বিকট
বোজো চোখ। এলো রাত। এলোমেলো রাত এলোচুলে দাঁড়িয়ে তত্ত্বাবধান করবে তোমাদের ঘুম, স্বপ্ন, নাঘুমো চোখে কালশিটে এঁকে দেবে, ধার দেবে নিজের কালো রঙ। রাতপ্রহরী হয়ে যারা রাতের নিঃসঙ্গতা ঘুচাচ্ছে, তাদের অনেকেই শেষপ্রহরে এসে নেতিয়ে পড়ে। শুধু ঘুমোয়না রাত।
আসে রাত, যায় রাত, তার হাত ধরে আসে স্বপ্ন, দুঃস্বপ্ন। ভালো স্বপ্ন, খারাপ স্বপ্ন, সাইকো স্বপ্ন...
*
-প্যাক করে দিন
-সব একসাথে দেবো?
-হ্যাঁ
সে প্যাকেটটা হাতে নিয়ে বিষণ্ণ গুমোট রঙের নিয়নপ্লাবিত রাস্তা ধরে হেঁটে যায়। এই এলাকাটা খুব ছিনতাইপ্রবণ বলে সে দূরে ছুড়ে মারে প্যাকেটটা। একটা চিল ছো মেরে উড়ন্ত প্যাকেটটা নিয়ে হারিয়ে যায়। ছিনতাইকারীরা গুলি করে চিলটাকে নামানোর চেষ্টা করে।
ইদানিং খুব ডাকসাইটে লোকরা ছিনতাই করতে নেমেছে। প্রতিরক্ষা বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে আমলা, সচিব, মন্ত্রী সবাই এক হয়েছে সাধারণ ছিনতাইকারী, যেমন বেকার যুবক, কেরাণী বা ব্যবসায়ীদের সাথে । নিখুঁত টিপে এক গুলিতেই চিলটাকে প্যাকেটসমেত নামিয়ে ফেললো তাদের একজন। চিলটা খুব বিরক্ত হয়ে উড়ে গেলো আবার নতুন কোন প্যাকেটের সন্ধানে। ছিনতাইকারীরা প্যাকেট নিয়ে চলে যাবে নাকি বজ্জাত চিলটাকে আবার গুলি করবে নাকি প্যাকেটের মালিককে ধরে খানিকটা রগড়ে দেবে এসব নিয়ে যখন দ্বিধাগ্রস্থ, ততক্ষণে লোকটি আবার দোকানে ফিরে গেছে।
-প্যাকেট করে দিন।
-সব একসাথে দেবো?
-হ্যাঁ।
তার যাবার পথে এবার নতুন উপদ্রব হিসেবে আবির্ভূত হয় দুইটি মেয়ে। হাতে তাদের ধারালো অস্ত্র। সে মুগ্ধ হয় মেয়েগুলির ধারালো শরীর এবং অস্ত্র দেখে।
তারা কোন হুমকি ধামকিতে না গিয়ে অস্ত্র নাচাতে নাচাতে চলে যায় জোৎস্নাপ্লাবিত রাস্তা ধরে। নিয়নলাইটগুলো এই রাতের বিপুল চন্দ্র পরিক্রমার সাথে পেরে ইতস্তত পড়ে আছে এখানে ওখানে। একটু আগের খানিক বৃষ্টিতে মন্ড হয়ে কর্দম আকৃতি ধারণ করেছে তারা। পথ পিচ্ছিল। তবে মেয়েদুটো স্বচ্ছন্দে হেঁটে যায়।
তাদের অনুসরণ করতে গিয়ে পিছলে পড়ে সে। হাঁটু ছিলে যায়, তবুও এগুতে থাকে সম্মোহিতের মত।
*
-প্যাক করে দিব?
-নাহ! ছড়ানো ছিটানোই থাক। ওভাবেই নিয়ে যাবো। কিছু পড়ে গেলে যাক হাত গলে।
পরোয়া করিনা। হাহাহা।
অস্ত্রধারী সুদর্শনা মেয়েটির হাসি শুনে অপরজন বলে,
-এখনই এত হাসছিস একটু পরে যখন আসল মজা শুরু হবে তখন কী করবি?
