মানুষ ভালবাসে স্বপ্ন দেখতে, কল্পনা করতে। আর জগতের যা কিছু মানুষ্য সৃষ্টি তার সবটাই শুরু হয়েছে কল্পনা থেকে। তেমনি কল্পনা থেকে Pemberton নামের এক রাসায়নবিদ আবিষ্কার করে ফেলে দুনিয়া মাতানো এক পানীয় যা সবার কাছে এক নামে পরিচিত। Pemberton তার বাড়ির উঠানো বিভিন্ন রসায়নিক দ্রব্য নিয়ে নানা রকম কাজ করতো। কিন্তু কিছুতেই স্থির হতে পারছিলনা।
তার মন পরে ছিল এমন একটা কিছু করার দিকে যা মাতিয়ে দেবে সারা পৃথিবীকে।
আটলান্টার জর্জিয়ায় এক দরিদ্র পীড়িত অঞ্চলে তার জম্ম। আজম্ম লড়াই করেছে দারিদ্রতার সাথে। কাজ করত বিভিন্ন কেমিষ্ট শপে। জেকবস নামের একটি ফার্মেসীতে কাজ করার সময়ই তিনি আবিস্কার করে ফেলেন এক যুগান্তকারী পানীয়, যা আজ সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে এক নামে পরিচিত।
অনেক আশংকা, ভয় আর তারচেয়ে বেশী উদ্দীপনা নিয়ে সেই কোমল পানীয় নিয়ে বসে পরে রাস্তার ধারে। সম্বল বলতে কিছু গ্লাস, একটি কেতলি, জগ আর একটি তে-পায়া টুল। শুরু হল পথ চলা। মাত্র ৫ সেন্টের বিনিময়ে তা বিক্রি করতে থাকলো। গড় বিক্রি প্রতিদিন মাত্র ৯ গ্লাস।
সময়টা ১৮৮৬ সালের মে মাসের দিকে।
এভাবেই চলতে থাকে কিছুদিন। এরপর সে তার পানীয়ের নামকরন করেন “Concocted Caramel-Colored Syrup” নামে। Pemberton- এর একজন সহযোগী ছিল যিনি একজন হিসাব বিশারদ, সে তাকে পরামর্শ দেয় এর একটি ছোট্ট সুন্দর নাম দেয়ার জন্য। যে নাম আজ সারা পৃথিবীজুড়ে।
প্রথম বছর সে বিক্রি করে মাত্র ২৫ গ্যলন। এভাবে চলতে থাকে আরও পাঁচ বছর। এর মধ্যে এটি মোটামুটি জনপ্রিয়তা পায় এবং মানুষ তা তৃপ্তিভরে আগ্রহের সাথে পান করতে থাকে। ১৮৯১ সালের দিকে এটাকে সে কোম্পানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এবং নামকরন করেন “Atlanta Entrepreneur Asa G.” নামে। সে তার পানীয় বিক্রির জন্য নানা রকম চেস্টা করতে থাকে।
কারন তার এলাকায় দরিদ্র মানুষের বাস ছিল বেশি। সে একসময় চিন্তা করে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রয় বাড়ানো যায় কি না। এবং বিজ্ঞাপন দিয়ে ফেলে ৭৬.৬৯ ডলার খরচ করে কিন্তু এর বিপরিতে আয় করে মাত্র ৫০ ডলারের মতো। সে হতাশ হয়ে আশা ছেড়ে দেয়। হতাশা আর কষ্ট যখন তাকে জড়িয়ে ধরে তখন Candler-এর কাছে প্রস্তাব পায় ২৩০০ ডলারের বিনিময়ে কোম্পানীটি চালানোর।
সে Candler এর প্রস্তাবে রাজি হয়ে তাকে চালানোর অনুমতি
দেয়।
Candler এর ছিল ব্যবসা পরিচালনার অভিজ্ঞতা যেটা কাজে লাগিয়ে দ্রুত বাজার বৃদ্ধি করতে থাকে Pemberton এর আবিষ্কৃত পানীয়। বাজার বৃদ্ধি পেতে পেতে ছড়িয়ে যায় বিভিন্ন টেরিটোরি এবং রাজ্য থেকে রাজ্যে।
১৮৯৩ সালের জানুয়ারী মাসে এর দ্রুত সম্প্রসারনকে মাথায় রেখে U.S. Patent office থেকে এর Patent করিয়ে নেওয়া হয়।
১৮৯৪ সালে তাদের সফলতার আরেক মাত্রা যুক্ত হয়।
তাদের Syrup কারখানা Atlanta-র বাহিরে ডালাসে স্থানান্তর করা হয়।
১৮৯৯ সালে এর বিক্রি অনেক বেশি বেড়ে যায়।
সফলতা থেমে থাকেনি কিংবা আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাদেরকে। তাদের দেশ আমেরিকা ছাড়িয়ে তা ছড়িয়ে পরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। ১৯০৬ সালে Cuba এবং Panama তে রপ্তানীর মধ্যে দিয়ে তাদের আন্তর্জাতিক বাজারে পথ চলা শুরু হয়।
১৯১৫ সালের দিকে তারা Root Glass Company –কে দ্বায়ীত্ব দেয় তাদের পানীয় কে বোতলজাত করার জন্য বোতল তৈরীর। এতে তৈরী হয় সফলতার আরও এক ধাপ। ১৯১৭ সাল নাগাদ এর বিক্রি দাড়ায় ৩ মিলিয়ন বোতল প্রতিদিন.......। এবং ১৯১৯ সালে আয়ের পরিমান দাঁড়ায় ২৫ মিলিয়ন ডলার।
কিন্তু আবার পরিবর্তন।
১৯২৩ সালে কোম্পানীটি ২৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে হস্তান্তর হয় Mr. Woodruff এর কাছে, যে তার ছেলেকে এটা উপহার হিসাবে দেয় যদিও পরবর্তী ছয় বছর Woodruff নিজেই এর President ছিলেন।
Woodruff ছিলেন আরও একধাপ চতুর। তার দূরদৃষ্টি আর চাতুরতায় এই পানীয় আর দ্রুত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। সে স্কুল, কলেজ ও নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোম্পানীর পক্ষ থেকে অনুদান দিতে শুরু কর। আমেরিকান আর্মীদের কাছে বিনামূল্যে সরবরাহ করে প্রায় ৫ বিলিয়ন বোতল আর এই সমস্ত কর্মকান্ড তাকে এনে দেয় ব্যাপক পরিচিতি।
তাকে ভূষিত করা হয় “The Boss” খেতাবে।
সূত্র ঃ bdbrands.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।