আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার দাবিতে নিউইয়র্কে সমাবেশ : আদালতে মানুষের জীবন-মরণের সিদ্ধান্তের বিষয় ব্যক্তিগত আলাপচারিতা নয়

নিউজমিডিয়াবিডি.কম দৈনিক আমার দেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপ কেলেঙ্কারির খবর প্রকাশ না করতে আদালতের নির্দেশ এবং আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরের প্রতিবাদে গত ১৪ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় (বাংলাদেশ সময় ১৫ ডিসেম্বর সকাল) নিউইয়র্কে গণমাধ্যম কর্মী ও প্রবাসী সুধীবৃন্দের এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে জনগুরুত্বসম্পন্ন চাঞ্চল্যকর একটি খবর জাতির সামনে তুলে ধরাকে অপরাধ বিবেচনা করে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করার সরকারি উদ্যোগের নিন্দা করে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান নিজামুল হক স্কাইপে বিচারের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন একজন ব্যক্তির সঙ্গে বিচারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তার শপথ ভঙ্গ ও বিচারপতি হিসেবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তার পদত্যাগ করার মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয়েছে, তিনি তার অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন। সেক্ষেত্রে একটি সংবাদপত্র এ ধরনের একটি চাঞ্চল্যকর সংবাদ পরিবেশন করলে সেই পত্রিকা ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মানসিকতা সরকারের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়। তারা অবিলম্বে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানান।

নিউইয়র্ক সিটির সিটির জ্যাকসন হাইটসে অবস্থিত সাপ্তাহিক দেশবাংলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান এবং পরিচালনা করেন বাংলানিউজ২৪.কমের যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি শিহাবুদ্দীন কিসলু। বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক বর্ণমালা সম্পাদক ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহফুজুর রহমান, বাংলা পত্রিকা সম্পাদক ও প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের, নিউজমিডিয়াবিডি.কমের প্রধান সম্পাদক ও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ-এর উপদেষ্টা সম্পাদক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু, বিশিষ্ট সাংবাদিক উইকলি হলিডের যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি মঈনুদ্দীন নাসের, মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, মূলধারার রাজনীতিবিদ গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাস্টনিউজের যুক্তরাষ্ট্র পরিচালক ও নর্থবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট হাসানুজ্জামান হাসান, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট খন্দকার ফরহাদ, নিউনেশনের যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি মাহমুদ খান তাসের, বাংলা পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি শেখ সিরাজুল ইসলাম, এটিএন বাংলা যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সম্পাদক ফকীর সেলিম, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মো. মনিরুল ইসলাম, আই অন টিভি’র যুক্তরাষ্ট্র পরিচালক রিমন ইসলাম, এনটিভির তৌহিদুল ইসলাম, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ-এর সিনিয়র রিপোর্টার মমিনুল ইসলাম মজুমদার, দেশবাংলার নির্বাহী সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সাপ্তাহিক আজকাল-এর বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ ওয়ালিউল আলম, বার্তা সংস্থা ইউএনএ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ, খবর ডটকম সম্পাদক মশিউর রহমান মজু, প্রবাসী বার্তা সম্পাদক মতিউর রহমান লিটু, বাংলাভিশনের আজাদ মোহাম্মদ ও সাপ্তাহিক এখন সময়ের আরিফ মোহাম্মদ। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশের খ্যাতিমান কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন সভায় উপস্থিত থেকে আমার দেশ বন্ধ করার ষড়যন্ত্র ও মাহমুদুর রহমানকে হয়রানির বিরুদ্ধে দেশ ও প্রবাসে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে বর্তমানে যে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা চলছে তা আরও প্রকট হয়েছে আদালতের মাধ্যমে আমার দেশ ও সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপে। একটি আদালতে মানুষের জীবন-মরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয় ব্যক্তিগত আলাপচারিতার ব্যাপার হতে পারে না।

এ ধরনের স্পর্শকাতর ও চাঞ্চল্যকর বিষয়ে জনগণের জানার অধিকার রয়েছে এবং জানানোর দায়িত্ব গণমাধ্যমের। আমার দেশ ও তার সম্পাদক নিষ্ঠার সঙ্গে এ দায়িত্ব পালন করে সাংবাদিকতার ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছেন। এজন্য মাহমুদুর রহমান জাতির প্রশংসা ও অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু সত্য প্রকাশের জন্য তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। তারা বলেন, বাংলাদেশে যারাই ক্ষমতায় যায় তারা গণমাধ্যমকে সহ্য করতে পারে না।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এই অসহিষ্ণুতার মাত্রা সব সীমা অতিক্রম করে, যার দৃষ্টান্ত আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সরকারের অধীনে চারটি সংবাদপত্র রেখে অবশিষ্ট সব সংবাদপত্রের প্রকাশনা নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে প্রত্যক্ষ করেছি। আওয়ামী লীগের এহেন স্বৈরাচারী মানসিকতার এখনও অবসান ঘটেনি। তারা আরও বলেন, উইকিলিকসের বের করা যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য গোপন রাষ্ট্রীয় তথ্য এদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু আমেরিকান সরকার কোন মিডিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বা সেসব তথ্য প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। বাংলাদেশে কথায় কথায় সংবাদপত্রের টুঁটি চেপে ধরার চেষ্টা কোনো শুভ আলামত নয়।

তারা বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা যে ভাষায় কথা বলছেন তাতে তারাও আইন লঙ্ঘন, এমনকি হত্যাকাণ্ডে উস্কানি দেয়ার অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার যোগ্য। ’৭১ সালে মানুষ হত্যার উস্কানি দিয়েছিল বলে যদি গোলাম আযম বা তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিচার হতে পারে, তাহলে একই অপরাধে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যেতে পারে। বক্তারা বলেন, মাহমুদুর রহমান একজন বিচারপতির নৈতিক অসততার বিষয় প্রকাশ করলে তা কি করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মধ্যে পড়ে, বিশেষত তথ্য অধিকার আইন যেখানে গণমাধ্যমকে অধিকার দিয়েছে সঠিক তথ্য প্রকাশের। গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় যারা বিশ্বাসী নয়, তারাই এ ধরনের মামলা দায়ের করতে পারে। আমার দেশ ও মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হলে দেশ ও বিদেশে সরকারের চেহারা উন্মোচনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করার পাশাপাশি সাংবাদিকদের ঐক্য বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.