময়ই আওয়ামীলীগকে গালিগালাজ করছেন। আজ সকালবেলা আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি তো বিএনপি করনা বা জামাত ও করনা।
যতদুর জানি গেলবারও নৌকায় ভোট দিছ। তাও তুমি এত গালিগালাজ কর কেন?
এর কোন উত্তর না দিয়া আমার দিকে রাগচক্ষু দিয়ে পায়চারি করতে থাকেন তিনি। তারপর আবার সেই বকবক।
পাগল হয়ে গেলাম। আমি রাস্তায় বেরিয়ে পড়লাম।
অফিস যাই।
আবারো হরতাল। আগামী ২ দিন লাগাতার ছত্রিশ ঘণ্টার হরতাল। তার আগেই অগ্রিম যানবাহন ভাঙ্চুর আর আগুন দেয়ার কাজ শুরু হয়ে যায় যে! অলরেডী কলিজা কাঁপাকঁপি শুরু হয়েছে। এই সাত সকালেই যদি চলন্ত বাসের ভেতরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা পরি!
সেরকম কিছু হচ্ছেনা দেখে ভাল লাগছিল।
বাসে বসে কত কথা শুনতে পাই। বাসে জনৈক এক যাত্রী জানালো সত্তর দশকে দেশে দুইটা পক্ষ ছিল এক পক্ষ আওয়ামীলীগ আরেক পক্ষ এন্টি আওয়ামীলীগ। আমি হিসাব মিলাতে পারছিনা বর্তমানে কয়টি পক্ষ আছে। কথায় কথায় মুখচেনা বয়স্ক বাস যাত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার চোখে বর্তমানে কয়টি পক্ষ আছে বলে মনে হয়? উনি বল্লেন, এখনো দুইটি পক্ষ। আমি বল্লাম-- কি কি?
-জানেন না, মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকার।
কে যেন পেছন থেকে বলে উঠল, মুরুব্বি হইলোনা আরো আছে, আস্তিক আর নাস্তিক।
(চলবে) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।