-ও, বেঁধে ফেলেছিস?
-নাহ, বাঁধি নি। চরে বেড়াক এই বিশাল ঘরে। ক্যাট এ্যান্ড মাউস গেম বেইবি!
-রেটিং কত?
- R-Restricted।
যে দোকানদার ছোকড়ার কাছ থেকে প্যাকেট নিতে চাইলি ওর বয়স কত? আঠারোর কম হলে বিদেয় করে দে।
-যা ইচ্ছা হোক। এখানে অত নিয়ম মানার কী আছে। যাই হোক, লেট দ্যা গেম বিগিন! এ্যাই যে লোক, নাম কী তোমার?
-আমি নাম বলবোনা গেম খেলবো।
-ওকে।
প্যাকেটের মধ্যে কী?
-সেটা তো তোমরা ভালোভাবেই জানো।
-বাহ! তোমার তো অনেক বুদ্ধি! আমি জানিনা, আমার বোনও জানে, ঐ চিলটাও জানতো। ছিনতাইকারীগুলোই মনে হয় সবচেয়ে জ্ঞানী। ওরাও ঠিক জানে।
-তোমরা কী দু বোন?
-না তিন বোন।
আরেকজন সাজগোজ করছে যথাসময়ে এসে পড়বে।
-তোমার সামনে আসতে হলে কী আর সাদামাঠাভাবে আসা যায়? সে তো হবে ঘোরতর অন্যায়!
অন্যজনও আলাপচারিতায় অংশ নেয় শ্লেষ মিশিয়ে। বিশাল ঘরটাতে অনেক উঁচু সিলিং। কোথাও কোন আসবাবপত্র নেই। একটু কান পাতলেই শোনা যায় হিংস্র কামোন্মত্ত কোন জানোয়ারের হিসহিস আর অজস্র মানবকন্ঠের ফিসফিস।
বাতাস একটু জোরে বইলে ভালোভাবে শোনা যায়। আর নাসারন্ধ্রের কোষগুলোকে ভালোভাবে কাজে লাগালে কিছু একটার গন্ধ পাওয়া যায়। নাহ জাগতিক কোন কিছু নয়। অন্য একধরণের গন্ধ।
-কিসের যেন একটা গন্ধ পাচ্ছি।
তোমরা পাচ্ছোনা? লোকটা জানতে চায় দুই সুদর্শনা অস্ত্রধারীর কাছে।
-ধন্যবাদ প্রণোদনা দেবার জন্যে।
-ধন্যবাদ অনেক।
আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে দুই বোন লোকটার ওপর ঝাপিয়ে পড়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে। দুইজনের সম্মিলিত কোপে লোকটি নাকহারা হয়।
এখন রক্তের বোটকা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু ঐ লোকটি তা পাবেনা।
-সুন্দর নাক তোমার। গ্রীকদের মত খাড়া। এখানে তো এরকম দেখাই যায়না বলতে গেলে।
লোকটি ব্যথা এবং বেদনায় চিৎকার করে ওঠে।
-উৎসাহিত করার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ।
-অজস্র ধন্যবাদ।
মেয়েদুটো এবার এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে তাকে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর ক্ষতি না করে। আসল মজাটা শেষের জন্যেই থাক।
*
-প্যাক করে দিন
-সব একসাথে দেবো?
-হ্যাঁ
সুদর্শনা অস্ত্রধারী বোনত্রয়ীর শেষজন প্যাকেটটা নিয়ে হেঁটে চলে।
অন্ধকারে প্রায় কিছুই দেখা যায়না। কিন্তু তাকে ঠিকই ধরে ফেলে ছিনতাইকারীরা।
-প্যাকেটটা দিয়ে দাও সোনা।
-নাকি এই ধারালো অস্ত্রটা দিয়ে একটা কোপ দেবো?
ছিনতাইকারীরা চিন্তায় পড়ে যায়।
-কোপের বিনিময়ে প্যাকেট, রাজি?
-আচ্ছা প্যাকেটটার ভেতর কি আছে যে তোমরা এত করে চাও এটা?
-কেন তুমি জানোনা?
