আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি বাঙ্গালি মানুষের ভারতিয় পোস্ট

আমি অনেক সহজ সরল বোকা একজন মানুষ। দুনিয়ার সাথে তাল মিলায়ে চলতে একটু কষ্ট হয় বৈকি। গত কয়েকদিন ধরেই পত্রিকায় দেখছিলাম যে বাংলাদেশের নোংরা পেক্ষাগৃহে এবার আসবে ভারতের ছবি । আসলে ভারতিয় রা আমাদের থেকে অনেক বেশি তাদের দেশ কে ভালোবাসে। আমরা বাসি কম।

আমারে যদি এই কথা বলার পর জুতা দিয়া মালা বানায়াও পড়ানো হয় আমার কোন আফসুস থাকবে না। কারন? আমি সত্য বলব । ভারতিয় রা তাদের দেশি ছিঃনেমা দেখার জন্য হল পর্যন্ত যায়। আর আমরা? ছুটি পাইলে হয় গার্লফ্রেন্ড নাইলে বয়ফ্রেন্ড এর পিছনে পিছনে ঘুরি। আর যদি কারও সৌভাগ্যবশত তা না থাকে তাহলে সে বন্ধু বান্ধব লইয়া ঘুরে নাহলে বাসায় বইসা বইসা ইংরাজি আর হিন্দি ছবি দেখে ।

আমি নিজেও তাই করতাম। ভারতিয় রা তাদের ফিল্ম জগতের প্রত্যেকটা শিল্পী কে পূজা করে । আর আমরা যদি আমাদের ফিল্ম জগতের কাউকে দেখি তাইলে বলি অই দেখ নায়ক যায় -হিজরা খান। রাইট । আমাদের দোষ নাই তো।

শালা তো হিজরা ই। আমরা যদি নায়িকা দেখি তাহলে বলি অই দেখ আটার বস্তা যাচ্ছে । আর নাহলে বলি-দোস্ত জানস অই টূট রে না কালকে হোটেলে দেখছি। আপসুস। নায়ক দেখে কারো পছন্দ হবে না আবার কেউ ওই প্রফেশন এ যাইতে ও চায় না।

একটা কথার জবাব দিয়েন যে যারা পত্রিকায় লিখছিল বাংলা পেক্ষাগৃহে চলবে ভারতিয় ছবি, তারা নিজেরা কি একটা বার হলে বসে বাংলা ছবি দেখছেন?তাদের মাঝে তো ঐ রকম কোন কিছুই লক্ষ্য করলাম না। আমি অনেক ছোট একজন মানুষ। ছোট মুখে বড় কথা মানায় না। আমি একজন পরিপক্ব লেখক ও না। তবে নিজেকে আমি খারাপ ভাবি না।

আত্নমর্যাদা হীন মানুষ হয়ে লাভ কি?ছোট বেলা থেকে বাপ মার কাছ থেকে শুনেছি যে বাংলা ছবি দেখা আর কুত্তার ঘেউ ঘেউ শোনা একি কথা। তাইলে বলেন আমি কি এতই বোকা যে টাকা খরচ কইরা হলের মধ্যে বইসা কুত্তার ঘেউ ঘেউ শুনুম? no need at all আমি বলেছিলাম যে আমাদের মধ্যে এমন মানুষ খুব কম ই আছে যে বাংলা ছবির দুই একটা ডায়ালগ জ়ানি না। । আমিও জানি --ছেরে দে শয়তান,চৌধুরী সাহেব,তুই আমার দেহ পাবি কিন্তু মন পাবি না - এই টাইপ। জানি, বাঙ্গালি মানুষ তো শরীরে কাপড় কম থাকলে দেখতে বড় মধুর লাগে আর রেইন ড্যান্স হলে তো কথা নেই।

চোখ তো সরবেই না। মাইয়া ছলাৎ ছলাৎ নাচতেছে আর আপনি দুচোখ ভরে উপভোগ করতেছেন। আহ! সে কি দৃশ্য । । হিন্দি ছবি তে এরকম আমরা প্রায় ই দেখি।

স্পেন,লন্ডন,থাইল্যান্ড, ইটালি যায়া শ্যুটিং করে। আর আমরা? ওই যে কাওরান বাজার এর পাশে এফডিসি আছে না? গোসল থেকে শুরু করে ক্রসফায়ার সব ই হয় ওইটার মধ্যে। বেশি কিছু না খালি আমাদের তখন আর দেখতে ইচ্ছা করে না। আমাদের সব কিছুতেই সমস্যা। সালমান শাহ থাকবেন কেয়ামত থেকে কেয়ামত পর্যন্ত আর বাকি সব পগার পাড়? আমরা যদি হলে যায়া ছবি ই না দেখি তাহলে হলের কি দোষ ? তারা তো বাংলা ছবি চালায়া টাকা পাইতেছে না।

