চাই শুধু নিরবিচ্ছিন্ন নিরপত্তা নিজেকে বিকশিত করার জন্য। । মাহবুব মিঠু।
ডিজিটাল বাঙলাদেশ নিয়ে আমাদের মধ্যে একটু আহা মরি ভাব তৈরী হয়েছে। কারো কারো ভাবখানা এমন যে পৃথিবীতে বাঙলাদেশই বুঝি এই ব্যবস্থা প্রথম চালু করছে।
কেউ কেউতো পকেটে ডিজিটাল ফোন নিয়েই ভাবছে ‘ডিজিটাল বাঙলা এখন আমার পকেটে, মুড়ির টিনটা ছুড়ে ফেলে চড়বো এবার রকেট ”। পাঠক, যাদের বয়স ত্রিশের উপরে তাদের গাজীপুর টু গুলিস্তান কিংবা এয়ারপোর্ট টু কালাচাদপুরের সেই ঢাউস সাইজের কচ্ছপ গতির মুড়ির টিন বলে খ্যাত বাসগুলোর কথা মনে থাকার কথা। অতিকায় ডাইনোসরের মতো বিশাল আকৃতির এই বাসগুলোর ঢাকার বুকে বিলুপ্তি ঘটলেও এখনো এগুলো দেশের আনাচে কানাচে দাবড়ে বেড়াচ্ছে। যা বলছিলাম, মুড়ির টিন ছুড়ে মেরে ঐ বাসের যাত্রীদের কপালে রকেট তো দূরের কথা এসি গাড়ীও জোটেনি। সিটিং বাসের চিটিং সার্ভিসে চড়ে এখন অফিস টু সাব লেটে যাতায়াত (পুনশ্চ: চিটিং সার্ভিস বলার অর্থ হচ্ছে, ভাগ্য অতি সু প্রসন্ন না হলে সিটিং সার্ভিসে উপরের রড ধরে মানবের পূর্ব পুরুষের ষ্টাইলে ঝুলে থাকা যাত্রী ছাড়া দেখা পাওয়া ভার।
সাব লেটের মানে হচ্ছে ঢাকা শহরে গরীব কিন্তু ভদ্রলোকেদের সাবলেটে থাকা ছাড়া কোন গতি নেই। বাজার করতেই মাস শেষ, বাসা ভাড়া দেবে কি করে)।
ডিজিটাল বাঙলাদেশ মানে কি শুধু ঘরে ঘরে কম্পিউটার দিয়ে ঝাকে ঝাকে কম্পিউটার অপারেটর তৈরী করা! নাকি সারা বাঙলায় ফোনের এ্যানালগ কানেকশনের পরিবর্তে ডিজিটাল কানেকশন সংযুক্ত করা দেয়া! আমাকে নির্বোধ ভাবলে করার কিছু নেই। এটা আমার কথা নয়। অনেকের ভাবনার কথা শুধু আঙুল নেড়ে টাইপ করে দিলাম।
ডিজিটাল পন্ডিতেরা বলেন, এটা হচ্ছে টেকনোলজীর আধুনিক এবং ফলপ্রসু ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো সেবাখাত থেকে সহজে জনগণকে সর্বোত্তম সেবা পৌছে দেয়া। এটা গেল ডিজিটাল বাঙলার কাজের ধরন কি হবে সেই কথা। কিন্তু এর দর্শন? এটা বুঝা আরো দুরুহ। এর মাধ্যমে নাকি জনগণের মুক্তি, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার রক্ষা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা, সুশাসন কায়েম ইত্যাকার রস মালাইয়ের মতো ভাল ভাল রাসালো (যাহা কিছু ভাল তাহাইতো রসালো) বস্ত উপহার দেয়া হবে। গরীবেরা রস মালাইয়ের রস চেখে না দেখতে পারলেও এর স্বাদটা অন্তত: বলতে পারে কেমন।
কিন্তু ডিজিটাল বাঙলার দর্শনের রস বোঝা বাঙালীর পক্ষে কল্পনা ছাড়া আর কি হতে পারে! যেখানে প্রতিনিয়ত কাদের, লিমনের মতো তরতাজা যুবকেরা দু:শাসনের বিষে আক্রান্ত সেখানে সু শাসনের রস চেখে দেখার সময় কোথায়? আর স্বচ্ছতা? কাদের কি চোখে ম্যাগনিফাইং গ্লাস লাগিয়েও বুঝতে পেরেছিল যে মাতাল পুলিশ অফিসার কেন তাকে চাপাতি দিয়ে কোপালো! জবাবদিহিতার কথা আর কি বলবো! এটাতো জনগণকে প্রতিনিয়ত দিয়ে যেতে হচ্ছে। যেমন: রাতে কাজে কিংবা বোনের বাসায় স্বাধীন দেশে বের হলেও প্রশ্ন:
’এতো রাতে কেন তুই বের হয়েছিস? কি মতলব?’
