বয়স ৩৩। বয়সের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পড়ছিল ফর্মও। এর ওপর নির্বাচকদের ‘হুমকি’। সার্বিক পরিস্থিতিতে শহীদ আফ্রিদির ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ‘শেষ’ দেখে ফেলেছিলেন অনেকে।
গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দল থেকে বাদ পড়েন আফ্রিদি।
দলে ফেরেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। ২০ ফেব্রুয়ারি সাবেক অধিনায়ককে ওয়ানডে দলে ফিরিয়ে আনার ঘোষণার সময়ই প্রধান নির্বাচক ইকবাল কাশিম জানিয়ে দেন, নিজেকে প্রমাণের জন্য এটাই ‘শেষ সুযোগ’ আফ্রিদির।
সাঈদ আজমলের বিকল্প স্পিনার হিসেবেই সেবার সুযোগ পেয়েছিলেন আফ্রিদি। তবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। প্রধান নির্বাচকের কথা অনুযায়ী, সেখানেই আফ্রিদির ক্যারিয়ারে ‘পূর্ণচ্ছেদ’ বসে যাওয়ার কথা।
আশঙ্কাটা জোরালো হয় গত মাসে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যান জায়গা না পাওয়ায়। আফ্রিদির ক্যারিয়ারে অনেকের শেষ দেখাটা তাই অমূলক ছিল না মোটেই।
ভাগ্যের চাকা খোলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তানের ব্যর্থতার পরই। জুনে বাংলাদেশে এসে আফ্রিদিও বলে যান, দলে ফেরার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। ২ জুলাই লাহোরে অনুশীলনের একফাঁকে বলে বসলেন, ‘এখনো আমি অনেক ক্রিকেটারের চেয়ে ভালো।
’
আফ্রিদির কথাটা মিথ্যে হয়নি। এক দিন পরই দলে জায়গা পেয়ে যান। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মতো এবারও নির্বাচকেরা জানালেন, এটাই আফ্রিদির ‘শেষ সুযোগ’। তবে নির্বাচকদের ক্রমাগত হুমকির জবাবটা আফ্রিদি দিয়েছেন গত রাতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। নিজেকে প্রমাণ করেছেন আফ্রিদি।
আর এমনভাবে প্রমাণ করেছেন, অদূর ভবিষ্যতে তাঁকে দলের বাইরে পাঠানোর ‘দুঃসাহস’ দেখানোর আগে বহুবার ভাবতে হবে নির্বাচকদের। ক্যারিয়ার নিয়ে নতুন করে হুমকি-ধামকি দেওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না।
২৩ রানে ৪ উইকেট নেই। স্কোরবোর্ডে ৪৭ রান তুলতে না তুলতেই সাজঘরমুখী শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যান। গত রাতে পাকিস্তান দলের শুরুটা কী বাজেই না হয়েছিল! ব্যাটসম্যানদের এমন অবস্থার মধ্যেই ক্যারিবীয় বোলারদের ‘যমদূত’ হিসেবে আবির্ভূত হন আফ্রিদি।
৫ ছক্কা আর ৬ চারে ৫৫ বলে করেন ৭৬ রান। ব্যাট হাতে ঝড় তোলার পর বল হাতে আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। মাত্র ১২ রান খরচায় তুলে নেন সাত উইকেট! বোলিং বিশ্লেষণটা এবার দেখুন। ৯-৩-১২-৭! ওয়ানডে তো বটেই, সব ধরনের ক্রিকেটেই এটি সেরা বোলিং আফ্রিদির। তাঁর স্পিন-বিষে নীল হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গুটিয়ে যায় মাত্র ৯৮ রানে।
২২৪ রান করেও পাকিস্তানের জয় ১২৬ রানে। জয়টা পাকিস্তানের না বলে আফ্রিদির বললেই অবশ্য বেশি লাগসই হয়।
নিজেকে প্রমাণ করেছেন। নির্বাচকদের সমুচিত জবাব দেওয়াও হয়ে গেছে। তবে গত রাতের পারফরম্যান্সকে শুধু দলে টিকে থাকার উপলক্ষ হিসেবে দেখতে রাজি নন আফ্রিদি।
ম্যাচ শেষে বললেন, ‘এই পারফরম্যান্স শুধু দলে টিকে থাকার জন্য নয়, বরং দলের জন্য কিছু একটা করা। আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি। পুরোনো ফর্ম ফিরে পেয়েছি। এর জন্য আমি ধন্যবাদ দিতে চাই দেশের মানুষকে। ’ সূত্র: রয়টার্স।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।