আহ অমরত্ব, তোমার উষ্ণ ঠোঁটে রাখি ঠোঁট, চোখ বন্ধ করে সবটুকু আনন্দ ভোগ করি। তোমার উষ্ণতায় বারেবারে বিলীন হয়ে যাই, দিতে পারিনি কিছুই, শুধু নষ্ট করে যাই। পাহাড়ের চূড়ায় ধ্যানরত অবস্থায় বসে আছেন জ্ঞানী ব্যাক্তি। অনেকক্ষণ পর উঠে দাঁড়ালেন। তিনি নীচের সমভূমির দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।
মানুষ বেঁচে থাকার জন্য সারাটা জীবন বিক্রি করে দিচ্ছে সময়ের হাতে। তার চোখ বেয়ে অশ্রু নামে। তিনি অশ্রু মুছে তাদের জন্য প্রার্থনা করেন তাদের জন্য।
সারা দেশ থেকে চারজন মানুষ ঠিক করা হয়েছে, যারা জ্ঞানী ব্যাক্তির কাছে যাবে জ্ঞান অর্জনের জন্য। জ্ঞান অর্জন করে তারা সেই জ্ঞান পরে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেবে।
সবাই এসেছে তাদেরকে বিদায় জানানোর জন্য। পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার ও পানি নিয়ে তারা তাদের লক্ষ্যের দিকে যাত্রা শুরু করলো।
দীর্ঘ, বিপদসংকুল পথ। তারা ধীরে ধীরে আগাতে থাকে। পথে তারা অনেক বাধার সম্মুখীন হয়, কিন্তু চারজন মিলে সেগুলোর সমাধান করে।
অনেক পথ অতিক্রম করে তারা অবশেষে জ্ঞানী ব্যাক্তির আশ্রমে এসে পৌছায়। জ্ঞানী ব্যাক্তি তাদেরকে অভ্যর্থনা জানিয়ে, তাদের তার কুঠিরে নিয়ে যান। তিনি তাদের জন্য খাবার এবং বিশ্রামের ব্যাবস্থা করেন।
পরদিন ভোরে তিনি তাদের চারজনের সাথে বসেন। তিনি তাদেরকে তাদের আগমনের কারন জিজ্ঞাসা করেন।
তারা সবাই বলে যে তারা সবাই জ্ঞান অর্জন করতে এসেছে এবং এই জ্ঞান পরবর্তীতে তারা তাদের দেশের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে দেবে।
জ্ঞানী ব্যাক্তি তাদের কথা শুনে খুবই খুশী হন। তিনি তাদেরকে অত্যন্ত যত্নসহকারে জ্ঞান দান করতে থাকেন। ধীরে ধীরে সব বিষয়ে তারা জ্ঞান লাভ করে। জ্ঞানী ব্যাক্তি তাদেরকে তাঁর অর্জিত সমস্ত জ্ঞান দান করেন।
অনেক দিনের অধ্যবসায়ের ফলে তাদের জ্ঞান লাভ সম্পূর্ণ হয়। জ্ঞানী ব্যাক্তি তাদের বিদায় জানান। তিনি সবার জন্য প্রার্থনা করেন।
তারা চারজন অনেকদিন পর আবার ফিরে আসছে তাদের জনপদে, তাদের আপনজনের সাথে। পথ বিপদসংকুল, তারা অনেক সমস্যায় পতিত হয়।
কিন্তু এবার আর চারজন একমত হতে পারেনা। সবাই তার নিজ জ্ঞান অনুসারে সমাধানে পৌঁছায়। সবাই একমত না হওয়ায় তাদের সমস্যা সহজে সমাধান করতে পারেনা।
সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, তাদের চারজনের আগমনের জন্য। তার এসে পৌঁছায়।
সবার মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। এবার বুঝি তাদের সুদিন আসলো। পথশ্রমে ক্লান্ত চারজন বিশ্রাম নেয়।
তারা চারজন সবার মধ্যে জ্ঞান বিতরণ শুরু করে। কিন্তু দেখা যায় যে চারজনের চিন্তা ভাবনা ধীরে ধীরে চাররকম হয়ে যাচ্ছে।
তারা যদিও একজায়গা হতেই জ্ঞান আহরন করেছ, কিন্তু সবাই সেই জ্ঞানকে নিজের মত গ্রহণ করেছে এবং পরিবর্তন করেছে। এর ফলে তাদের দেয়া জ্ঞান চার রকম হয়ে গেলো। সারাদেশের মানুষ চারভাগ হয়ে গেলো। সবাই মনে করে সে যা বলছে সেটাই ঠিক। এভাবে জনগণের মধ্যে শুরু হয় বিভেদ।
একসময় এটা রূপ নেয় সংঘর্ষে। দেশে আর শান্তি থাকেনা। দেশের মানুষ যে আশা করেছিল, তা বৃথা হয়ে যায়। চির দুর্দশা নেমে এসে সেই দেশ, সেই জনপদে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।