বাড়ী মতলবে হলে তো খবর আছে। এ ব্যাটা নিশ্চয়ই মতলববাজ। ২০ বছর আগে অনুদঘাটিত ডাকাতি কেসের আসামী নিশ্চয়ই।
যদিও তার বয়স এখন মোটে বার।
তাতে কি! বানানো যাবে নাকি নিদেন পক্ষে আঠারো? শালা যে মোটা। শরীর গোটা গোটা। ২০ বলেও কষ্ট করে চালানো যাবে ওটা।
বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। তাই জোর করে খাইয়ে খাইয়ে শরীরটাকে ফার্মের বলদ গরুর মতো মোটাতাজা করেছে।
এখন বোঝ ঠ্যালা। ঝামেলা হবে ম্যালা। গায় গতরে বাড়লেও বুদ্ধিতে পাকেনি। পুলিশের প্রশ্ন সে কি করে বুঝবে। পকেটে হাত দিয়ে কিছু দিয়ে দিলেইতো সব চুকে যায়।
এতো সহজ কথাটাই নাদান বালক বুঝতে পারে না। তাই তো সোজা শ্বশুর বাড়ী (যদিও ছেলের ২১ বয়স হয়নি) মানে লাল দালান।
এভাবেই ডিজিটাল নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অবিমিশ্র ধারনা বিরাজ করছে সমাজে। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাঙলাদেশের রূপরেখা কি সেটা উনারা জানলেও জনসচেতনতা তেমন তৈরী করতে পারেন নি। তাই সরকারের চিন্তা ডিজিটাল পর্যায়ে উন্নীত করা গেলেও জনগণ এখনো অ্যানালগ জীবনে পড়ে আছে।
এবার ডিজিটাল ফ্যান্টাসীর জগতটা একটু ঘুরে আসি চলুন। বিদেশে ডিজিটাল কাঠামোর সেবাটা কি রকম সেটা দেখুন। আপনি হয়তো কোন সেবা সেক্টরে ফোন করেছেন কোন সমস্যা সমাধানের জন্য।
গ্রাহক: ক্রিং ক্রিং ক্রিং
প্রথমেই রেকর্ডকৃত অপারেটরের গলা শুনতে পাবেন, “শুভ সকাল। আপনাকে ডিপার্টমেন্ট অব ওয়েলফেয়ারের পক্ষ থেকে স্বাগতম।
কাষ্টমারদের গুণগত সেবা প্রদানের জন্য আপনার কলটা রেকর্ডিং হতে পারে। আপনার আপত্তি থাকলে দয়া করে সেটা অপারেটরকে জানাবেন। আপনি যদি X কারণে ফোন করে থাকেন তাহলে দয়া করে ১ চাপুন, Y এর জন্য হলে ২ এবং Z এর জন্য হলে ৩ চাপুন। ’
এরপর কাষ্টমার প্রয়োজন অনুযায়ী ফোনের বাটন টিপলেন। আবারো রেকর্ডকৃত কন্ঠস্বর-
”ধন্যবাদ আমাদেরকে কল করার জন্য।
এই মুহুর্তে আমাদের সকল অপারেটর কাষ্টমার সার্ভিস নিয়ে ব্যস্ত আছেন। অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন”। এভাবেই চলতে থাকে প্রক্রিয়া। । আপনি সিংহভাগ কাজই বাসায় বসে, বিছানায় শুয়ে শুয়ে করতে পারেন।
এতে আপনার সময় বাচলো, গাড়ীর পেট্রোল খরচ কম হলো, পরিবেশ দূষণ কমালেন, রাস্তার জ্যাম নিরসনেও সহায়ক হলো।
