আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের প্রেমময় জীবন-২

সৃষ্টি সুখের উল্লাসে।

ব্লগে যদি চরম অনিয়মীত কেও থাকে তাইলে আমিgd একজন। বছর খানেক আগে একটা অপচেষ্টা করেছিলাম শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আইনস্টাইন এর প্রেমময় জীবন সম্পর্কে একটু মাইস, কি-বোর্ড ধরতে। কিন্তু শেষ আর করতে পারি নি আলসেমির কারণে। আজ আবার ধরলাম অন্তত পোস্টটা পুরো করি।

কেও চাইলে প্রথম পোস্টটা পড়ে নিতে পারেন। বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের প্রেমময় জীবন-১ একসাথে মিলেভা-আইনস্টাইনঃ প্রথম বর্ষ খুব ভাল রেজাল্ট করলেন মিলেভা। তাই দ্বিতীয় বর্ষে একটি কোর্সে চান্স পেয়ে হাইডেলবার্গ পড়তে চলে যান তিনি। চিঠিপত্রে যোগাযোগ চললো আইনস্টাইনের সাথে। অচিরেই আইনস্টাইনের কাছে মিলেভা হয়ে উঠলেন ‘ডলি’ আর তার কাছে আইনস্টাইন ‘জনি’।

কিন্তু সব শুভর মাঝেই বোধহয় ছোট ছোট অশুভ থেকে যা্য়। আইনস্টাইন-মিলেভার সম্পর্কের মাঝেও ছোট ছোট অশুভ দান বাধতে থাকে। মিলেভাকে না দেখেই আইনস্টাইনের মা তার খুত ধরতে থাকে। এদিকে মিলেভাও দেখলেন আইনস্টাইন কেমন যেন বদলে যাচ্ছে। রান্নাবান্নাতো তাকে করতেই হয়, ইদানিং আইনস্টান তার কাপড় চোপড়ও ধুয়ে দিতে বলছে।

এই সংকটে দেখা গেল দু’জনেরই রেজাল্ট খারাপ হয়ে গেল। মেলেভা পেলেন ছয়ের মধ্যে ৪। ফলে তিনি উত্তীর্ণ হতে পরলেন না। আর আইনস্টাইন পেল ৪.৯। শিক্ষকগণ একেই ৫ ধরে উত্তীর্ণ করালেন।

সবাই মিলেভার রেজাল্টে বিস্মিত হল। যে মেয়ে কিনা আইনস্টাইনের সাথে পরিচয় হওয়ার আগে সর্বোচ্চ ৫.৫ পেয়ে প্রথম হয়েছিল সে কিনা পাশই করতে পারলনা? আইনস্টাইন বিয়ে করতে চান মিলেভাকে। কিন্তু মিলেভার সন্দেহ হতে লাগল। মিলেভা তার কাপড় ধুয়ে দেয়না বলে সে তার সব কাপড় মেরির কাছে পোস্ট করে দিয়েছে। তাই মেরি সম্পর্কে তার সন্দেহ দান বাধতে থাকে।

অসহায় মিলেভাঃ চাকরি খুঁজছেন আইনস্টাইন। পাচ্ছেন না। এদিকে মিলেভা একটি ল্যাবরেটরিতে অ্যাসিসট্যান্টের কাজ নিয়েছেন। পাশাপাশি পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। চাকরি খুঁজতে মিলানে গেলেন আইনস্টাইন।

কিন্তু ছুটিতে ফিরে আসেন মিলেভার কাছে। আনন্দফুর্তি করেন। ফলে মিলেভা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যঘাত ঘটল। শেষে বাবার শাষণে হুঁশ হলে এবার পুরোদমে লেখাপড়া শুরু করেন তিনি। কিন্তু বিধি বাম।

ঠিক এমনি সময় টের পেলেন তিনি সন্তানসম্ভবা। তাড়াতাড়ি চিঠি লিখলেন আইনস্টাইনকে। কিন্তু কোন উত্তর নেই। ইউরোপে তখন কুমারী মাতাকে অস্পৃশ্য মনে করা হতো । বার কয়েক চিঠি দেয়ার পরও যখন কোন উত্তর মিলল না, এমনকি একটি বারের জন্যও দেখা করল না তখন মিলেভা মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেন।

মিলেভা এবারও পাস করতে পারলেন না। এদিকে ১৯০১ সালের ডিসেম্বরে সুইস পেটেন্ট অফিসে কেরানির কাজ নিলেন আইনস্টাইন। ১৯০২ সালের জানুয়ারিতে জন্ম নিল তার প্রথম মেয়ে লিজারেল। যদিও আইনস্টাইন কখনো তার এই মেয়ের স্বীকৃতি দেননি এমনকি তার সম্পর্কে কোন খোজ খবরও নেননি। বিয়ের বন্ধনে আইনস্টাইনঃ চাকরি পাওয়ার এক বছরের মাথায় আইনস্টাইন মিলেভাকে বিয়ে করেন।

