তারিখ:১৯/০৯/২০১১ইং
ব্যাক্তি জীবন যেমন ভারসাম্যপূর্ণ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ দলীয় বা সামষ্টিক ক্ষেত্রেও ভারসাম্য অপরিহার্য । একজন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কোন জ্ঞানই রাখবেনা এটা কাম্য নয় । জ্ঞানের ক্ষেত্রেও যেমন ভারসাম্য দরকার ,অর্থব্যবস্থায়ও দরকার ভারসাম্য। গরীব যাতে আরো গরীব না হয় সে ব্যবস্থা থাকা দরকার । শিক্ষা ব্যবস্থা যাতে বেকার তৈরীর কারখানায় পরিণত না হয় ,দেশপ্রেম ও মানবপ্রেম বর্জিত নৈতিকতাহীন মানুষ সৃষ্টি না হয় অথবা শুধু বড়লোক শ্রেণীর জন্য শিক্ষা নির্দিষ্ট না হয়ে পড়ে সে ব্যবস্থা থাকতে হবে ।
উন্নতমানের হসপিটাল, বিপণীকেন্দ্রে আর বিশাল দালান গুলোতে কার উপস্থিতি প্রত্যাশিত? তারা কারা ? আর বস্তিতে নোংরা যাদের জীবন যাপন, ফুটপাতে ঘুমায় যে শিশু-কিশোর, গৃহপরিচারিকা যারা ধমক, শারীরিক ও মানসিক নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয় তারা কারা ? সম্পদ আয় ও বন্টনে ভারসাম্য থাকতে হবে । বাংলাদেশের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যও থাকা চাই । কোন দেশ বিশ্বে মানব নির্যাতন বা পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাচ্ছে আর অনেকে অস্বিত্বের লড়াইয়ে লিপ্ত, মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে। করুণ এই দৃশ্য কেন ? স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত্ব, নিজস্ব বাজার ব্যবস্থা, বিশ্বায়নের ছদ্মাবরণে মানুষের সুখ শান্তি ,সমৃদ্ধির কথা বলে,উন্নয়নের নামে ধ্বংস করা হচ্ছে ? কেউ শুধু লাভবান হবে আর কেউ শুধু ক্ষতিগ্রস্থ হবে, কেউ সামনে এগুবে কেউ শুধু পিছিয়ে পড়বে, কেউ আরাম আয়েশে বিলাসী দিন যাপন করবে আর কেউ নূন্যতম মৌল মানবিক চাহিদাই মেটাতে পারবেনা কিন্তু কেন? একটা ভারসাম্য আনতে হবে ।
কেউ ধর্মের কথা বলে বোমাবাজী করবে সন্ত্রাস করবে, অবৈধ কাজ বা অপরাধকে টাকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে আবার কেউ ধর্মীয় নিয়ম-নীতি, শিষ্টাচার, মোটেই মানবেনা চরম স্বার্থপর আচরণ করবে, কেউ ধর্ম মেনে শুধু মসজিদে তসবিহ টিববে,গরমেও বিশাল মোটা তাজা পাগড়ী পড়ে লম্বা দাড়ি নিয়ে ওয়াজ নসিহত করবে, দুনিয়া নিয়ে কোন বক্তব্য বিবৃতি থাকবেনা আবার কেউ শুধু দুনিয়ার স্বার্থ হাসিলের জন্য পরের কল্যাণ অকল্যাণ বিবেচনা করবেনা, ন্যায়-নীতি, নৈতিক-অনৈতিক, ভাল-মন্দ, যৌক্তিক-অযেৌক্তিক বাছ বিছার করবেনা- এটাতো গ্রহণযোগ্য নয়।
বসে বসে যেমন শুধুই তাসবিহ তাহলীল, যিকির, কুরআন তেলাওয়াত, নফল ইবাদত যেমন যৌক্তিক নয় তেমনি হালাল-হারাম, বৈধ অবৈধ বাছ বিছার না করে ইচ্ছা স্বাধীন মত স্বেচ্ছাচারী, উশৃঙ্খল বন্ধনমুক্ত জীবন যাপনও কাম্য নয়। ধর্ম কর্ম করলেই যে পেটে ভাত থাকবেনা, গায়ে পোশাক থাকবেনা, আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ব্যবহার করবেনা এটা ঠিক নয়। অলসতা, আরামপ্রিয়তা থাকবে অথচ ভোজন ভিলাসী হবে, গাড়ী বাড়ী নারী নেশায় বুদ হয়ে পড়ে থাকবে, সামাজিক দায়িত্ব কর্তব্য পালন করবেনা, মানুষের কল্যাণে আত্নত্যাগ করবেনা, সৃজনশীল বা গঠনমূলক কর্মতৎপরতায় জরিত হবে না –এটা অর্থবহ কোন জীবন নয়। শুধু ভোগ বিলাস বেশি আয় রোজগারের দান্ধায় থাকবে কোনটাই কাম্য হতে পারবেনা ।
একটি দলে শুধু রাজনীতিবিদ থাকবে অথচ অন্যান্য পেশার লোকজন থাকবেনা কারো স্বার্থ রক্ষা হবে কারো হবে না এটা প্রত্যাশিত নয়।
কারণ প্রত্যেক ব্যক্তিই মূল্যবান। সামষ্টিক পরিসরে কেউই উপেক্ষিত হতে চায়না। প্রশংসা চায়না, মান-সম্মান বাড়ুক চায়না, কেউ অমর্যাদা করুক এমনটা চায়- এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। বাবা,মা তার নিজের সন্তানের সামান্য সাফল্যে যত বেশি খুশি হন অন্যের সন্তানের বড় সাফল্যও সে পরিমান আনন্দ দিতে পারে না ।
একজন সন্তান তার পিতার অসুস্থতার কারণে যতটুকু যন্ত্রণা পীড়িত হন, কষ্টে দগ্ধ হন, অপরদিকে কেউ অ্যাকসিডেন্টে নিহত হয়েছে কিংবা আক্রমণ করে অনেককে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে এ সংবাদে কখনই অতটুকু ঐভাবে একই ধরনের কষ্ট পাননা।
অথবা আমার আঙ্গুলটা ছুড়িতে কেটে গেলে হয়তো পৃথিবীর বিস্তৃত পরিসরে এটা উল্লেখযোগ্য কোন ঘটনা হবে না, কারো কিছু আসবে যাবেনা- তবে আমার নিকট এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হবে। এটাই বাস্তবতা।
সুতরাং ব্যক্তিগত ব্যাপার হলেও বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখতে পারে অনেক বিষয় । সেক্ষেত্রে নেতৃত্বকে ব্যক্তি পর্যায়ে সুতীব্র থাকতে হবে ,না হলে সৃষ্টি হতে পারে অনাকাঙ্খিত সমস্যা সর্বদা সজাগ ও সচেতন থাকাই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।