তবু মনে রেখো
আমার যখন দশ বছর তখন আমার বাবার হাতে খুন হন আমার মা । মায়ের অনেক ইচ্ছা ছিল তার মেয়ে বড় হয়ে কার মত দেখতে হয় তা দেখার । সে দেখে যায় নি তার মেয়ে ঠিক তার মতই হয়েছে । দেখেনি তার মেয়ে এখন রান্না করতে পারে ।
মায়ের মৃত্যুর পরের বছর বাবার ফাঁসি হয় ।
বাবার জন্য আমার খারাপ না লাগার কথা কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে তার জন্য আমার অনেক খারাপ লেগেছিল। অনেক কষ্ট লেগেছিল যখন ফাসির আগের রাতে বাবা অনেক কিছু বলতে চেয়েও গোঙানির মতো আওয়াজ ছাড়া কিছুই বের হয়ে আসে নি মুখ দিয়ে । আমার কেন জানি পরের সকালটা দেখার ইচ্ছা হচ্ছিল যে সকালে বাবার আর কোন অস্তিত্ব থাকবে না ।
বাবাকে মায়ের খুন করার কারন আমি জানিনা । আমার কখনও জানতে ইচ্ছাও হয়নি ।
কিছু কিছু জিনিস কখনো জানতে ইচ্ছা হয় না । মায়ের মৃত্যুটাও সেরকম আমার জানতে ইচ্ছা হয় নি। বাবা মায়ের মধ্যে আমি কখনও ঝগড়া হতে দেখি নি । ভীষণ ভাব ভালোবাসা দেখেছি আমি তাদের মধ্যে । এতো ভালবাসা হয়তো তাদের নিজেদেরও সহ্য হয় নি ।
বাবা মা আমাকে পৃথিবী দেখিয়েছিল কিন্তু পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটা শিখিয়ে যেতে পারেনি । আমি বেঁচে থাকতে জানিনা । জানলে কেন আমি আমার ছোট্ট সন্তানকে পৃথিবীতে আনার আগেই মেরে ফেলি ? আমি আমার ছোট সোনামণিকে নিজেই মেরে ফেলি । সেটা কেউ জানেনা ।
আমার দাদুমনি আমাকে বড় করে তুলেন বাবা মার চলে যাবার পর ।
তিনি আমার অতীত মুছে দেন । অনেক আদর করতেন । ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দেন । সে দাদুমনি অসুস্ত হয়ে চলাফেরা করতে পারতেন না । অনেক কষ্ট হতো তার ।
রাতে ঘুমাতে পারত না । আমার অসহ্য যন্ত্রণা হতো তার অবস্তা দেখে । আমি তাকে ঔষধ খাইয়ে চিরতরে ঘুম পারিয়ে দেই । কেউ জানেনা আমার দাদুমনিকে আমি খুন করি ।
কেউ জানেনা আমি দুইটা খুন করেছি আর আরেকটার পরিকল্পনা করছি ।
এখন যাকে করবো সে আমার পৃথিবী , যে আমার জীবনে পূর্ণতা দিয়েছে্ , যার জন্য আমি নিজেই নিজের কাছ থেকে হারিয়ে যাই কখন অচেতনভাবে, সেই আমার সোনামণির বাবা । তাকে হারানোর ভয়ে আমি কতোরাত ঘুমাতে পারি নি তাকে পাশে রেখেও । একটু দূরে গেলেও আমাকে বারবার ফিরে আসতে হতো তার কাছে কোন এক অজানা যন্ত্রণায় অথবা ভয়ে । আমি আর ভয়ে থাকতে চাই না । আমি এখন শান্তি চাই ।
তাকে খুন করে আমি চিরদিনেরমতো করে তাকে নিজের করতে চাই।
( সম্পূর্ণ কাল্পনিক ) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।