ইতিহাসের পেছনে ছুটি তার ভেতরটা দেখবার আশায়
হিজলা উপজেলা জামায়াতের কার্যালয় দখল করে ছাত্রলীগের অফিস বানানো হয়েছে। এ সময় শহীদ বাকী উল্লাহ স্মৃতি পাঠাগার এবং জামায়াত অফিসে ব্যাপক লুটপাট ও তাণ্ডব চালানো হয়। অফিস অভ্যন্তরে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পোস্টার লাগিয়ে এবং অফিসের সামনে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, হিজলা উপজেলা কার্যালয়’ লেখা একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হয়।
গতকাল সকাল ১১টায় এ ঘটনা ঘটে। জামায়াতের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জামায়াত কার্যালয় ও পাঠাগারের সব আসবাবপত্র, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, পাঠাগারের বিভিন্ন পুস্তক ও পবিত্র কোরআনসহ অন্যান্য কাগজপত্র নদীতে ফেলে দিয়েছে।
পুলিশ এ দখল দৃশ্য দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে বলেও অভিযোগ তাদের। তবে এ ধরনের ঘটনার কথা অস্বীকার করে ওসি বলেন, হিজলা উপজেলায় জামায়াত-ছাত্রশিবির বা তাদের কোনো অঙ্গসংগঠনের অফিস নেই।
হরতাল চলাকালে গতকাল সকাল ১১টায় হিজলা উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগ যৌথভাবে হরতালবিরোধী একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এক পর্যায়ে টেকেরবাজার সংলগ্ন উপজেলা জামায়াত কার্যালয় ও সংযুক্ত শহীদ বাকী উল্লাহ স্মৃতি পাঠাগারে ভাংচুর করে।
তারা এ দুটি অফিসের সব আসবাবপত্র এবং কোরআন শরীফসহ অন্যান্য পুস্তক নদীতে ছুড়ে ফেলে। ভাংচুর ও তছনছ শেষে ছাত্রলীগের সাইনবোর্ড টানিয়ে এ অফিস দখল করা হয়।
হিজলা থানা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক নুরুল আমিন অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, হিজলা থানা ওসির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় জামায়াতের অফিস দখল করেছে ছাত্রলীগ-আ’লীগের ক্যাডাররা। অফিসে হামলা শুরু হলে সঙ্গে সঙ্গে ওসিকে জানালে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার বদলে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তিনি আরও বলেন, শহীদ বাকী উল্লাহ স্মৃতি পাঠাগারের নামে ক্রয় করা জমিতে আমাদের নিজস্ব স্থাপনা।
সেখানের একটি অংশ ভাড়া নিয়ে জামায়াতের থানা কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হয় দীর্ঘদিন থেকে। তবে হিজলা থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, আসবাবপত্র তছনছ বা জামায়াতের অফিস দখলের ঘটনা এই প্রথম শুনলাম। তিনি বলেন, হিজলা উপজেলা জামায়াত-ছাত্রশিবির বা তাদের কোনো সংগঠনের অফিসই নেই।
এদিকে হিজলা থানা জামায়াতের কার্যালয় এবং পাঠাগার দখলের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরিশাল জেলা ও মহানগর নেতারা। বিবৃতিদাতারা হলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরিশাল মহানগরীর আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মুয়ায্যম হোসাইন হেলাল, নায়েবে আমির বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ বজলুর রহমান বাচ্চু, সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম খসরু, জামায়াত বরিশাল পূর্ব জেলা আমির অধ্যাপক আবদুল জব্বার, সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, পশ্চিম জেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা হাবিবুর রহমান, নায়েবে আমির আলহাজ আবদুর রব, সেক্রেটারি মো. আজিজুর রহমান অলিদ।
বিবৃতিতে তারা বলেন, তথাকথিত বাকশালী শাসন ব্যবস্থা জাতি এখন প্রত্যক্ষ করছে। বাংলাদেশের কলঙ্কিত ইতিহাস রচনায় পারঙ্গম আওয়ামী লীগ তাদের আসল চরিত্রে ফিরে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদী এ দলটির সন্ত্রাসীরা আমাদের অফিস ও পাঠাগার জবরদখল করে নিল আর পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকল। এ অবস্থায় দেশের মানুষ অসহায়। নেতারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।