লিজারেলকে স্বীকৃতি না দেয়ায় সে বড় হতে থাকে তার নানির কাছে। এরই মধ্যে চাকরিতে উন্নতি হয় আইনস্টাইনের। দম্পতি হিসেবে তাদের প্রথম সন্তান হ্যান্স আইনস্টাইনের জন্ম হয় পরবর্তী বছর। ১৯০৫ সালে তার চারটি পেপার প্রকাশিত হয় এবং এই পেপারগুলোই পরবর্তীতে পৃথিবীকে বদলে দেয়। দ্রুত বিখ্যাত হয়ে যান আইনস্টাইন।

বিখ্যাত হওয়ার সাথে সাথেই তিনি ইউনিভার্সিটি অব জুরিখ থেকে পিএইচডি লাভ করেন ও ১৯০৮ সালে সেখানেই লেকচারার পদে যোগ দান করেন এবং পরের বছর প্রফেসর পদবী লাভ করেন। হঠাৎ করে আসা সাফল্যের ভিড়ে আইনস্টাইন মিলেভাকে সময় দেয়া একদম কমিয়ে দিলেন। সংসারে শুরু হল অশান্তি। মিলেভাও জানতে পারলেন এনেলি মেয়ার নামে একজনের সাথে আইনস্টাইনের সাথে প্রেম চলছে। মিলেভা এ নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করলেই রেগে যান।

সংসারের অশান্তি যখন চড়মে, তখনই জন্ম নেয় আইনস্টাইনের দ্বিতীয় সন্তান এডওয়ার্ড। এদিকে এনেলির গর্ভে জন্ম হয় কন্যা এরিকার। এলশা অধ্যায় শুরু এবং পরের বছর আইনস্টাইন যোগ দিলেন ইউনিভার্সিটি অব প্রাগে। পরিচয় হল সুন্দরী বিধবা এলশার সাথে। আবিষ্কার করলেন মিলেভার চেয়ে এলশা অনেক বেশি সুন্দরী।

একমাত্র এলশার জন্যই তিনি জুরিখে এক বছর শিক্ষকতা করে ১৯১৪ সালে চলে এলেন ইউনিভার্সিটি অব বার্লীনে। মিলেভার দিকে আইনস্টাইনের কোন নজর নেই। এলশাই এখন তার সব। এদিকে শুরু হয়ে গেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। মিলেভাসহ সন্তানদের পাঠিয়ে দিলেন জুরিখে।

নিজে রয়ে গেলেন বার্লিনে। মিলেভা বার বার আইনস্টাইনকে চিঠি দিয়ে পাঠালেও আইনস্টাইনের সময় নেই তাদের সাথে দেখা করার। এক পর্যায়ে ডিভোর্স চাইলেন মিলেভার কাছে। মিলেভা সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে ডিভোর্সে রাজি হলেন না। শেষ পর্যন্ত তাকে রাজি হতেই হল, তবে তিন শর্ত জুড়ে দিলেন যে, নোবেল পুরস্কারের টাকা তাকে দিলে তিনি ডিভোর্সে রাজি আছেন।

আইনস্টাইন পদার্থে নোবেল বিজয়টা তখন ছিল সময়ের ব্যপার মাত্র। আইনস্টাইনও রাজি হয়ে গেলেন। বিয়ের জন্য তৈরী হচ্ছেন আইনস্টাইন ও এলশা। ঠিক তখনই আইনস্টাইনের কাছে এলশার মেয়ে আইলসকে ভালো লেগে গেল। আইলসেরও ভাল লাগে তাকে।

একপাশে মা আরেক পাশে মেয়ে উভসংকটে পড়লেন আইনস্টাইন। তাই একদিন দুজনকেই ডেকে তাদেরকে ঠিক করতে বললেন কে আইনস্টাইনকে বিয়ে করবে। এলশার কাছে মনে হলো জীবনে এর চেয়ে বেড় অপমান তাকে কেউ করেনি। আইলস তার মায়ের এই সম্পর্কের কথা জানতো না। সবকিছু জানার পর নিজ থেকেই সে সরে যায়।

এদিকে ১৯১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন ডেতে মিলেভাকে তিনি ডিভোর্স দিলেন। এর ঠিক চার মাস পর এলশাকে বিয়ে করলেন।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।