জীবন চলা মানে প্রতিক্ষন জীবনান্তের দিকে এগিয়ে চলা নূহার ছবিটা দেখলাম কি প্রাণবন্ত মিষ্টি চেহারা একটুও অসহায় মনে হয়না
অথচ এই ছবিটার সামনে আমার নিজেকে বড়ই অসহায় মনেহচ্ছে। আমরা কি ভয়ানক অক্ষম, এই শিশুটির নিশ্চিন্ত নির্ভরতার বিশ্বাসটুকু অক্ষুন্ন রাখতে। আমার মেয়ের এরকম হলে কোন শক্তিতে যে, বেচে থাকতাম ভাবতেও পারছিনা। মহান স্রষ্টা নেহার বাবা মা কে এই শোক কাটিয়ে ওঠার শক্তি দান করুন আমেন।
এবার আমার একটি অভিজ্ঞতার কথা না বলে পারছিনা ।
একদিন ট্রেনে ওঠার জন্য আশুগঞ্জ রেল ষ্টেশনে গিয়েছি ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে। ট্রেন লেট ছিলো তাই প্লাটফরম এর উপর হাটাহাটি করছি সময় কাটাবার জন্য। হাটতে হাটতে প্লাটফরমের এক প্রান্তে গিয়ে হাজির হলাম, জায়গাটা অন্ধকার, দেখলাম দুজন লোক প্লাটফরমের উপর বসে আছে, যাত্রী মনে করে তাদের কাছে এগিয়ে গেলাম ট্রেনের কথা জিজ্ঞেস করতে, কাছে যেতেই লোক দুজন উঠে দাড়াল এবং কোথা থেকে আরও দুজন লোক এসে আমাকে ঘীড়ে ফেলল। একজন তার লুঙ্গীর ভাজে আড়াল করা হাত বের করল। হাতে ইয়া লম্বা এক গরু জবাইএর ছুরি ।
ছুরি ধরা লোকটা বলল, একদম চুপ একটু টু শব্দ করলে গলা ফাক করে দেব। আমি দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে ছুরি আলাকে এক ধাক্কা মেরে দৌড় দিলাম কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে গিয়ে পড়লাম রেল লাইনের উপর আর ওরা এসে আমাকে ধরে ফেলল, ধরে প্লাটফরমের আরও দূরে নিয়ে গেল এবং আমার সাথে থাকা মানিব্যগ যার ভিতরে শুধু টাকা ছিলো তা নয় ড্রাইভিং লাইসেন্স, ক্রেডিটকার্ড, সীমকার্ড, এড্রেসকার্ড ইত্যাদি ইত্যাদি দরকারী কাগজপত্র ছিলো তা এবং মোবাইল ফোন নিয়ে চলে গেল। টাকা রেখে মানিব্যগটা ফেরৎ দিতে বললাম শুনলো না বরঞ্চ ধাক্কা দিয়ে দৌড় দেবার শাস্তি স্বরুপ দুই আঙ্গুল দিয়ে গলায় এমন চাপ দিলো যে আমার দম বন্ধ হয়ে মরার অবস্থা এবং নাক মুখ বরাবর চার পাচটা ঘুসি মারলো যাতে তাৎক্ষনিক আমি চিৎকার করে ওদের পলায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারি। এটা একটা ছিনতাই এর ঘটনা প্রতিদিনই অসংখ্যবার এমন ঘটনা ঘটছে অনেক ক্ষেত্রে অনেকের প্রাণও হরন করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের অবস্থান টা আসলে কোথায়,আমরা কি করবো ? এসব ক্ষেত্রে আপনি পুলিশের সহায়তা পাবেন ? ভুলক্রমেও না।
পুলিশ আসবে ঘটনা ঘটার অনেক পরে অথবা আপনি থানায় গিয়ে রিপোর্ট করলে তাও আবার ছিনতাই কেস পুলিশ নিতে চায়না তারপর হাজারটা প্রশ্ন আপনি ওখানে কেন গেলেন ওয়েটিং রুমে বেস থাকলেননা কেন ? ইত্যাদি ইত্যাদি অর্থাৎ পুলিশ জানে ওখানে কি হয় সুতরাং আমার দোষ আমি কেন ওখানে গেলাম এবার বুঝুন অবস্থা। তাহলে ঘটনার সময় আপনাকে রক্ষা করবে কে ? এর একটাই উত্তর যাদের সামর্থ আাছে তাদের স্বসশ্ত্র হওয়ার সুযোগ দেওয়া । তাহলে নিরশ্ত্র মানুষগুলি মুষ্টমেয় কয়েকজন সন্ত্রাসীর হাতে জিম্মী হয়ে থাকেনা। একজন অস্ত্রধারী আরেকজন অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে দাড়াবার আগে পাচবার ভাববে। নুহাদের গাড়ী থামাবার জন্য গাছ ফেলার সময় নিশ্চয়ই ভাবতো একাধিক গাড়ী আটকা পড়তে পারে, একাধিক গাড়ীতে অস্ত্র থাকতে পারে।
কিন্তু বাস্তবে কি আমাদের দেশে এটা সম্ভব ? পুলিশ ডাকাতির মালে ভাগ বসায় কিছুদিন আাগেই স্বর্ণ ডাকাতের কাছ থেকে স্বর্ণ রেখেদিয়ে পুলিশ ডাকাত ছেড়ে দেয়। আর আমাদের জন্য যাদের ভাবার কথা যারা আমাদের উছিলায় ক্ষমতায় যায় তাদের আমাদের কথা ভাবার সময় কোথায়। সুতরাং নেহারা মারা যাবে আমি আবার হয়তো কোন ছিনতাইকারীর পাল্লায় পড়বো যদি মারাযাই তাহলে হয়তো নেহার মতই নিভৃতে আড়ালে থেকে যাবে ঘটনাটা, আর জানাজানি হলে কিছুদিন হৈচৈ করে যথারিতি ভুলে যাবে সবাই সবকিছু। এটাই বোধহয় আমাদের নিয়তি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।