ঘুম অনেক প্রিয় ছাত্রলীগ কর্তৃক সাংবাদিক নির্যাতন ও লাঞ্ছিতের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সাংবাদিক নির্যাতনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা । নতুন কমিটি ঘোষনার মাত্র দেড় মাসের মাথায় ৫ সাংবাদিক নির্যাতন এবং তাদের শারীরিক ও মানুষিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে রাবি শাখা ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা । সাধারণ শিক্ষার্থীর উপর ছাত্রলীগের হামলার ছবি তোলা, সংবাদ সংগ্রহ এবং ছাত্রলীগের চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন অপকর্মের সংবাদ প্রকাশ করার কারণে তারা সাংবাদিকদের সাথে এমন আচরণ করে আসছে। তাদের এইসব ঘটনা একের পর এক বিভিন্ন সংবাদ পত্রে প্রকাশিত হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নিচ্ছে না ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা নিরপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সর্বশেষ গত রোববার দুপুর ৩ টার দিকে বিশ্বাবিদ্যালয় সৈয়দ আমীর আলী আবাসিক হলের স্টোর রুম থেকে ১টি ককটেল উদ্ধারের সংবাদ সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে যায় রাজশাহীর দৈনিক লালগোলাপ’র বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিধি সরদার হাসান ইলিয়াস তানিম। উদ্ধারকৃত ককটেলের ছবি উঠানোর সময় কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ছাত্রলীগ কর্মী রুহুল আমিন বাবু (অছাত্র), আব্দুল আলিম (্আইসিটি), কামাল (রাষ্ট্রবিজ্ঞান ৪র্থ বর্ষ),আরাফাতসহ ১৫/২০জন ছাত্রলীগ কর্মী তার উপর অতর্কিত হামলা চালায় । এসময় ইট দিয়ে তার মুখ ও শরীর থেতলে দেয় তারা। সেখানে উপস্থিত গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য ও আবাসিক শিক্ষার্থীরা আহত সাংবাদিককে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করে।
রামেকের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করার পর আহত সাংবাদিকের আলট্রাসনো ও এক্সরে করা হয়। সে রামেক হাসপাতালে ৪দিন চিকিৎসাধীন ছিল। এ ঘটনায় আহত সাংবাদিক সরদার তানিম ছাত্রলীগের কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে মতিহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন।
সংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা কয়েক দফা দাবীতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি প্রদান করে এবং ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। এর আগেও সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে আরো কয়েকজন সাংবাদিক ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হন।
ছাত্রলীগের নির্যাতনে আহত সাংবাদিক সরদার তানিম জানান, ‘কোন কারণ ছাড়াই ছাত্রলীগ আমার উপর নির্যাতন চালিয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের কোন নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি‘।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর চৌধুরী মো: জাকারিয়ার সাথে দেখা করলে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে সাংবাদিক নির্যাতন হচ্ছে। অনেকে মারাও যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়েও সাংবাদিক নির্যতনের ঘটনা ঘটছে।
নির্যাতন কারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে‘।
একই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহানের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে দেখা করেননি।
ছাত্রলীগের এসব কর্মকান্ডের ব্যাপারে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আহম্মেদ আলী ও সাধারন সম্পাদক আবু হুসাইন বিপুর কাছে সাংবাদিকরা একাধিক বার অভিযোগ করলে তারা দোষীদের দল থেকে বহিস্কার বা শাস্তি মূলক ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা বলে। কিন্তু পরবর্তীতে এ ব্যাপারে তাদেরকে কোন পদপে নিতে দেখা যায়নি।
ফলে রাবি ক্যাম্পাসে সাংবাদিকের উপর নির্যাতন ও লাঞ্ছিতের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে।
সাংবাদিকদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের মদদ ছাড়া সাধারণ নেতাকর্মীরা এসব কাজ করার সাহস পাবেনা । ছাত্রলীগের হাতে সাংবাদিক নির্যাতন ও লাঞ্ছিতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রাবি‘র কর্র্মরত সাংবাদিকরা ।
রাবি প্রেসকাবের সভাপতি এরশাদুল বারী কর্ণেল বলেন, ‘বর্তমান সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনা । তারা একের পর এক সংবাদপত্র বন্ধ, সম্পাদককে কারাগারে প্রেরন ও দলীয় ক্যাডার দিয়ে সাংবাদিকের উপর হামলা করছে। ছাত্রলীগ তাদের মদদপুষ্ট হয়ে ক্যাম্পাসে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে‘।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।