আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অসংলগ্ন লেখালেখি

গার্বেজ কিছু কিছু স্বপ্ন সবুজ একদিন সবকিছু ছেড়ে ঠিকঠিক আমি আমাজন জংগলে চলে যাব, এই যান্ত্রিক অসভ্য সভ্যতা আমাকে আর টানে না নাজলি, স্বর্গের চেয়েও বড় বেশি নিসর্গ চাই, নাজলি নিসর্গের মাঝে সর্গ চাই। দীপনাথ চেয়েছিলেন পাহাড়ে যেতে, পারেননি; কিন্তু ওভাবে তো হয়না দীপনাথ, হয় না; আগেও হয়নি কখনো, পরেও হবে না। ওভাবে হুটহাট করে হঠাৎ রাস্তা থেকে হারিয়ে যাওয়া যায় না। মা এর আঁচল টানে, বাবার স্বপ্ন টানে, শৈশবের মাঠ টানে, সবার ওপরে টাকা টানে। এত টান অগ্রাহ্য করে অবলীলায় নির্দ্বিধায় হেঁটে যাওয়া যায় না।

আমি যাব আমার মত করে সমরাস্ত্র সমেত সর্বা্ংগীণ প্রস্তুত সৈনিকের মত নির্লিপ্ত মন নিয়ে। পেছনের অনেক কটা সূতা ইতোমধ্যে কেটে ফেলেছি নাজলি, কেটে ফেলেছি। হয়তোবা আগামীকাল নয়, কিন্তু জেনে রেখ নাজলি খুব শীঘ্রই আমি চলে যাব, সবকিছু ছেড়ে সত্যি সত্যি আমি আমাজন জংগলে চলে যাব। এইসব সাদা, কালো, ধূসর রঙ আর থাকবে না নাজলি, শুধু থাকবে সবুজ রঙ, সবুজ পাতায় সবুজ পাপ থাকবে, সবুজ সূর্যের আলোয় জড়ানো হিংস্র সবুজ সাপ থাকবে, সবুজ মানুষ থাকবে, সবুজ স্বপ্ন থাকবে, সবুজ রমণীর কোলে অবুঝ শিশু থাকবে, এবং সেই সবুজই আমাদের ঠুকরে ঠুকরে খাবে। -হ্যাঁ, বুঝলাম,সব বুঝলাম, কিন্তু; তারপর ? -তার আর কোন পর নেই নাজলি, তারপর - সবই আপন লাঠির মাথায় জিঘাংসা আপন, জংলি মাটিতে রিরংসা আপন, বনের মাঝে জীবন আপন, জন্তুর মত মৃত্যু আপন।

আজীবন কিংবা আমৃত্যু। এইটা কি আদৌ কোন গল্প?? ভালই চলছিল। কিন্তু, কীভাবে কীভাবে যেন সেই দেশে ভাইরাস ছড়িয়ে পরল একটা। যার ফলে সাধারণ মানুষ ছাড়াও আরো দুই প্রজাতির প্রানীকে দেখা গেল যারা অবকাঠামোগত দিক দিয়ে ঠিক মানুষের মতই। আসলে এই ভাইরাস অনেক বাছবিচার করেই তার শিকারসমূহ কে বেছে নিল, কিংবা এমনও হতে পারে যে মানুষেরাই তাদের একঘেয়ে জীবন থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্য ভাইরাসের কাছে নিজেদের সঁপে দিল।

সাধারণ মানুষদের মাঝে যাদের বুদ্ধিশুদ্ধি একটু বেশি ছিল, রসিক সমাজ যাদেরকে ডিপ জলের মাছ বলতো তারা ধুমাধুম ভ্যাম্পায়ার হয়ে গেল। তাদের দাঁত বড় হয়ে গেল খুব, ক্ষীপ্রতা, জিঘাংসা বেড়ে গেল খুব, সূক্ষ্ণভাবে রক্তচোষা শুরু করে দিল খুব। তো সেই ভ্যাম্পায়ার গোষ্ঠী দিন নাই, রাত নাই, সারাদিন রক্তের জন্য ছোকছোক করতে লাগল। আর সেই ভ্যাম্পায়ার রা যাদের রক্ত খেল, যাদেরকে চুষে জীবনটাকে ৫০০ মিলি তরল দুধের প্যাকেট এর মত চ্যাপটা বানিয়ে ফেললো তারা হয়ে গেল জোম্বি, তারা হেলে দুলে চললো খুব, আকাশ বাতাস দেখলো খুব, আর ভ্যাবলার মত এক দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মুখটা হা হয়ে গেল। তো এইভাবে সেই দেশে তিন প্রকারের মনুষ্য কাঠামো বসবাস করা শুরু করে দিল।

তবে, চারিত্রিক বেশ কিছু ভিন্নতা থাকলেও একটা ব্যাপারে তারা সবাই একই অবস্থানে ছিল আর তা হল আজহারের স্বরূপ উদ্ঘাটনে বিফলতায়। আজহার একটা সস্তা বাঁশি হাতে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো, খুক খুক করে কাশতো আর ডানে বামে সামনে পিছনে হরেক কায়দায় মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে কি জানি এক সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা করতো। প্রচন্ড রক্তশূন্যতায় ভোগা আজহারের দিকে ভ্যাম্পায়ারেরা দাঁত তাক করার কোন স্পৃহা অনুভব করল না, সাধারণ মানুষ আজহারের এহেন নিস্পৃহতাকে মেনে নিয়ে আজহারকে তাদের দলের একজন ভাবার কোন কারণ পেল না, আর জোম্বিরা তাকে দেখে ভেংচি কেটে চলে গেল। তো, সেই সময়ে সেই দেশে ভ্যাম্পায়ারেরা চাইছিল আরো অনেক অনেক সাধারণ মানুষকে জোম্বি বানাতে, সাধারণ মানুষেরা চাইছিল চিতা বাঘের ক্ষিপ্রতা নিয়ে ভ্যাম্পায়ার হয়ে যেতে, আর জোম্বিরা ভ্যাম্পায়ার দের উপর প্রতিশোধ নেবার একমাত্র উপায় বের করেছিল ভ্যাম্পায়ার হয়ে যাওয়া, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তারা সিঁড়ি দিয়ে উঠার চেষ্টা করছিল খুব। আগে সাধারণ মানুষ হতে হবে, তারপর হতে হবে ভ্যাম্পায়ার, কোলের অবুঝ শিশু থেকে শুরু করে অশীতিপর বৃদ্ধ জোম্বিদের এক চোখে প্রতিশোধস্পৃহা জ্বললো, আরেক চোখ স্বপ্নে নীল হয়ে গেল।

এইভাবে নিজ নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য, স্বপ্ন পূরণের জন্য তারা দৌড়াতে লাগল খুব। অতঃপর, তারা অ-সুখে অশান্তিতে বসবাস করতে লাগল। আর, আজহার তখনো খুক খুক করে কাশলো বেশ, ফিক ফিক করে হাসলো বেশ, সম্ভবত তার সমীকরণের সমাধান সে পেয়ে গিয়েছিল। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।