আপনাদের সমর্থন আমাকে লিখার প্রেরনা যোগায়। লম্পট শিক্ষক পরিমল জয়ধরের লালসার শিকার ছাত্রীটিকেই উল্টো চরিত্রহীনা আখ্যা দিয়ে বের করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন অধ্যক্ষ হোসনে আরা। ৩রা জুলাই বসুন্ধরা শাখায় একটি বৈঠকে তিনি শাখা প্রধান লুৎফুর রহমানকে এ নির্দেশ দেন। এ সময় ছাত্রীর অভিভাবকরা প্রতিবাদে বৈঠক থেকে চলে যান। তবুও ক্ষান্ত হননি হোসনে আরা।
ওই ছাত্রী ও তার অভিভাবককেও হুমকি দেন। নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রীর পরিবার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে ২৮শে মে বেইলী রোডে ছাত্রী ও তার অভিভাবকদের ডেকে তিনি তাদের বলেন, এটা কোন ঘটনা নয়। এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই পারে। আপনারা চেপে যান।
অধ্যক্ষ বলেন, কিছু শিক্ষক এটা নিয়ে ইন্ধন দিচ্ছেন। আপনারা বরং ওইসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে বলেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, আবারও ওই ছাত্রী দু’দিন যৌন নির্যাতনের শিকার হলেও প্রথমে শাখা প্রধান লুৎফুর রহমানকে জানানো হলে তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। এরপর অভিভাবকরা মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোয় পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি ও অধ্যক্ষ হোসনে আরাকে জানান। কিন্তু কেউ পাত্তা দেননি।
প্রথমে ২৮শে মে ও দ্বিতীয় দফা ১৭ই জুন ওই ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হয়। ২৮শে জুন ছাত্রীর দাদা মুজিবুর রহমান ফোনে বিষয়টি অবহিত করেন রাশেদ খান মেননকে। এরপর ৫ই জুলাই আবার বিষয়টি জানালে রাশেদ খান মেনন গালভরা আশ্বাস ছাড়া কোন ব্যবস্থা নেননি। উল্টো তাকে বলেন, লিখিত অভিযোগ সবাইকে দিয়েছেন কেন? দ্বিতীয় দফায় ঘটনা জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হন অধ্যক্ষ ও শাখা প্রধান লুৎফুর রহমান। ২৮শে জুন বিকালে নির্যাতনকারী শিক্ষক পরিমল জয়ধর স্ত্রীকে নিয়ে লুৎফুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেন।
ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে লুৎফুর রহমানের কাছে পরিমলের পরিচয়ের বৃত্তান্ত চাওয়া হলেও তিনি দেননি। ৩রা জুলাই ওই ছাত্রীকে ডেকে অধ্যক্ষ হোসনে আরা ‘চরিত্রহীন’ বলে গালিগালাজ করেন। তার অভিভাবকদের সামনেই বলেন, ১৮ হাজার ছাত্রীর মধ্যে একজন চরিত্রহীন হলে তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেবো। ৪ঠা জুলাই হোসনে আরা প্রতিষ্ঠানটির বেইলী রোডে শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেও তিনি পরিমলের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।
আন্দোলনের প্রেক্ষিতে একপর্যায়ে পরিচালনা পর্ষদের একাংশ হোসনে আরাকে বরখাস্ত করে আম্বিয়া খাতুনকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়। কিন্তু ওইদিন বিকালেই ঢাকা শিক্ষাবোর্ড পরিচালনা পর্ষদই বাতিল করে এডহক কমিটি গঠন করে। এরপর মঞ্জু আরাকে অধ্যক্ষের চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়। হোসনে আরা তিন মাসের ছুটিতে যান। গত রোববার মহানগর হাকিম শামিমা পারভীন তার খাস কামরায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয় নির্যাতিত ছাত্রী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।