। হিন্দি ছবি তো সবাই দেখে । সবাই তো শাহরুখ খান,সোলাইমান খান হইতে চায়। খুব কম মানুষের কাছেই শুনেছি যে সে সালমান শাহ হইতে চায়। আরে আমার সমস্যা টা তো ওই জায়গায়।

আমরা নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারতেছি। কেউ বাংলা ছবি হলে গিয়ে দেখবেন না কিন্তু হিন্দি ছবি দেশে আসলে বলবেন সরকার টাকা খেয়ে এই কাজ করেছে। আমাদের স্বভাব তো । হিন্দুরা কিন্তু আমাদের দেশে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী তারা যদি মাথাচাড়া দিয়ে উঠে তাহলে আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠী কেও হার মানাতে পারবে কারণ দেশটা এখন ইন্ডিয়া চালাচ্ছে। আসুন নিজের পকেট এর ১০০ টাকা খরচ করে সুস্থ ধারার বাংলা ছবি হল এ গিয়ে দেখি।

সাথে একটা ব্যানার নিয়ে যাই--আমরা হিন্দি ছবি চাই না। আমরা হারিয়েছি ত্রিশ লাখ মানুষ তা কি এই জন্যে ? আমি নিজে আজকে আমার পরিবার নিয়ে গিয়ে দেখেছি বাংলা ছবি আমার পৃথিবী তুমি--কই?আমার বাবা মা তো কোন কটুক্তি করে নি। আসলে টাকার অভাবে আমরা ভালো সিনেমা হল পাই না। ওই বসুন্ধরার সিনেপ্লেক্স এ আমরা ঠিক ই যেয়ে ইংলিশ মুভি দেখতে পারি সারা বছর । রমযান মাসেও আমার একটা বন্ধু রেসিডেন্ট এভিল দেখেছিল(ইফতারের আগে)।

কি লাভ? টাকা টা কই গেল?আমাদের সিএসই বিভাগে অধ্যয়নরত ভাই -বোনেরা যদি তাদের খানিকটা মেধা ছবির গ্রাফিক্স এ লাগাতেন তাহলে হয়তোবা আমাদের মতো মানুষদের কাছে ভালই লাগতো। আমরা খুব দেশপ্রেমিক। সুন্দরবনের নাম শুনে ১০০-২০০ মেসেজ পাঠিয়েছি অথচ নিজেদের দেশের মান ইজ্জত রক্ষা করার জন্য এতটুকু করতে পারব না?হলাম না হয় একটু নিচ। কি হবে? বন্ধুদের কাছে বা বান্ধবীর কাছে না হয় নাই বললেন লজ্জায়-এটা কি অনেক বড় কিছু?আমরা নিজেরা যে দিনকে দিন ভারতিয় হয়ে যাচ্ছি ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছেন?সবার ঘরেয় ভারতিয় কোন না কোন চ্যানেল চলবেই। ভাই , আকুল আবেদন করে আপনাদের কাছে লাভ নাই,আমার এ পোস্ট একটি পোস্ট ই থাকবে ,যারা পড়বেন তারাও কিছু না বলে চলে যাবেন ভয়ে যদি আমি আবার আপনাকে হলে না যেতে বলি।

বলব না। আমি নিজে অনেক হিন্দি ছবি দেখেছি। হিন্দি ছবিতে অনেক টাকা খরচ করে কারণ তাদের ছবি হয় ব্যাবসা সফল। আর আমাদের ছবি সফল ও হয় না তাই আমরা টাকআ ও খরচ করতে পারি না। একবার সুযোগ দেন আমাদের দেশের প্রযোজক দের ।

আমাদের দেশের সব ছবি এক ধরনের না। তেমনি সব মানুষ ও এক ধরনের না। এই বাংলা ছবি দেখে হচ্ছে নিচু স্ট্যাটাস এর লোকজ়ন ,মাঝারি স্ট্যাটাস এর মানুষ দের সামনে তো এর কথা তোলা নিষিদ্ধ। আর বড়লোক রা ?কারফিউ...। ।

শাহরুখ খান বাংলাদেশে আসছিল, তারে আমরা ৭০০০,১০০০০ টাকা দিয়া দেখতে গেছিলাম। চিন্তা কইরা দেখেন। । MY NAME IS KHAN-ছবিটা দেখে চার ফোটা চোখের পানি পড়ছিল। আজকে বাংলা ছবিটা দেখার পর ও চার ফোটা না হোক এক ফোটা হইলেও মানুষের পড়েছে।

আমি আতেল,অত কিছু বুঝি না,সাধারন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। আমাকে যদি ব্লগ টা পড়ার পর কেউ গালিও দেয় তাহলে আমি ভারতিয় ছবি বাংলাদেশে আসার পর যে বিপ্লব হবে তখন বলতে পারব-আমি এই বিষয়ের প্রতিবাদ সামুর ৮৮০০০০ ব্লগারের সামনে করেছিলাম। । আমি তখন গর্বিত বোধ করব। এখন আপাতত কিছু তিরস্কার শুনি এইটা মানবিক পোস্ট।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.