আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনভিপ্রেত......

যে ব্যথা দেয়,তারও তো ব্যথা থাকতে পারে-মাটির ময়না মনে হতে পারে নিজের কথা বাড়িয়ে বলছি , কিন্তু তা মনে হলেও কথাগুলো মিথ্যা নয়। বছর চারেক আগের কথা। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী অনেকেরই হয়তো সাদৃশ্যপূর্ণ অভিজ্ঞতা থাকতে পারে। প্রচুর ফোন আসতো অনাকাঙ্খিত বিভিন্ন রকম মানুষের কাছ থেকে। এসব এড়াতে অবশ্য কোন পদক্ষেপই তেমন ফলপ্রসূ হয়নি।

যাহোক একদিন অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে। ফোন ধরার পর অন্যপাশ থেকে আমার নাম্বার কিনা জিজ্ঞেস করে (আমার নাম বলে)। আমি তার পরিচয় জানতে চাইলে, ছেলেটি তার নাম বলে। কিন্তু নামটি আমার পরিচিত ছিল না। এটা আমি তাকে বলি এবং তার ফোন করার কারণ জানতে চাই।

উত্তরে (চিরাচরিত কথা) ছেলেটি বলে সে নাকি আমাকে ভালোবাসে। উত্তরে আমি তাকে ভদ্রভাবেই বলি যে আমি তাকে চিনি না এবং ভবিষ্যতে ফোন না করার অনুরোধ করি। তারপর ফোন কেটে দিই। তাতে অবশ্য লাভ হলোনা। আবার ফোন।

আমি রিসিভ করার পর ছেলেটি আবার একই কথা বলে,আমি কেন তাকে ভালোবাসি না (ইত্যাদি ইত্যাদি)। আবার ফোন করলে ফোন বন্ধ করে রাখব,এটা বলে কেটে দেই। আবার ফোন। এবার আমি সত্যিই ফোন বন্ধ করে রাখি। রাতে ফোন খুলে দেখি মেসেজ।

ফোন কেন বন্ধ করে রেখেছি,সে কোন কলেজে পড়ে,ফালতু ছেলে না এসব লিখেছে। এসএমএস পড়া শেষ না হতেই আবার ছেলেটির ফোন। রিসিভ করলাম। এভাবে বিরক্ত করার কারণ জানতে চাইলে সে আবার ভালোবাসার কথা জানায়,আর আমি তাকে কেন ভালোবাসিনা তা জানতে চায়। এইপর্যায়ে আমার প্রচন্ড রাগ হয় এবং আমি তাকে বলি যে তাকে আমি তাকে ভালোবাসি না এটুকুই যথেষ্ট।

এটা বলে ফোন কেটে দিয়ে আবার বন্ধ করে রাখি। পরদিন ফোন খুলি। সেদিন অবশ্য ফোন করেনি। মনে মনে ভেবেছিলাম বেঁচে গিয়েছি,কিন্তু দু তিনদিন পর আবার একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে। ফোন ধরার পর মেয়েকণ্ঠ শুনতে পাই,যে নিজের পরিচয় দেয় ছেলেটির বোন হিসেবে।

সেও তার ভাইয়ের মত উদ্ভট কথাবার্তা বলতে থাকে । তার ভাই নাকি আমাকে সত্যিই ভালোবাসে,আমি কেন তা বুঝছি না। পরে সে তার ভাইয়ের কাছে ফোন দেয়। ছেলেটি আমাকে বলে সে তার বাবাকে আমাদের বাসায় পাঠাবে। একথা শোনার পর আমার বিরক্তি আর রাগ সীমা অতিক্রম করে গেলেও যথেষ্ট ধৈর্যসহকারে আমি তাকে বলি আপনি যাকেই পাঠান না কেন কোন লাভ হবে না।

একথা বলে আমি ফোন রেখে দিই। আমার আসলে কি করা উচিত বুঝতে পারছিলাম না। এই ঘটনার কিছুদিন আগে একই ধরনের সমস্যার স্বীকার হয়ে নতুন সিমটি নিয়েছিলাম। তাই নাম্বারও বদলাতে পারছিলাম না। সেদিনের পর কিছুদিন ছেলেটি ফোন করা বন্ধ রাখে।

তারপর আবার ফোন করা শুরু। ফোন না ধরায় আমার বাসায় ফোন করে বিরক্ত করার কথা বলে। বাসার নাম্বারে ফোন করার কথা বলায় আমি খুব অবাক হয়েছিলাম। কারণ ছেলেটি কিভাবে আমার বাসার নাম্বার পেল ভেবে পাচ্ছিলাম না। এরপর ফোন করলে তার ফোন আমি রিসিভ করি।

এই ঘটনার মাসখানেক আগে একটি কোচিংয়ে ভর্তির সময় সেখানে ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার দিতে হয়েছিল। সেখানে আমি বাসার নাম্বারটি দিয়েছিলাম। তাতেই এই বিপত্তি । বাসায় কিছুই জানাইনি কারণ দুশ্চিন্তা করবে। এরমধ্যে আমার এক বন্ধুর কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম যে ছেলেটি খুব বেশি ভালো নয়।

তার ফ্যামিলিও তার ব্যাপারে যথেষ্ট উদাসীন। আমি তাকে ঠান্ডা মাথায় বলি যেহেতু আমার তার সাথে কথা বলার কোন আগ্রহ নেই, তাই এসব করে লাভ নেই। বলে ফোন রেখে দিই। ছেলেটি এবার এসএমএসের মাধ্যমে আত্নহত্যা করবে বলে আমাকে ভয় দেখায়। আমার এসএমএসটি দেখে প্রচণ্ড রাগ হয় ,পাশাপাশি কিছুটা ভয়ও লাগে।

আমি আবার ফোন বন্ধ করে রাখি। একটু উৎকণ্ঠা লাগছিল,কিন্তু কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। পরদিন ফোন খুলি। দুপুরের দিকে ফোন আসল একটা নাম্বার থেকে। রিসিভ করে দেখি ওই ছেলেটির বোন।

সে বলে তার ভাই বিষ খেয়েছে (আগের দিন),তখন হসপিটালে। মেয়েটি অবশ্য আমাকে হুমকি দেয়নি। সে জানায় তার ভাইয়ের তেমন গুরুতর কিছু হয়নি। কথাটা শুনে স্বস্তি পেলাম। মেয়েটি অবশ্য আমাকে বলেছিল আমি নাকি এমন না করলেও পারতাম।

আমি যে কি করলাম,আর কি হল,কিভাবে হল,কিছুই বুঝলাম না। আমি আমার এক কাছের বন্ধুকে দিয়ে হসপিটালে খোঁজ নিয়ে জানলাম,ঘটনা সত্যি। তারপর,আমি আমার নাম্বারটি বন্ধ করে নতুন নাম্বার নিই। আমার মনে এখনও একটাই প্রশ্ন,ছেলেটির সমস্যাটা কি ছিল ?কি জানি , আসলেই জানিনা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.