ঝালকাঠির রাজাপুরের কলেজছাত্র লিমন হোসেনকে অস্ত্র আইনের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন খারিজ করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু হলো।
আজ সোমবার ঝালকাঠি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক কিরণ শংকর হালদার অব্যাহতির আবেদন ও অভিযোগ গঠনের শুনানি করেন। শুনানি শেষে এ অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন খারিজ করেন তিনি। আগামী ২৬ আগস্ট এ মামলায় সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
অভিযোগ গঠন আদেশের পর কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লিমন ও আদালতের করিডরে লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) ২০১১ সালের ২৩ মার্চ অস্ত্র আইনে লিমনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিল। ওই বছরের ৩ জুলাই লিমনের পক্ষে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছিল।
আজ আদালতে লিমনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন তার আইনজীবী নাসির উদ্দিন কবির, নাসিমুল হাসান, আককাস সিকদার ও মানিক আচার্য। রাষ্ট্রপক্ষে অব্যাহতি আবেদনের বিরোধিতা করেন এবং লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনান অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি এম আলম খান।
লিমনের আইনজীবী নাসির উদ্দিন কবির প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ২২২ ধারা অনুযায়ী একজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে হলে যে উপাদান থাকা প্রয়োজন, তা লিমনের বিরুদ্ধে ছিল না। অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য আইনে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে হলে সংশ্লিষ্ট আসামির কাছ থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করতে হয়। এ মামলায় লিমনের কাছ থেকে কোনো অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। আমরা এ আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য উচ্চ আদালতে যাব। আশা করি, উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পাব।
’
শুনানিতে লিমনের আইনজীবীরা বলেন, ‘২০১১ সালের ২৩ মার্চ বিকেলে বাড়ির কাছে মাঠে গরু আনতে গেলে সন্ত্রাসী মোর্শেদ জমাদ্দার ভেবে একাদশ শ্রেণীর ছাত্র লিমনকে র্যাব ধরে নিয়ে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। অচেতন অবস্থায় সে ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল। একজন অচেতন কিশোরের কাছ থেকে র্যাব তখন কীভাবে একটি পিস্তল উদ্ধার করল? পুলিশের অভিযোগপত্রে র্যাব ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে ১৫ মিনিট স্থায়ী বন্দুকযুদ্ধে ১৫টি গুলিবর্ষণের কথা বলা হলেও আলামত হিসেবে মাত্র একটি গুলির খোসা দেখানো হয়েছে। ’
ওই ঘটনার পর র্যাব-৮-এর তত্কালীন উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) লুত্ফর রহমান বাদী হয়ে লিমনসহ আটজনের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা করেন। একটি অস্ত্র আইনে, অন্যটি সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে।
অন্যদিকে লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম তাঁর ছেলেকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে র্যাবের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ১০ এপ্রিল একটি মামলা করেন। এ মামলায় পুলিশ র্যাবের সদস্যদের অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে হেনোয়ারা বেগম নারাজি আবেদন করলে তাও খারিজ করে দেন আদালত। নারাজি খারিজের বিরুদ্ধে ঝালকাঠির জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আগামী ১৩ আগস্ট রিভিশনের শুনানি হবে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।