আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মরণের সময় মু’মিনের(বিশ্বাসীর) অবস্থা

ইসলামী বিচারব্যবস্থার প্রাসঙ্গিকতা : প্রসঙ্গ সঊদী আরবে ৮ বাঙ্গালী যুবকের শিরোচ্ছেদ মরণের সময় মু’মিনের অবস্থা বারা’ বিন আ’যিব (রাঃ)এর হাদীছে মানুষের মৃত্যুকালীন অবস্থার পূর্ণ বিবরণ এসেছে। এতে মু’মিন, কাফের এবং পাপী সকল মানুষের অবস্থাই বর্ণিত হয়েছে। পাঠক ভাই-বোনদের কাছে হাদীছের ভাষ্যটি তুলে ধরছি। বারা’ বিন আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে জনৈক আনসারী সাহাবীর জানাযায় শরীক হওয়ার জন্যে বের হলাম। তখনও কবরের খনন কাজ শেষ হয়নি।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিবলামুখী হয়ে বসে পড়লেন। আমরাও তাঁর চারপাশে বসে গেলাম। তাঁর হাতে ছিল একটি কাঠি। তা দিয়ে তিনি মাটিতে খুঁচাতে ছিলেন এবং একবার আকাশের দিকে তাকাচ্ছিলেন আর একবার যমিনের দিকে মাথা অবনত করছিলেন। তিনবার তিনি দৃষ্টি উঁচু করলেন এবং নীচু করলেন।

অতঃপর বললেনঃ “তোমরা আল্লাহর কাছে কবরের আযাব থেকে আশ্রয় চাও”। কথাটি তিনি দু’বার অথবা তিনবার বললেন। অতঃপর তিনি এই দু’আ করলেনঃ أَللَّهُمَّ إِنِّى أَعُوْذُبِكَ مِنْ عَذاَبِ الْقَبْرِ অর্থঃ “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কবরের আযাব থেকে আশ্রয় চাই। ” তারপর তিনি বললেনঃ মু’মিন বান্দার নিকট যখন দুনিয়ার শেষ দিন এবং আখেরাতের প্রথম দিন উপিস্থত হয় তখন আকাশ থেকে উজ্জ্বল চেহারা বিশিষ্ট একদল ফেরেশতা উপিস্থত হন। তাদের সাথে থাকে জান্নাতের পোষাক এবং জান্নাতের সুঘ্রাণ।

মু’মিন ব্যক্তির চোখের দৃষ্টি যতদূর যায় তারা ততদূরে বসে থাকেন। এমন সময় মালাকুল মাউত উপস্থিত হন এবং তার মাথার পাশে বসে বলতে থাকেনঃ হে পবিত্র আত্মা! তুমি আপন প্রভুর ক্ষমা ও সন'ষ্টির দিকে বের হয়ে আস। একথা শুনার পর মু’মিন ব্যক্তির রূহ্ অতি সহজেই বের হয়ে আসে। যেমনভাবে কলসীর মুখ দিয়ে পানি বের হয়ে থাকে। রূহ বের হওয়ার সাথে সাথে ফেরশতাগণ তাঁকে জান্নাতী পোষাক পরিয়ে দেন এবং জান্নাতী সুঘ্রাণে তাকে সুরভিত করেন।

তার দেহ থেকে এমন সুঘ্রাণ বের হতে থাকে যার চেয়ে উত্তম সুঘ্রাণ আর হতে পারেনা। তাকে নিয়ে ফেরেশতাগণ আকাশের দিকে উঠে যান। যেখান দিয়েই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানেই ফেরেশতাগণ জিজ্ঞেস করেনঃ এটা কার পবিত্র আত্মা? উত্তরে অতি উত্তম নাম উচ্চারণ করে বলা হয় অমুকের পুত্র অমুকের। আকাশে পৌঁছে গিয়ে দরজা খুলতে বলা হলে তা খুলে দেয়া হয়। তাঁর সাথে প্রথম আকাশের ফেরেশতাগণ দ্বিতীয় আকাশ পর্যন্ত গমণ করেন।

এভাবেই এক এক করে সপ্তম আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে যান। তখন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমার বান্দার নামটি ইল্লিয়ীনের তালিকায় লিপিবদ্ধ করে দাও। অতঃপর তাকে নিয়ে যমিনে ফিরে যাও। কেননা আমি তাকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছি। মাটির মধ্যেই তাকে ফিরিয়ে দিব এবং সেখান থেকেই তাকে পুনরায় জীবিত করব।

তখন কবরে তার আত্মা ফেরত দেয়া হয়। ওখানে দু’জন ফেরেশতা আগমণ করেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ তোমার প্রতিপালক কে? তিনি উত্তরে বলেনঃ আমার প্রতিপালক হচ্ছেন আল্লাহ। আবার জিজ্ঞেস করেনঃ দুনিয়াতে তোমার দ্বীন কি ছিল? তিনি উত্তর দেনঃ আমার দ্বীন হচ্ছে ইসলাম। পুনরায় তাকে প্রশ্ন করেনঃ তোমাদের কাছে যে লোকটিকে পাঠানো হয়েছিল তিনি কে? জবাবে তিনি বলেনঃ তিনি হলেন আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তখন আকাশ থেকে মহান আল্লাহ ঘোষণা করতে থাকেনঃ আমার বান্দা সত্য বলেছে।

তাঁর জন্যে জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে জান্নাতের পোষাক পরিয়ে দাও। আর তাঁর জন্যে জান্নাতের একটি দরজা খুলে দাও, যেন সে জান্নাতের বাতাস ও সুঘ্রাণ পেতে পারে। তার কবরটি দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেয়া হয়। একজন সুন্দর আকৃতি ও উজ্জ্বল চেহারা বিশিষ্ট লোক উত্তম পোষাক পরিহিত হয়ে এবং সুঘ্রাণে সুরভিত অবস্থায় তার কাছে আগমণ করেন এবং বলেনঃ তুমি খুশী হয়ে যাও। তোমার সাথে যে ওয়াদা করা হয়েছিল তা আজ পূর্ণ করা হবে।

মু’মিন ব্যক্তি লোকটিকে জিজ্ঞেস করেনঃ আপনি কে? তিনি বলেন, আমি তোমার সৎ আমল। তখন মু’মিন ব্যক্তি বলেনঃ হে আল্লাহ! আপনি এখনই কিয়ামত সংঘটিত করুন। আমি আমার পরিবারের সাথে মিলিত হবো। তখন তাকে বলা হয় তুমি এখানে আরামে ও স্বাচ্ছন্দে বসবাস করতে থাক। তোমার কোন চিন্তা ও ভয় নেই।

সংকলীতঃ ‘যা হবে মরণের পর’ বই থেকে। আসুন যা হবে মরণের পর,তা নিয়ে একটু ভাবি। প্রতিদিন ২৪ ঘন্টার মাঝে অন্তত ১০ মিনিট ঘুমোতে যাওয়ার সময় প্রতিটি মানুষের ভাবা উচিৎ,আমি কি জান কবযের দূত আযরাইল(আঃ) এর সাথে সাক্ষাতের জন্যে প্রস্তুত?????????? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.