আসলেই কি লিমনের ব্যাপারে কোন সুরাহা হবে? আইন প্রয়োগ করে সরকার। সেখানে সরকারের মন্ত্রীই যখন বলেন যে তার কিছু করার নেই, এর মীমাংসা আদালতের মাধ্যমে হবে তখন দুঃখ না করে পারি না।
কারণ, সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর ছেলে আয়কর ফাঁকির মামলায় ১৮ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়েও রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পায়, খুনের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামীকেও রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করেন, কিন্তু বিনা কারণে অঙ্গহানি হওয়া এক কিশোর যার সামনে সারা জীবন পড়ে রয়েছে তার জন্য রাষ্ট্র কিছুই করতে পারে না। আমাদের এটর্নী জেনারেল বলেন, "আমাদের বিচার ব্যবস্থা স্বর্ণযুগে প্রবেশ করেছে"।
এই তাহলে স্বর্ণযুগ।
আমরা প্রতিবাদ করব, কেউ কেউ মানববন্ধন করব। ভারতের আনা হাজারের মত অনশন হয়ত কেউ করবে না, কিন্তু জোরালো প্রতিবাদ করবে। তারপর কোন একদিন আরো 'গুরুত্বপূর্ণ' কোনো কাজের কথা মনে পড়বে তখন সবাই তার কথা ভুলে যাব। কয়েক বছর পর হয়ত পত্রিকা অথবা টিভির কোন সাংবাদিক তাকে দেখতে যাবে, হৃদয়স্পর্শী কোন রিপোর্ট করবে। এর বেশী কিছু হবে না।
দেখবেন, এটাই হবে।
গত বিএনপি সরকারের সময় যখন র্যাব ক্রসফায়ার শুরু করে, তখন আওয়ামী লীগের আবদুল জলীল বলেছিলেন,"মানুষ হত্যার জন্য র্যাবের একদিন বিচার হবে"।
আজ তিনি কোথায়। বক্তব্য দেন না কেন? নাকি বলবেন,"আমি মানুষ মারার কথা বলেছিলাম, অঙ্গহানির কথা বলিনি। "
লেখক আনিসুল হক তাঁর কলামে আলেকজান্ডারকে করা ডায়াজেনিসের করা উক্তিটি করেন,"আপনি যা আমাকে দিতে পারেন না, তা থেকে আমাকে বঞ্চিত করতে পারেন না।
" এই কথাটাকে কি আমরা এইভাবে বলতে পারি না,"যা তুমি কেড়ে নিয়েছে তা তুমি নিজেও রাখতে পারো না। "
লিমনের যে ক্ষতি হল তা অপূরণীয়। রাশি রাশি সম্পদ দিলেও তার হারানো পার মূল্যের সমান হবে না। যে অপরাধী তার শাস্তি রাষ্ট্র দেবে কিনা তা বলতে পারি না। যদি দেয়ও তবে হয় কারাদন্ড নয়তো অর্থদণ্ড অথবা উভয়দন্ড।
এতেও কি ক্ষতিটা পূরণ হবে? এসব না করে কি ভিন্ন এক সাজা দেয়া যায় না, যে সাজা প্রাচীনকালে চালু ছিল। "চোখের জন্য চোখ" এই প্রাচীন আইনটি প্রয়োগ করা হোক। যে অপরাধি তার একটি পা কেটে ফেলা হোক। পা হারানোর বেদনা সেও বুঝতে পারুক। জানি এতেও লিমন তার পা ফেরত পাবে না, কিন্তু যে কষ্ট অপরাধী তাকে দিয়েছে একই কষ্ট অপরাধীকে দেয়া কি ন্যায়সঙ্গত না?
অনেকেই বলবেন, এটা মানবাধিকারের বিরোধী।
কেউ কেউ হয়ত বলবেন আমি মৌলবাদী। কিন্তু এক নিরপরাধের কান্না দেখে এসব মানবতার কথা শুনতে ইচ্ছা করে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।