আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি পাঁচমিশালী কথামালা'র সম্ভার-২



ক'দিন আগেই এ সিরিজের প্রথম পোস্ট দিয়েছিলাম, সাহস করে আজ দ্বিতীয়টা দিচ্ছি আমার এ সিরিজ মূলত দৈনন্দিন জীবনে আবির্ভূত কথামালাকে ঘিরে, কাজেই একে গুরুত্ব সহকারে না নিলেও চলবে আজও পুর্বের ন্যায় ১০টি উক্তি থাকছে ১১। "আপনি বেশি জানেন মনে হয়? আমি আমার কাজ বুঝি না" বিশ্লেষণঃ আমার জীবনে যে কিছু উক্তি কে সবচেয়ে ঘৃণা করি এটি তার মধ্যে অন্যতম। সাধারণত আমাদের দেশে বিভিন্ন অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রিয় উক্তি এটি। এতি মূলত তারাই ব্যবহার করেন যারা নিজ দায়িত্বের অবহেলায় অতিশয় পারঙ্গম। এমন ব্যক্তিদের কাছে কোন কাজে গিয়ে যদি অবহেলার শিকার হয়ে তাকে ঠিকভাবে কাজ করার বিনীত অনুরোধ জানান, তাহলে অতি অবশ্যই এই উক্তিটি শুনতে পারবেন ১২।

"আপনার রোগীর কোনই অসুখ নেই, আমি নিশ্চিত সে নিজ দায়িত্ব (চাকরী/পড়াশোনা) এড়ানোর জন্য অসুখের ভান করছে। তাকে সাইকিয়াট্রিস্ট দেখান/কঠিন শাসনে রাখুন। " বিশ্লেষণঃ কতিপয় ডাক্তার নামধারী ব্যক্তি যখন দ্রুত রোগী বিদায় করতে চান বা রোগীর রোগ নির্ণয়ে একটু বেশি সময় দিতে চান না, তখন তারা এরূপ উক্তি করেন । অথচ এমন চিকিৎসক এখনো আছেন যারা টাকা/সময়ের তোয়াক্কা না করে রোগীর সেবাকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। ধিক এসব স্বার্থান্বেষী ডাক্তারদের, যারা রোগীর অসুস্থতাকে অবহেলা করেন, আর অপার শ্রদ্ধা জানাই সেসব সেবাব্রতীদের, যারা নিজের দায়িত্ব নিঃস্বার্থভাবে পালন করেন ১৩।

"আজকালকার ছেলে-ছোকরা তোমরা জীবনের জটিলতা কি বুঝ" বিশ্লেষণঃ আমি মনে করি কথাটা আংশিক সত্য। এটা ঠিক যে বড়দের অভিজ্ঞতা অনেক দিনের, কিন্তু তাই বলে বর্তমান প্রজন্মের অভিজ্ঞতাও একেবারে ফেলনা নয় ১৪। "এটাও বুঝ না তো ক্লাসে আসছ কেন? এত সহজ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার কি হল?" বিশ্লেষণঃ এক শ্রেণীর শিক্ষকের উক্তি এটি। আমার প্রশ্ন হল, একজন ছাত্র যদি সব প্রশ্নের উত্তরই জানত, তাহলে কি সে ক্লাস করতে আসত? যা একজন শিক্ষকের কাছে সহজ, তা খুব স্বাভাবিকভাবেই ছাত্রদের কাছে অজানা হতে পারে, কাজেই তাদের তাচ্ছিল্য করার কি আদৌ প্রয়োজন আছে? ১৫। "চুল ছোট কেন, বড় হচ্ছ, এখন চুল বড় রাখা উচিৎ তোমার, বড় চুল মেয়েদের সৌন্দর্য......(ইত্যাদি ইত্যাদি)।

" বিশ্লেষণঃ এখনকার এই দূষণের যুগে বড় চুল এর পরিচর্যা করা অতি কষ্টকর, এটা সবার বুঝা উচিৎ। তার চেয়েও বড় কথা হল, অনেকে অসুস্থতার কারণেও বড় চুল রাখতে চান না বা পারেন না। কাজেই সবার সামনে এমন উক্তির প্রয়োজনীয়তা প্রশ্নবিদ্ধ। ১৬। "আপনার বাচ্চা ক্লাসে খুবই অমনোযোগী, ওকে কালকে থেকেই আমার কাছে পড়ার জন্য পাঠিয়ে দেবেন।

" বিশ্লেষণঃ মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন ১৭। "আরে ভাই বিদেশে এস না/যেও না, অনেক কষ্টে পড়তে হবে....(এরপর যথারীতি কিছু ভয়ানক বিবরণ যে বাইরে পড়তে বা কোন কাজে গেলে কি হতে পারে, উল্লেখ্য যে এসবের অধিকাংশই মনগড়া)। " বিশ্লেষণঃ এ ধরণের উক্তি সাধারণত তারাই করেন যারা কিছুটা হলেও পরশ্রীকাতর। এরকম আমাদের অনেকেরই স্বভাব হচ্ছে যে কাউকে জীবনে কোন উন্নতি লাভের সুযোগ পেতে দেখলে তাকে যথাসম্ভব নিরুৎসাহিত করা। ১৮।

"জানেন, ফোনে আপনার কন্ঠ আমার খুব ভাল লাগে, তাই-তো বারবার কল করি। " কতিপয় "গুণমুগ্ধ", রাত ২/৩টার দিকে মোবাইলে কল করে এ ধরণের উক্তি করে থাকেন। এদেরকে ইচ্ছা করে..... ১৯। "আরে ধুর, আপনি কিছুই জানেন না। " বিশ্লেষণঃ জনৈক "সবজান্তা"-র উক্তি, যিনি নিজেও আসলে কিছুই তেমন জানেন না, নিজেকে অযাচিতভাবে জাহির করা ছাড়া ২০।

"না, আমি নিয়মের বাইরে কিছুই করতে পারব না" বিশ্লেষণঃ একশ্রেণীর সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারী সাধারণত উৎকোচ গ্রহণের ঈঙ্গিত এভাবে দিয়ে থাকেন : আজ এ পর্যন্তই, আরো মনে পড়লে দেব। আশা করি আপনারাও কিছু এমন উক্তি শেয়ার করবেন, ধন্যবাদ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.