আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি অসাধারণ থ্রিলার মুভি।


এর আগে আমি কখনো সিনেমার রিভিউ লিখিনি। আজ একটা লেখার চেষ্টা চালাবো। অপচেষ্টাও বলতে পারেন। আমি সাধারণত কোন বাছ বিচার করে সিনেমা দেখিনা। ভাল মন্দ প্রায় সব রকমের সিনেমাই দেখি।

তো এ পর্যন্ত আমার দেখা সবচেয়ে ভাললাগা সিনেমার নাম হল “The Silence of The Lambs”। ১৯৯১ সালের সিনেমা। তবে এই সিনেমা আমি সর্বপ্রথম দেখি ২০০৫ সালে। প্রথম যেবার সিনেমাটা দেখি তখন তেমন কিছু বুঝি নাই। কারন ইংরেজি সিনেমাও তখন কম দেখা হত এবং ইংরেজি ভাষাও তখন খুব ভাল ভাবে বুঝতাম না।

তো সিনেমাটা আমার মনে তখন তেমন কোন প্রভাব ফেলে নাই। এসএসসি পরীক্ষার পর সিনেমাটা আবার দেখলাম। ততদিনে আমার ইংরেজি জ্ঞানও কিছুটা বেড়েছিলও। আর বেশ ইংরেজি সিনেমা দেখাও শুরু করেছিলাম। তাই এইবার সিনেমাটা অসাধারন লাগলো।

এইবার দেখার পরই বুঝতে পারলাম পুরো সিনেমাটা। সিনেমাটি টমাস হ্যারিসের সাইকলজিক্যাল উপন্যাসের চলচ্চিত্র রূপ। অস্কারের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি বিভাগে ("Oscars" for Best Movie, Director, Actor, Actress, and Screenplay) মনোনয়ন পেয়ে পাঁচটিতেই পুরস্কার পেয়েছে সিনেমাটি। সিনেমাটি করার সময় পরিচালক, অভিনেতা – অভিনেত্রী এবং অন্যান্য যারা এই সিনেমার সাথে জড়িত সবাই মনে হয় তাদের জীবনের সেরাটাই দিয়েছিলেন। সিনেমার কাহিনীর মূল চরিত্র গুলো হল – FBI তে প্রশিক্ষণরত এক তরুণী যার নাম ক্লাইরিস স্টারলিং (Jodie Foster) ।

আরও আছে নরখাদক মানসিক রোগের চিকিৎসক “Hannibal cannibal” খ্যাত ঠাণ্ডা মাথার খুনি হ্যানিনবল লেকটার (Anthony Hopkins) । আরও একটি প্রধান চরিত্র আছে যার নাম না বললে কিছুই বলা হবে না – সে হল সিরিয়াল কিলার বাফেলো বিল। Jodie Foster আসলেই সিনেমাটাকে তার অসাধারণ অভিনয় দিয়ে অনেক বাস্তব করে তুলেছে। তার অভিনীত চরিত্রটির নাম ক্লাইরিস স্টারলিং। FBI তে প্রশিক্ষণরত সুন্দরী এই তরুণীকে সিরিয়াল কিলার বাফেলো বিলকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয় আরেক সিরিয়াল কিলার সাইক্যাট্রিস্ট হ্যানিনবল লেকটারকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে।

একজন নবীন FBI কর্মকতার চোখে মুখে যে কিছুটা ভয় আর আত্ববিশ্বাসের মিশেল থাকা দরকার তার সবটুকুই আমরা দেখতে পাব Jodie Foster এর অভিনয়ের মাধ্যমে। ক্লাইরিস স্টারলিং আর হ্যানিনবল লেকটারের মধ্যকার কথোপকথনগুলো ছিল এক কথায় অসাধারণ। নিজের জীবনের তিক্ত আর ভয়াবহ ঘটনা লেকটারকে বলার মাধ্যমে স্টারলিং লেকটারের কাছ থেকে বাফেলো বিলের মানসিকতা সম্পর্কে জানতে পারে। স্টারলিং এর অতীত জীবনের দুঃখজনক এক ঘটনার সাথে জড়িত আছে মেষশাবক বা বাচ্চা ভেড়ার প্রসঙ্গ। এর কারনেই সিনেমাটি নাম হয়েছে The Silence of The Lambs।

মানুষখেকো সাইক্যাট্রিস্ট হ্যানিনবল লেকটারের চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার জন্য যা যা করার প্রয়োজন Anthony Hopkins তার সবই করেছেন। একজন ঠাণ্ডা মাথার খুনির মত কুটিল হাসি, আদিরসাত্নক কথাবার্তা; আবার একজন বুদ্ধিদীপ্ত সাইক্যাট্রিস্টের মত বিচক্ষণ কথাবার্তা, সূক্ষ্ন পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা – সবই অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। তবে সিনেমায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হল ক্লাইরিস স্টারলিং এর সঙ্গে হ্যানিনবল লেকটারের কথোপকথন। তাদের মধ্যকার কথোপকথনগুলো দর্শককে মন্রমুগ্ধ করার যথেষ্ট। বাফেলো বিল এর আসল নাম জেম গাম্ব।

Ted Levine এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বাফেলো বিল হল এক সাইকপ্যাথ সিরিয়াল কিলার যে তরুণীদের খুন করে তাদের চামড়া কেটে নেয় নিজের জন্য এক বিশেষ পোশাক তৈরি করার জন্য। তার প্রথম শিকার ফেদ্দ্রেরিকা বিমেল হলেও FBI প্রথম তার কেসটা গুরুত্বের সাথে নেয় যখন সে সিনেটর রুথ মারটিনের মেয়ে ক্যাথরিন মারটিনকে অপহরণ করে। সিনেমাটা উপন্যাসের চলচ্চিত্র রূপ হলেও পরিচালক জনাথান ড্যাম সিনেমার ক্লাইম্যাক্স দৃশ্য পরিচালনা করেছেন মুনশিয়ানার সাথে। আমি এই ক্লাইম্যাক্সের কথা আগেই বলে সব উত্তেজনা নষ্ট করে দিতে চাই না।

তবে প্রথম যেবার সিনেমাটা দেখি তেমন না বুঝলেও এই ক্লাইম্যাক্স দেখে চমকে উঠেছিলাম। আর কিঞ্চিত ভয়ও পেয়েছিলাম। যখন সব সত্য ধীরে ধীরে উন্মোচিত হয় দর্শককে অবশ্যই রোমাঞ্চিত হতে হবে। আমার মনে হয় অনেকই এই অসাধারণ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার সিনেমাটি দেখেছেন। তাদেরও মনে হয় আমার মত ভাল লেগেছে।

আর যারা দেখেননি, তাদের বলব অনেক বড় মিস করেছেন। যত তাড়াতাড়ি পারেন সিনেমাটি দেখে ফেলুন। আমি নিশ্চিত আপনাদের ভাল লাগবে। টরেন্ট লিংক মিডিয়াফায়ার লিংক
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.