-না
-এটার ভেতর আছে স্বপ্ন।
মাটির খুব কাছ থেকে চিলটা উড়তে উড়তে ওদেরকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে।
-বাহ বাহ! ছিনতাইকারীরা আজকাল সোনা-গয়না বাদ দিয়ে স্বপ্ন খুঁজে বেড়াচ্ছে!
শ্লেষ প্রকাশ পায় মেয়েটির কন্ঠে।
-তা করবনা? আমরা হলাম এই অন্ধকার বিদঘুটে শহরের একমাত্র বাস্তব চরিত্র। তোমারতো অস্তিত্বই নেই তুমি, অলীক। এক কাজ কর ব্যাগের মধ্যে তুমিও ঢুকে পড়, স্বপ্ন দেখার উপকরণ হিসেবে তুমি অসামান্য!
-হাহাহা! এই ব্যাগ আমার দরকার নেই।
এই নাও!
সে আকাশের দিকে ছুড়ে দিল প্যাকেটটা। চিলটা যেন এরই অপেক্ষা করছিলো। নিমিষেই লুফে নিলো সেটা।
ছিনতাইকারীর দল হতাশ হয়ে বসে পড়ে। প্রায়ই এই বিদঘুটে বিষণ্ণ শহরে লোকজনকে পাওয়া যায় প্যাকেটসমেত, কিন্তু ও দিয়ে এ পর্যন্ত কোন লাভ হলনা।
আজকের প্রথম শিকারটা, যে লোকটার কাছ থেকে তারা কেড়ে নিয়েছিলো প্যাকেট, সেটা ছিলো শূন্য। লোকটা ছিলো স্বপ্নহীন, অথবা দোকানদারটা তাকে ঠকিয়েছে। দোকানদারটার ঠিকানা জানা থাকলে ভালো হত। কিন্তু এই ছোট্ট ঘোলাটে অন্ধকারের শহরে তন্নতন্ন করে খুঁজেও তারা দোকানটির হদীশ পায়নি। আজব এক শহর! সমবেত দীর্ঘশ্বাসে একই চিন্তার ভায়োলিন বাজে।
*
লোকটিকে ক্রমাগত আঘাত করে চলেছে তারা। তার কান কেটে নেয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। এখন দুইবোন তার সমতল বুকের ছোট্ট নিপলটায় খুঁচিয়ে আনন্দ পাচ্ছে।
-আমাদেরটা থেকে তোমারটা কত ছোট! হিহিহি!
আরেকজন লোকটার তলপেটের কাছে এসে ধারালো অস্ত্রটা দিয়ে একটা বিচিত্র অজানা মানচিত্র আঁকতে থাকে। অপরজন অস্ত্রটা দিয়ে চোখের পাতা কেটে ফেলে।
-তোমাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে! হিহিহি!
-আমার প্রতি কেন এত অত্যাচার?
অনেক কষ্টে লোকটি উচ্চারণ করে।
-বলব সোনা সবই বলব। আমাদের আরেক বোন আসুক, তারপর সব জানতে পারবে।
-টর্চারের ব্যাপারে তার সৃষ্টিশীলতা এবং দর্শন অত্যন্ত উঁচুমাপের। আশা করি তুমি উপভোগ করবে।
হিহিহি!
-ও এখনও আসছেনা কেন রে?
-কি জানি! আচ্ছা শোন, একটু ওদিকে চল ওর সম্পর্কে আমার একটা সন্দেহ আছে, তোকে বলব।
-আচ্ছা চল। আমারও কিছু কথা বলার ছিলো। এই যে ভদ্দরলোক আপনি রিল্যাক্স করুন, আমরা একটু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সেরে আসি!
