Nothing goes unpaid
আশে পাশে দেখি ছেলে-মেয়ে,মেয়ে-মেয়ে(!) প্রকাশ্যে চুমু খাচ্ছে। কার ও কোন বিকার নেই। তাপমাত্রা ছয় ডিগ্রী। তারপর ও ললনারা হাফপ্যন্ট আর অতীব পাতলা জামা পইরা ঘুরতেছে! সিটিস্ক্যান ছাড়াই সব দেখা যায়! আহা!। কাপ্তান বার বার বলতেছে ,ভুলেও কেউ তোমরা একজন আরেকজনের হাত ধইরা হাটবানা।
এখানে সমকামীরাই কেবল হাত ধইরা হাটাহাটি করে!!
এমন একটা ভাব করলাম যেন কিছুই দেখি নাই! তাকায়া রইলাম প্রত্নতত্ত্বভবনের দিকে।
মনে মনে বললাম-কলি কাল ,ঘোর কলি কাল।
রোমানিয়ার এক অতি পুরোনো শহর- কনস্টান্টা।
কন্সটান্টার প্রত্নতত্ত্ব ভবনের সামনে দ্বিতীয় –তৃতীয় শতকের তৈরি মোজাইক স্তম্ভ। মোজাইকের তৈরি বাথটাব,কবর, বসার টুল আরও কত কি! ভাবতেই অবাক লাগে।
এত আগে মানুষ এতটা উন্নত ছিল।
মোজাইকের গায়ে লিখার অনুবাদ পড়ার চেস্টা করলাম। সবই করুন কাহিনী। (ছবি-মুই নিজের হাতে তুলেছি!)
শহর লাগোয়া সমুদ্র সৈকতে গিয়ে তো চক্ষু আমার মাতাল হইয়া গেল।
সানগ্লাসের ভেতর চক্ষু মারবেলের মত ঘুরতে লাগল।
চোখেরই বা কি দোষ!বড় বড় পাথরের গায়ে শুয়ে, বসে উন্মুক্ত বক্ষ আর নাম মাত্র এক টুকরো কাপড় নিয়ে ললনারা রোদ্র স্নান করছে!!আমার চোখ তো লোল ফালাবেই!!!সামনে যতই হাটি ততই রঙ্গিন লাগে। কয়েকশ মানুষের চোখের সামনে এক দাদি কাপড় পালটানো শুরু করল!!আশেপাশে তাকিয়ে দেখি কেঊ কারো দিকে তাকায় না। উল্টা অনেকেই আমাদের দিকে বাকা চোখে তাকায়া আছে। অরা মনেমনে আমাদেরকে বলতেছে- “জামাকাপড় পইড়া আছে ,লজ্জা নাই”। আমার সাথের একজন বলে দাদিরে দেইখা লাভ কি সামনে তাকা!!সামনে তাকায়া দেখি দুর্ভিক্ষ।
কার ও গায়ে কাপড় নাই!!
টেক্সিওয়ালা বলল - সামারে এখানে কোন কাক পক্ষীও থাকে না । সামনের ‘মামায়া’ সৈকতে সব স্নান করতে চলে যায়। সাড়ে তিন লাখ মানুষের কনস্টানটা তখন সাত লাখ মানুষের নগরীতে পরিনত হয়। সারা ইউরোপ থেকে লোকজন আসে রোদ্র স্নান করার জন্য!!মানুষ গিজগিজ করে।
বাংলায় বললাম-আমাদের কক্সবাজারে আসে না কেন? ওখানেতো অনেক জায়গা খালি পইড়া আছে! সাবাই হাসতে লাগল।
টেক্সিওয়ালা কিছু না বুইজাই হাসি শুরু করল।
টেক্সিওয়ালা বেশ আগ্রহ নিয়ে বলতে লাগল-এখানে “স্ট্রিপ টিজ”(বাংলা কি হপে?)ক্লাবে -প্রবেশ ফি মাত্র ১৫ডলার,টপলেস ক্লাবে-২০ডলার। টাকার বিনিময়ে বিকিনি , দু’পাট্টা পড়া সুন্দরীদের টিজ করার ব্যবস্তা,ছুয়ে দেখার ব্যবস্তা! জীবনে প্রথম শুনলাম এইসব কথা। শুইনাই মনে মনে লোল পড়া শুরু হইল। কাপ্তান,সেকেন্ড অফিসার আমার দিকে আগুন চোখে এমনভাবে তাকালো যেন আমি এইমাত্র ক্লাব ঘুরে আসলাম!!আর একটু হলেই পুইরা বার্বিকিউ হইয়া যাইতাম।
সেকেন্ড অফিসার আমার কানে কানে বলল-থাকিতে দুই হস্ত ,হইব না পর নারীর দ্বারস্থ। আমি বলিলাম-তথাস্ত!!
টেক্সিওয়ালাকে বললাম-ভাই,আমরা মুসলিম। আমরা এইসব খাই না,সরি-পছন্দ করি না!!বেচারা বেশ আহত হল। সারা জীবনেও মনে হয় সে এইরকম জাহাজী দেখে নাই। বাকী সময় সে একটাও কথা বলে নাই।
ভদ্রতা ওরা বেশ ভাল জানে!! মনে মনে আমিও আহত হইলাম। কিছু না করলাম, একবার দেখে আসলে দোষ কি?!!!ভাল খারাপ তো নিজের কাছে। কে শুনে কার কথা।
যা দেখলাম তাতেই ডান চোখটা কেমন যেন লো-ব্যটারি মারতেছিল। মাফ চাই।
সামনে আর ও দিন পইরা আছে।
ভাবতেছি এইবার দেশে গিয়েই চক্ষু ডাক্তারের কাছে যাব!!!
রোমানিয়ার ‘মারপোল(MARPOL 73-78)’ , পোর্ট স্টেট কনট্রোল (PORT STATE CONTROL) জাহাজ পরির্শনে আসিল। ভাবলাম ইউরোপ । না জানি কি হয় । কিসের কি ।
পান্তা ভাতে ঘি।
এক হাজার ইঊরো নিয়ে সুরসুর করে চলে গেল। সব কেস খতম!! ঘুষ আর তেল যে কি জিনিস। অব্যর্থ ওষধ। স্থান কাল পাত্র সব সিস্টেমেই কাজ করে!! দোষ খালি বাংলাদেশের !!
বিঃদ্রঃবন্দর থেকে শহরের দুরত্ব প্রায় পাচ কিলোমিটার ।
ভাড়া নিল ৫০ডলার!! টাকাটা কি পুরাটাই জলে গেল?
গবেষণা করার সময় কই? জাহাজ ছাইড়া দিল! নেক্সট পোর্ট –বার্সেলোনা,স্পেন!
আহা!সবুর করি। মাইয়া মিলতেও পারে! উপসস….বানান ভুল হইছে। মেওয়া হপে!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।