বাংলাদেশে এই ব্যবস্থা গড়ার প্রথম সমস্যা হলো, আমাদের সবার ঘরে ঘরে ল্যান্ড ফোন নেই। ল্যান্ড ফোন নেবার জন্য যে টাকা এবং যতোদিন ধরে আপনাকে দৌড়াদৌড়ী করতে হবে তার চেয়ে না নেয়াটাই ভাল। মোবাইল ফোনে কথা বললে সময় সাপেক্ষ বিধায় বিল বেশী আসতে পারে। রাস্তায় পাবলিক ফোন দিলেতো সেরেছে! পরেরদিনই জায়গার মাল জায়গায় না খুজে কটকটির দোকানদারের ঝোলার মধ্যে খুজলে পেয়ে যাবেন।
ডিজিটাল বাঙলা গড়তে হলে মানুষের কম্পিউটারের উপর যেভাবে হোক নির্ভর করতে হবে। সেটা নিজে কিনে হোক কিংবা সরকারী ব্যবস্থাপনায় হোক। কিন্তু আমাদের দেশে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে কয়জনের ঘরে কম্পিউটার আছে সেটাই বিষয়। উন্নত দেশে সবাই যাতে এই সেবা পেতে পারে সে জন্য প্রতিটা কমিউনিটিতে কমিউনিটি লাইব্রেরীর ব্যবস্থা আছে যেখানে আপনি বই পুস্তক, ম্যাগাজিন থেকে শুরু করে বাচ্চাদের খেলনা যেমন ধার নিতে পারবেন ঠিক তেমনি ওখানে বসে ইন্টারনেট, কম্পিউটারের সুযোগ পাবেন ফ্রী ফ্রী। কোন টাকা পয়সা তো লাগবেই না বরং উল্টো ওখানকার কর্মচারীদের মিষ্টি ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে বাসায় ফেরে দে ঘুম।
আমাদের দেশে এটা হলে ঘটতো উল্টোটা। দেখা যেত এলাকার কোন প্রভাবশালী লোক কিংবা মাস্তান লাইব্রেরীর বড় সাহেবকে ম্যানেজ করে ভাগে জোগে ওখানে স্বল্প খরচে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোm© চালুর পাশাপাশি কম্পিউটার কম্পোজের ব্যবসা খুলে বসেছে। কিছুদিন পরে কম্পিউটারের এটা ওটা বেচা শুরু করে শেষমেষ পুরো মুরগীটাই রোষ্ট করে খেয়ে ফেলবে।
সত্যিকার ডিজিটাল বাঙলাদেশ গড়তে পারলে গণ মানুষের হয়রানী যে বন্ধ করা যেত সেটা আন্দাজ না করলেও চলে। যেমন এর মাধ্যমে ঘুসটাকে বন্ধ করা যেত পুরোপুরি।
ঘুসের ব্যপারটা সাধারণত: তখনই ঘটে যখন ঘুস দাতা এবং ঘুস গ্রহিতার মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ ঘটে। কিন্তু ডিজিটাল বাঙলাদেশ তো “ভাল আছি ভাল থাকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখোর’ মতো। যে চিঠিতে ডাক পিয়নের কোন কারবার নেই। চিঠি বিলি শেষে টাকা চাইবে কে! অঘটনঘটন পটিয়সী বিদ্যায় পারদর্শী বাঙালী হয়তো এরও একটা বিকল্প ব্যবস্থা বানিয়ে ফেলবে। কেমন হতে পারে সেটা?