*
আমার দুইবোনকে ইদানিং কেন যেন ভালো লাগছেনা মোটেও। তারা নিষ্ঠুর, নৃশংস, এজন্যে না।
ওদের সাথে খাপ খাওয়াতে পারছিনা। ওদের প্রাণচাঞ্চল্য অফুরান। প্রাণ! আমরা নাকি অলীক বস্তু, ছিনতাইকারীরা বলল। এই শহরে কী কোথাও আছে প্রাণ? এখানে কোন সবুজ গাছ নেই, ঘাস নেই, বৃষ্টি নেই, রোদ নেই -সারাক্ষণ একটা গুমোট অন্ধকার। মাঝেমধ্যে অবশ্য চাঁদ ওঠে।
তখন অনেক আলো হয়। অন্ধকারের কি প্রাণ আছে? আলোর কি প্রাণ আছে? আমার নিজেকে জীবিত এবং বাস্তব ভাবতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমি জানি, আমরা অলীক, অস্পর্শনীয়। আমাদের জন্যে বাস্তব পৃথিবীর সদ্য গোঁফ গজানো ছেলে, পড়ুয়া যুবক, বেকার, প্রতিষ্ঠিত চাকুরে সবাই এমনভাবে হামলে পড়ে যে বাধ্য হয়ে ওদেরকে টর্চার করতেই হয়। আমরা স্বপ্ন হন্তারক।
প্রতিদিনই কেউ না কেউ আসে ওখান থেকে, প্রতিদিনই দোকান থেকে সেই প্যাকেট-তারপর আমাদের দেখে মোহিত হয়ে পিছু ধরা, একদম পান্ডুলিপি মেনে চলছে সব। আজকে কী মনে করে আমিও ঐ দোকানে গেলাম। দোকানদার আমাকে দেখে অবাক হয়েছিল অনেক। আমি গ্রাহ্য না করে একটা প্যাকেট নিয়ে আসলাম। তবে ব্যাপারটা আমাকে পীড়া দিচ্ছিলো খুব।
এসব করা আমার মোটেও উচিৎ হচ্ছেনা। আমি অলীক, আমি স্বপ্নের দেবী, আমি অস্পর্শনীয়, আমি কেন ওসব কিনতে যাবো? তাই প্যাকেটটা ছিনতাইকারী আর চিলদের মাঝে রেখে চলে আসলাম। বেচারা ছিনতাইকারীরা! ওরা এখানে এসে আটকা পড়ে গেছে, আর বেরুতে পারছেনা। বোকারা কেন বোঝেনা এক মানুষের স্বপ্নের সাথে আরেক মানুষেরটা মেলেনা! ছিনতাই করে লাভটা কী! আর যৎকিঞ্চিত মিললেও ছো মেরে নিয়ে যায় চিলটা। আরে! আমি নিজেই তো একটা বড় বোকামি করে ফেলেছি! আমার প্যাকেটটা কেন খামোখা ছুড়ে ফেলে আসলাম? খুলে দেখা দরকার ছিলো ওখানে আদৌ কিছু আছে কি না।
না থাকাটাই স্বাভাবিক, কিন্তু যদি থাকতো! আমার স্যাডিস্ট স্বপ্নদেবী হয়ে কাজ নেই, স্বপ্ন যদি আমিও দেখতে পারতাম!
*
-এতক্ষণে এলি?
-হু!
-তোর সাথে আমাদের কথা আছে।
-বল
-তুই কি 'আমাদের' মত নাকি 'অন্যরকম' সত্যি করে বলতো?
-জানিনা!
মাঝখান থেকে আরেক বোন এসে এই শীতল কথোপকথনে বিঘ্ন ঘটালো।
-আরে এসব রাখ এখন! চল ভদ্দরলোককে নিয়ে কিছু মজা করি! চল চল!
-ইচ্ছা করছেনা কেন যেন।
এবার দুই বোনই তার দিকে হতবাক দৃষ্টিতে তাকালো। তারা হয়তোবা কিছু বলতে যাচ্ছিলো বা কিছু করতে চাইছিলো অথবা নিস্তব্ধতাই বজায় রাখতো, কিন্তু আসলে কি হত তা আর জানার উপায় থাকলোনা তৃতীয় বোনটি দ্রুত দুই কোপে অন্য দুজনের গলা থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলায়।
-সিলি! আমাদের প্রাণ'ই নেই আর তুই আমাদের গলা কাটছিস মারার জন্যে। 'যাহোক', গলার সাথে মাথাটা ঠিক করে লাগিয়ে সে কথা চালিয়ে গেলো, "তোর সাথে আমরা আর নেই। আমাদের সন্দেহই মনে হয় সত্যি। কেউ তোকে এত তীব্রভাবে কামনা করেছে যে তোর মধ্যে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে। এরকম ঘটনা এই প্রথম দেখলাম! বেচারা!"
