চোখের দেখায় দেখছ যাকেহয়তো কোন মরীচিকা, আঁধার পথেখুঁজছ যাকে হয়তোকোন বিভীষিকা। তাই বারণ করি বারে বারে এসো না এই অন্ধকারে হৃদয় যে মোর কৃষ্ণগহ্বর হারিয়ে যাবে চিরতরে........... মানুষ যে জগতে বাস করে সেই গোলাকার পিণ্ডের ভেতর রয়েছে আরও হরেক রকমের জগত যার মধ্যে একটির অতি সুপরিচিত নাম হল ফেসবুক। যুগে-যুগে কত সাধারণ-অসাধারণ, বিখ্যাত-কুখ্যাত সব আইডির জন্মই না এখানে হয়েছে। সেই সাথে ফ্রিতে সন্ধান পাওয়া গিয়েছে কত যে নাটকীয়তার, তার ইয়াত্তা নেই।
অন্যদিকে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে জন্ম হয়েছে নানান ক্যাটাগরির ফেইক আইডির যারা নিজ দক্ষতা গুনে একেক টাইপের মানুষকে বোকা বানিয়ে ধোঁকা দিয়েছে যাদের মধ্যে অন্যতম হল ‘লুচি মানব’
এমনি ভাবেই হাজারো ফেইক আইডির ভিড়ে একদিন এক কাকডাকা খটমট গ্রীষ্মের দুপুরে জন্ম হয়ে গেল নাম না জানা এক ফেইক আইডির।
তার না ছিল কোন বাবা-মা , না ছিল কোন ভাই-বোন আর না ছিল কোন আত্মীয়। এক কথায় একটি পরিপক্ক বেওয়ারিশ আইডি যার জন্মরহস্য হয়ত কারো জানা ছিল না। আইডি নিজের চেহারা প্রকাশ করার জন্য অনেক ভয় পেত যদি অন্য কোন আইডির সাথে তার মিলে যায় ,যদি ঐ ছবির প্রকৃত মালিক কপিরাইট ভঙ্গের কারনে অভিযোগে তার নামে মামলা করে বসে। না, না, মোটেও এমন রিস্ক নেয়া যাবে না। এরপর অনেক ভেবে চিন্তে নিজের ইনফোগুলো সাবমিট করলো তবে সবই যেন কেমন উলট-পালট।
কেউ সহজে বুঝে উঠতে পারবে না যে ইহা পুরুষ নাকি মহিলা। তারপরও আইডি তো আইডি আর নবজাতক আইডির কাজতো খালি ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠানো।
আজ কয়েক সপ্তাহ হয়ে গেল কিন্তু কেন জানি রিকুয়েস্ট খুব কম একসেপ্ট হল। আর হবেই বা কেন,আইডির কপালে ‘লাওয়ারিশ’ শব্দ যে অবলীলায় লিখা ছিল। কেউ কি জেনে শুনে লাওয়ারিশকে নিজের বন্ধু বানাবে নাকি?মাথা খারাপ।
কিন্তু এদিকে তো আইডি মহা টেনশনে টেনশিত হয়ে গেল। কোন মতেও বুঝতে পারছিল না কেন এমনটা হল। এরপর শুরু করলো উরাধুরা রিকু পাঠানো, তাতে কি কিছুক্ষন পরে দেখে ২ দিনের জন্য রিকু ব্লক। খাইসে কপাল! কিন্তু সে এটার কোন তোয়াক্কাই করলো না। এভাবে ব্লক খাইতে খাইতে দেখা যায় ব্লকের সময়কাল মাসে গিয়ে দাড়ায়।
কয়েকমাস কেটে যাবার পর এখন আইডির ফ্রেন্ড সংখ্যা ২৫০+। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠলে দেখতে পায় বন্ধুদের অনেক মজার মজার স্ট্যাটাস আর তাতে লাইকের উপর লাইক, কমেন্ট তো আছেই । আইডি মনে মনে বলল আজ থেকে আমিও ভাল ভাল স্ট্যাটাস দিব আর অন্যরা তাতে লাইক- কমেন্ট দিয়ে একাকার করে ফেলবে। তাই পরদিন মনের মাধুরি মিশিয়ে আর হৃদয়ের সব কথা উজার করে দিয়ে দিল একটা স্ট্যাটাস। .........
গত দুই দিন হয়ে গেল কিন্তু লাইক এলো দু-একটি আর কমেন্ট ছিল জিরো।
হতাশার আখরা আইডির চারপাশ ঘুরঘুর করছিলো। এতগুল বন্ধু কিন্তু কেন জানি কেউ তাকে পাত্তাই দিল না। নাহ! এরকম অপমান মেনে নেয়া যায় না। আইডি আবার চিন্তা করা শুরু করলো কিভাবে নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরবে। মনে মনে এখন আর একটি বুদ্ধি এলো।
চ্যাট! ইয়েস, অফকোর্স চ্যাট। এটাই সে মাধ্যম যার বদৌলতে অন্যদের সাথে মেশা যায় আর এভাবেই সবাই তাকে চিনবে। পরের দিন নিজেকে অনলাইন করলো আর যাকে চোখে পরল তাকে হাই-হ্যালো লিখা শুরু করলো। প্রায় ১৩ জনকে হাই দিল। তার মধ্যে ৩ জন সাথে সাথে আর ৪ জন অনেক দেরিতে রিপ্লাই দিল।
বাকি ৬ জন তার দিকে কোন খেয়ালই করলো না। করবে কিভাবে ? ৬ জনের মধ্যে যারা ছেলে ছিল তারা সবাই ‘লুচি’মানব বলে সারাক্ষণ নারী জগতে ব্যস্ত থাকতো ফলে নারী ব্যতীত অন্যদের দিকে তাকানোর সময় তাদের নেই। আর মেয়েদের কথা তো বলতে হয় না। কিছু মেয়ে ছাড়া ইনাদের পার্ট ই যেন আলাদা , সহজে চ্যাট তো করবেই না আর করলে অনেক ভাবের সাথে তাও ৩-৪ লাইন চ্যাট করে বলবে ‘বাই’। অপরদিকে যে কয়েকজন রিপ্লাই দিতো তারাও ফেইক আইডির সাথে বেশিক্ষন চ্যাঁট করতো না।
কারণ, বেশিরভাগ বন্ধুই কিছুক্ষন চ্যাঁট হবার পর খালি জিজ্ঞেস করতো ‘তুমি ছেলে নাকি মেয়ে ?’ যদি ছেলে বলত তাহলে কিছুক্ষন চ্যাঁট হবার পর বিদায় জানাতো। আর যদি মেয়ে বলে পরিচয় দিতো তাহলে তো কোন কথাই নেই। বাসা কোথায় ? কিসে পড় ? কি কর ? ফ্যামিলি ? এভাবে শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করে বসত বয়ফ্রেন্ড আছে কিনা। এছারা আর বিরক্তিকর প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতো যার দরুন আইডি বাধ্য হয়ে তাদের আনফ্রেন্ড করে দিতো। এভাবেই ফেইক আইডির দিন চলতে থাকল ফেবুর অলিতে –গলিতে ঘুরে ঘুরে কিন্তু হঠাৎ একদিন দেখল..............
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।