গ্রাহক: ক্রিং ক্রিং ক্রিং
অপারেটরের রেকর্ডকৃত কন্ঠ স্বর, ‘দু:খিত, আপনার কলটা এই মুহুর্তে গ্রহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
আপনি দয়া করে X ব্যাংকের X এ্যাকাউন্টে X পরিমাণ টাকা পাঠিয়ে কথা বলার টোকেন নাম্বার সংগ্রহ করুন। নাম্বারটা মনে রাখুন এবং পুণরায় আবার ফোন করুন। ধন্যবাদ ‘
দেরী না করে গ্রাহক অন লাইন ব্যাংকিং এ ডিজিটাল ঘুসের কিছুটা পরিশোধ করে বাকীটা কাজ সারার পরে দেবার মনস্থ করে আবারো ফোন দিলেন।
গ্রাহক: ক্রিং ক্রিং ক্রিং
রেকডকৃত অপারেটর: দয়া করে আপনার টোকেন নাম্বারটা বলুন।
গ্রাহক: X X X X X X X
রেকডকৃত অপারেটর: দু;খিত আপনাকে সংযোগ দেয়া যাচ্ছে না।
পুরো টাকা পরিশোধ না করে বিশ্বাস ভংগের অপরাধে আপনার নির্ধারিত কাজটি তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হোল। এর মধ্যে পুরো টাকা পরিশোধ করে নতুন টোকেন নাম্বার সংগ্রহ করে পুণেরায় ফোন করুন। টা টা বাই।
আরেকটা গুরুতর সমস্যা আছে। অন লাইন সেবায় তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আমাদের দেশে আত্নীয় সম্পর্কগুলো এমন যে নাম, বাবার নাম এবং ঠিকানা জানা থাকলে তার চৌদ্দ গুষ্টির পরিচয় জানা মুহুর্তের ব্যাপার। যদিও এই সমস্যাটা কাটিয়ে উঠতে পারলে স্বজনপ্রীতি পুরোপুরি ঠেকানো যেতো। এবার শুনুন, অন লাইন সেবার বাঙলা সংস্করনে কি ঘটতে পারে-
অপারেটর: নাম বলুন
গ্রাহক: কালা মিঞা
অপারেটর: পিতা?
গ্রাহক: মোকসেদ
অপারেটর: ঠিকানা বলেন?
গ্রাহক: ২৪ মরনের পাড়, থানা: ধোলাই খাল জেলা: আল্লাহ বাচাও।
অপারেটর: আরে, আমাগো কালা ভাই নাকি!
গ্রাহক: তুমি কেডা বাপু?
অপারেটর: আমি মজনু, টোকেন পাড়ার মজনু।
এরপরে কি ঘটবে বুঝতেই পারছেন।
ঘন্টার পর ঘন্টা খাজুরে আলাপ চলতে থাকবে। অফিসতো নয় যেন অন লাইন আড্ডা! ওদিকে অন্য গ্রাহকেরা বারবার ফোন করেও সেই ভাঙগা রেকর্ড শুনতে পাবে,
‘এই মুহুর্তে আমাদের সকল অপারেটররা কাষ্টমার সেবায় ব্যস্ত আছেন। আপনার কল অপেক্ষায় আছে। ধৈর্য ধরে লাইনে থাকুন’।
ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যাবে।
অপেক্ষার পালা শেষ হবে না। বোঝ এবার ডিজিটাল ভোগান্তি কারে কয়!
এবার আসা যাক জরুরী সেবা সেক্টরে এর কি ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যেমন অনেক স্থানে জরুরী সেবা গ্রহণের জন্য দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করতে এ্যাম্বুলেন্স, পুলিশ এবং ফায়ার ব্রিগেডের জন্য খুব সহজ একটা নাম্বার থাকে যেন খুব দ্রুত ফোন করা যায়। বাঙলাদেশেও মনে করি হয়ে গেল সে রকম একটা কিছু। যেহেতু ডিজিটাল যুগে মানুষের মানসিকতাও ডিজিটাল পর্যায়ে উন্নীত হবে, তাই মনে করছি কেউ আর জরুরী সেবাখাতের লোকেদের সাথে এ্যানালগ মশকরা করবে না।
যেমন আগে ফায়ার ব্রিগেডে ফোন করে কেউ কেউ বলতো, আগুন লেগেছে আগুন। কোথায় জানতে চাইলে বলতো ‘আমার হৃদয়ে’। ভাবুন তো হৃদয় নিয়ে কতো বড় হৃদয়হীন ফাজলামো! এবার শুনুন জরুরী সেবা খাতে ডিজিটাল পদ্ধতির ছোয়া কিভাবে পড়তে পারে। ধরুন, আরিচার কোথাও একটা দূর্ঘটনা ঘটেছে। এখনতো রাস্তার চলমান গাড়ী থামিয়ে অ্যানালগ এ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে জোড়া তালি দিয়ে মানুষ রক্ষার চেষ্টা করা হয়।
দেশে ডিজিটালায়ন ঘটলে কি ঘটতো সেখানে-
আবুল নামের এক ব্যক্তি ফোন করে অ্যাম্বুলেস আসতে বলছে।
হ্যালো, আমি আরিচা রোডের কান্নি থেকে আবুল বলছি (কান্নি মানে কোণা থেকে। আমাদের দেশেতো রাস্তা ঘাটের নাম্বার থাকে না। তাই কোণা, ঐ মুড়া মানে ঐ পাশে, জল খাবারের নীচে ইত্যাকার বিশেষণ জোড়া লাগিয়ে নিজের অবস্থান বোঝাতে হয়)। জলদি কইরা অ্যাম্বুলেন্স লাইয়া আসেন।
একটা সিরিকাস এ্যাকসিডেন্ট হইছে। মানুষজন মারাত্নক আহত।
এ্যাম্বুলেন্স এলো। সাথে ডিজিটাল টিভির (ডিটি) সাংবাদিকরাও এলো সংবাদ সংগ্রহের জন্য।
ডিটি: হ্যালো আবুল সাহেব, আপনিই এই দুর্ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী।
বলুনতো দূর্ঘটনার কারণ কি?