-তুই সত্যি আমাদের আশাহত করলি।
আমরা চললাম।
তাকে রেখে চলে গেলো দুইবোন স্বপ্নভূকদের আস্তানায় হানা দিয়ে তাদেরকে মুগুরপেটা করবে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে।
*
রক্তাক্ত পড়ে আছে লোকটা। তৃতীয় বোন নির্বিকার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। হায় স্বপ্ন! স্বপ্নপূরণের জন্যে কত রক্তই না ঝরে মানুষের! সে লোকটিকে টর্চার করে স্বপ্ন দেখার সাধ ঘুচিয়ে দেবে নাকি তাকে চলে যেতে দেবে ভাবছে।
সে শুধু স্বপ্নের দেবী না, স্বপ্ন হন্তারকও। নাকি সে সাধারণ একটি মেয়েতে পরিণত হয়েছে? পরীক্ষা করার জন্যে নিজের হাতের আঙুল কেটে আবার জোড়া লাগিয়েছে। কিন্তু ঠিকমত লাগেনি। কোথাও একটা গড়বড় আছে। সে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ধারালো অস্ত্রটা লোকটির সামনে ঘোরাতে লাগলো।
-তুমি সেই ক্রিয়েটিভ নির্যাতনকারী তৃতীয় বোন?
-হু
-আমাকে এখন কী করবে
-বুঝতে পারছিনা
-কিন্তু আমি বুঝতে পারছি কি করতে হবে।
লোকটি অকস্মাৎ ঝাপিয়ে পড়ল তার ওপর। অন্য অলীক দুইবোন চলে যাওয়াতে তার ক্ষতগুলোও সেরে গেছে। সে এখন কামনাজর্জর, বলিষ্ঠ এক পুরুষ। সে মেয়েটির ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চিবুতে লাগলো দাঁত দিয়ে।
কামড়ের দমকায় মেয়েটির ঠোঁট ছিড়ে বের হয়ে এলো। মৃদু হেসে 'মেয়ে'টি তার ঠোঁট কুড়িয়ে নিয়ে লাগিয়ে নিল, কিন্তু ঠিকমত জোড়া লাগলোনা। সামান্য অসামঞ্জস্যের কারণে অনিন্দ্য সুন্দরী থেকে কুৎসিতে রূপান্তরিত হল সে।
-তুমি কী বাস্তব নাকি অলীক নাকি স্বপ্ন?
লোকটির গলায় উৎকন্ঠা।
-জানিনা।
-জানতে হবে!
লোকটি এবার উপগত হল তার ওপর।
-এভাবে হবেনা! ডানে তাকাও। একটা কাটাজর্জরিত শিশুকে দেখতে পাচ্ছোনা? আমি কিন্তু এখনও অলীক! আমার শিশুটাও হবে অলীক। আর সে তোমাকে তাড়া করে বেড়াবে, খোঁচাবে সারাক্ষণ তার কাঁটা দিয়ে। শান্তি পাবেনা।
-শান্তি পাবো কিসে আমি বুঝেছি। তোমাকে টুকরো টুকরো করে কাটলে আমার শান্তি হবে!
-আবার জোড়া লাগিয়ে নেব, সে আর এমন কী!
লোকটি নির্মম আক্রোশে ধারালো অস্ত্রটি দিয়ে কাটতে থাকে তাকে। কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলে, এবং অবাক বিস্ময়ে দেখে যে টুকরোগুলো আর জোড়া লাগছেনা। অলীক মেয়ে, স্বপ্নদেবীর একদম কাছাকাছি এসে গিয়েছিলো সে। সে অলীক থেকে বাস্তব হয়ে উঠেছিলো।
এখন কী করা যায় কী করা যায় কী করা যায়...
-স্যার প্যাকেট করে দেব?
চটপটে দোকানদার বিনীত ভঙ্গীতে জিজ্ঞেস করে...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।