ভেবেছিলাম ডায়েরী লেখা খুব সহজ একটা কাজ। প্রতিদিনের কাজকর্ম আর ঘটনাগুলোর কথা গুছিয়ে লিখে রাখব, ব্যস।
কিন্তু লিখতে গিয়ে বুঝতে পারছি, চাইলেও আসলে মনের সব কথা লিখে প্রকাশ করা যায় না। প্রথমত, মানুষের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে পুরোপুরি উন্মুক্ত না করা নিজেকে। সবসময়েই স্ব বা আপন বা একান্ত নিজের জন্য কিছু না কিছু রেখে দেবেই মানুষ।
দ্বিতীয়ত, মানুষের চিন্তার দ্রুতি এবং চিন্তার প্রকাশভঙ্গীর দ্রুতিতে বিস্তর ফারাক। আমরা যত দ্রুত চিন্তা করি কোনো মাধ্যমের সাহায্যেই আমরা তত দ্রুত আমাদের সেই চিন্তাকে প্রকাশ করতে পারি না। এই লেখাটি লেখার সময়েও আমাকে আমার মস্তিষ্কটি শুধু লেখা নামক শ্রমটির পেছনে ব্যয় করতে হচ্ছে, যা সময়ের অবশ্যম্ভাবী/অনিবার্য অপচয়। অনিবার্য বলছি এ কারনে যে, এই লেখাটি লেখার সময় আমাকে লেখাটি ‘লেখা’র পেছনেই মাথা খাটাতে হবে, অন্য উপায় নেই। অথচ ঠিক এই সময়টাতেই আমি অনেক দ্রুততর কিছু চিন্তা থেকে হয়ত বিরত থাকলাম, নয় কি?
তৃতীয়ত, সব চিন্তা প্রকাশযোগ্য নয়।
অবচেতন মন যা চিন্তা করে তার বেশীরভাগ অংশ জুড়ে থাকে ফ্যাণ্টাসী। ফ্যাণ্টাসী ভাষায় প্রকাশ করতে গেলে এটি হয়ে ওঠে পানসে। তাই মানুষের মনের কিছু কিছু চিন্তন চিরজীবন সবার অগোচরেই থেকে যায়।
আরও একটা বড় কারন আছে, লেখার অভ্যাসের অভাব। আপনি বা আমি যত সহজে চিন্তা করতে পারি (এখনো, দিন দিন কমে যাচ্ছে এটাও), তত সহজে লেখার অভ্যাস আসলে আমরা হারিয়ে ফেলছি।
আমরা যত না পড়ি, তার চেয়ে বেশী দেখি এখন, যত না বইয়ের পাতা উল্টাই তার চেয়ে বেশী web address এ ক্লিক করি, যত না কলমে লিখি তার চেয়ে বেশী copy-paste করি। আমাদের মননশীলতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার জগত পালটে যাচ্ছে।
আজকাল অনেকেই ব্লগকে তাদের রোজনামচা হিসেবে ব্যবহার করছেন। খুবই স্বাভাবিক। হয়তো একদিন আরো উন্নত কোনো মাধ্যম আসবে, যেটাতে মানুষ আরো বেশী স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।