আবুল: আবার জিগায়। আমাগো রাস্তা কি মিনাক্ষীর (বোম্বের নায়িকা) গালের লাহান পিছলা (মসৃন) নাকি যে চুমা দিয়া সরসর কইরা সামনে যাইবো গাড়ী। বুড়া মাইনসের মতো খর খইরা রাস্তায় কতোক্ষণ গাড়ী সামনে যাইবার পারে। তাইতো গাড়ী হালায় টায়ার্ড হইয়া পাশের ডোবায় ডুব দিছে।
ডিটি: ও আচ্ছা বুঝলাম, রাস্তার অবস্থা ভাল নয়।
তো, এই মুহুর্তে যোগাযোগ মন্ত্রীর কি করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?
আবুল: হালার সাংবাদিক বলদ নি! কি আর করবো, সোজা আল বিদা!
ডিটি: বলতে চাচ্ছেন ওনার পদত্যাগ করা উচিত। উনি কি সেটা করবেন?
আবুল: দ্যাখেন মিঞারা। ওনাকে আমি ন্যাংটো কাল……..
ডিটি: ল্যাংগুয়েজ প্লিজ! এভাবে সম্মানিত মন্ত্রীকে ‘ওটা’ করবেন না।
আবুল: আরে মিঞা, কথার মাঝে কথা। আমি কইতাছি যে, আমি ওনারে জন্মের পর থেইক্কা চিনি।
গন্ডারের সাথে ওনার একটা বিশেষ মিল আছে।
ডিটি: বোঝা গেল। আর না। মূল কথায় আসুন।
আবুল: আর যাই হোক, উনি একজন ভালো ফাইটার।
ডিটি: মানে, উনি একজন ফ্রিডম ফাইটার ছিলেন?
আবুল: কইতে দ্যান। আমাগো মন্ত্রী ভাল কইরা জানেন, কি কইরা সব সমালোচনাকে তুড়ি মাইরা ভাংগা চেয়ারে শক্ত হইয়া বইয়া থাকোন লাগে। ক্যান মিঞারা, ঘাড়ে ব্যথা পাইয়াও বুঝবার পারেন নাই? কি ফাইটটা দিলো সাংবাদিক ভাইগো লগে! কতো কিছুইতো লিখলেন। কই, কিছুই তো করবার পারলেন না।
(সাংবাদিকরা যে যার ঘাড়ে হাত দিয়া ব্যথাটা পুণরায় উপলব্ধি করার চেষ্টা করলেন)
আরে মিঞারা, ঐ যে সেদিন উনি আর ওনার বন্ধু মন্ত্রী দুইজন মিল্যা হগোল সাংবাদিগকো ঘাড় ধাক্কা দিয়া বাইর কইরা দিলো না।
আপনারাই তো খবরটা পত্রিকায় ছাপলেন।
সাংবাদিকরা বুঝে গেলেন বাতাস এবার তাদের দিকে ঘুরে গেছে। কথা এখন না বাড়ানোই ভাল।
ডিটি: আবুল ভাই আমাদের হাতের সময় শেষ। দেশবাসী ভাল থাকবেন।
সাক্ষাতকার দেবার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আমাদের এখনই অন্য একটা দুর্ঘটনার খবর সংগ্রহে মতলব যেতে হচ্ছে। রাস্তার যে অবস্থা। দোয়া করবেন আবুল ভাই যেন ভাল থাকি!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।