আমি প্রকৃতির চির অনাসৃষ্টি
তারিখ......
বাবা
সালাম নিবেন। ঢাকা শহরের এই ঘিঞ্জি ম্যাসে আপনার চিঠিটি যখন পেলাম, ভূত দেখার মত চমকে গিয়েছিলাম। ঠিক যেমনটা চমকেছিলাম প্রথম যখন আমাকে গনেশতলা থেকে একটা ইয়ুথ কলম কিনে দিয়েছিলেন। আমার আনন্দ তখন আর ধরে না। এবার ও আমি খুশি হয়েছি অনেক তবে তার থেকে অবাক অনেক বেশি-ই হয়েছি।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে বলতে যখন আমাদের প্রান প্রিয় নেতারা মুখের ফেনা তুলে ফেলছে তখন আপনি আমাকে চিঠি লিখিছেন!!!!আমার অপরাধ নেবেন না বাবা।
আমি জানি কেন আপনি আমাকে লিখেছেন। জানেন বাবা,আমার ও অনেক কথা বলার ইচ্ছা হয় আপনাকে, কিন্তু আপনার চিঠির উত্তর দেয়ার কোন সাহস আমার নেই। আমার এই লেখা কখনই আপনার কাছে পৌছাবেনা,আমি নিশ্চিত। আপনি চাকুরির কথা বলেছেন, আমি খুঁজছি আমার সর্ব প্রচেষ্টা দ্বারা।
কিন্তু জানেন বাবা আমরা এমন এক রাজত্বের এমন এক যুগে বাস করছি যেখানে মা ও সন্ত্বান কে টাকা ছারা দুধ দিতে চায় না, সেখানে চাকুরী তো অনেক দূর। এরপর ও আমি আশায় আছি কেউ তো যোজ্ঞতা দেখে চাকুরী দেবে। চাকুরীর জন্য টাকা দিতে না পারায় দূ:খ করেছেন আপনি। কেন বাবা?অনেক তো করেছেন আমাদের জন্য। নিজের গায়ের চামড়াটা শুধু বেচা বাকী আছে আপনার।
ওটা রেখেই দিন না এবার।
বাবা আপনি লিখেছেন,তোদের জন্য কিছুই করতে পারলাম না। কে বলল পারেন নি? বাবা আপনি কি মনে করেন আমার বাবার অর্থ বিত্ত নেই বলে আমি অনুতাপ করি? কখনই না। বরং বাবা আমি গর্ব করে বলতে পারি আমার বাবা সরকারী কোন আমলা কিংবা অনেক বড় কেউ না হলেও,দূর্নীতিবাজ না। আমার বাবা একজন কৃষক যিনি সারা জীবন শুধুই ঠকেছেন কখনো কাউকে ঠকান নি, কোন পাপের টাকা তার সন্তানের মুখে তুলে দেন নি।
আমার বাবার পেছনে কেউ তাকে কখনো গালি দেয় নি। আমার বাবার টাকায়,কারো অভিশাপ মাখানো নেই। আমি আমার বাবাকে নিয়ে গর্ব করতে পারি। এটাই কি আমার চরম পাওয়া নয়?আ্পনি-ই তো আফসোস করতে না করেছিলেন একদিন। স্মরন আছে?তবে কি ভূল শিখিয়েছিলেন।
আমার চাকুরীর ব্যাপারে চিন্তা করবেন না। নিশ্চয়ই কিছু এক টা হবে। আমার জন্য দোয়া করবেন আমিও যেন আপনার মত একজন ভালো বাবা হতে পারি।
ইতি
আপনার স্নেহের
....................। ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।