প্রথম ইউনিকোড ভিত্তিক অনলাইন বাংলা স্পোর্টস পত্রিকা
বিডিস্পোর্টসনিউজ ডেস্কঃ
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম। চেনা কন্ডিশন। জীবন-মরনের ম্যাচে গ্যালারির প্রতিটি ইঞ্চি কথা বলবে বাংলাদেশের হয়ে। মুখে আঙুল দেয়া ছোট্ট যে শিশুটি পুরো গাল ভরে প্রিয় দেশের পতাকা এঁকে নিয়ে আসবে সেও যে বাংলাদেশের হয়েই কথা বলবে সে কি আর কারো অজানা? শুধু যে মিরপুর গ্যালারী তা তো নয়! কাল বাংলাদেশের প্রাণশক্তি যোগাবে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রতিটি আত্মা।
ভাবছেন এত প্রস্তুতি কিসের জন্য? সেটা আর কিছু নয়, প্রতিটা বাঙালিকে ছুঁয়ে যাওয়া ক্রিকেটকে নিয়েই এত কথা হচ্ছে।
কাল বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১১ সালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ম্যাচের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলার টাইগাররা। যদি টাইগাররা দক্ষিন আফ্রিকাকে হারিয়ে দেয় তাহলে পরিস্কার ভাবে বিশ্বকাপে টিকে যাবে বাংলাদেশ, আর না হলে কালই হচ্ছে বাংলাদেশের পক্ষে শেষ ম্যাচ।
এখন আমরা দেখি আমাদের দলের আসলে কতটুকু ক্ষমতা এই দক্ষিন আফ্রিকাকে হারানোর? আমরা মনে করি আমাদের দলের শতভাগ ক্ষমতা আছে দক্ষিন আফ্রিকাকে হারানোর। আমাদের ছেলেরা ইতিপূর্বে বারবার এটা প্রমান করে এসেছে। এই দলের ছেলেরাই দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশ করার গর্ব আমাদের উপহার দিয়েছে, আবার এই দলের ছেলেরাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৮ রানে অলআউট হয়েও পরের ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই আরেকটি ৫৮ রানের জুটি গড়ে ফিনিক্স পাখির মতো ফিরে এসেছে, একটি ৫৮ রানের দুঃখকে তারা ভুলিয়েছে আরেকটি ৫৮ রান দিয়ে, প্রত্যাশিত জয় পেয়েছে দুর্বল নেদারল্যান্ডের বিপক্ষেও, তাই আমরা সবাইই এখন জানি ঐদিন ছিলো নিছকই একটা দুর্ঘটনা।
নিয়মিতই ভালো শুরু এনে দেয়া তামিম-কায়েসকে অন্যতম সেরা ওপেনিং জুটি আমরা দাবী করতেই পারি। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেললে কালকেও আশা করি এই জুটি আমাদের নিরাশ করবে না। আমাদের আছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। যিনি আমাদের অধিনায়কও বটে। সাকিব আল হাসান।
তার অধিনায়কত্বের যে সবচেয়ে বড় গুণটি আমাদের মুগ্ধ করে তা হচ্ছে মাঠের ১১ জন খেলোয়াড়কে নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর অনন্ত চাপ সৃষ্টি করা এবং আমরা এও জানি কাল দক্ষিন আফ্রিকাকেও এক বিন্দু ছাড় দিয়ে কথা বলবেন না আমাদের অধিনায়ক। আছে ছোটখাট গড়নের কিন্তু দুরন্ত সুইং করতে পারা পেস বোলার শফিউল ইসলাম। আমরা কেন ভুলে যাচ্ছি আমাদের স্পিন আক্রমনের কথা? প্রকৃতিগত ভাবেই স্পিন আমাদের সম্পদ। আর উপযুক্ত কন্ডিশন পেলে নিজেদের দিনে বিশ্বের যে কোন ব্যাটিং লাইনই আমাদের স্পিনের সামনে ভেঙ্গে পরে। বিশ্বের আর কোন দলই পারে না আমাদের মতো একরাশ ধারালো স্পিনার দিয়ে বোলিং আক্রমন সাজাতে।
কাজেই আমরা স্বপ্ন দেখতেই পারি কাল দক্ষিন আফ্রিকাকে হারাতে যাচ্ছি।
এতো গেলো মাঠে আমাদের খেলোয়াড়দের পারফর্ম্যান্সের কথা। আমাদের কাজ কি হবে? হ্যাঁ, আমাদের খেলোয়াড়রা মাঠে ৬০০ বলের এক বলও দক্ষিন আফ্রিকাকে ছেড়ে কথা বলবেন না বটে আমরাও ছেড়ে কথা বলবো না। আমাদের খেলোয়াড়রা যখন চার ছয় মারবেন যখন প্রতিপক্ষকে আউট করবেন আমরা গলা ছেড়ে তাদের সমর্থন দিয়ে যাবো পাগলের মতো, আর বিপরীতে আমাদের খেলোয়াড়রা যখন আউট হবে তখন যেন প্রতিপক্ষ ভয় পেয়ে যায় এমনই নিরবতা যেন পুরো স্টেডিয়ামজুড়ে ভর করে সে রকমই থাকবো আমরা। আমরা আমাদের জয় ছাড়া আর কিছুই চাই না আর এ জন্য যা যা করা লাগে সবই করবো আমরা।
সবশেষে বলতে হয় দিন শেষে ক্রিকেট শুধুই খেলা। দক্ষিন আফ্রিকা বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। কাল যাই ঘটুক না কেন আমরা শেষ বলটি পর্যন্ত আমাদের দলের সঙ্গেই থাকবো। কারণ স্বপ্ন দেখতে বাধা নেই, আর এটা পরিস্কার যে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন জাগরন চলছে। আমরা সবাইই এখন এটা বিশ্বাস করি এই বিশ্বকাপ না হলেও আগামী বিশ্বকাপ জেতার মতো সবটুকু ক্ষমতাই আমাদের দল অর্জন করে ফেলবে।
জিতলেও বাংলাদেশ আমার, হারলেও বাংলাদেশ আমার। আমার দেশই আমাকে হাসায়, আমার দেশই আমাকে কাঁদায়। আমরা বাংলাদেশী এটাই আমাদের গর্ব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।